তৃণমূল ও কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষে বৃহস্পতিবার সকালে তেতে ওঠে পুড়শুড়ার কাদিপুর গ্রাম। দু’পক্ষই পরস্পরের উপরে শাবল, রড, বাঁশ নিয়ে চড়াও হয়। জখম হন ২০ জন। তাঁদের মধ্যে ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয় স্থানীয় ভাবে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় হামলার অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ কাদিপুর গ্রামের সুকুমার দেওয়ান নামে এক কংগ্রেস কর্মীর মুদি দোকানের সামনে ওই সংঘর্ষ বাধে। দোকানটি ভাঙচুর করা হয়। লুঠপাটও চালানো হয় বলে অভিযোগ।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের জন্য গত রবিবার পুড়শুড়ার সোদপুরে একটি সভা করে কংগ্রেস। সেই সভায় যোগ দেওয়ার ‘অপরাধে’ সুকুমারবাবুকে তৃণমূলের তরফ থেকে বুধবার দোকান বন্ধ রাখার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বুধবার দোকান খোলেননি সুকুমারবাবু। বৃহস্পতিবার তিনি দোকান খোলার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ওই গোলমাল। গণ্ডগোলে মহিলারাও জড়িয়ে পড়েন। তাঁদেরও কয়েক জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে। কংগ্রেসের দাবি, তাদের জখম ৬ জনকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তৃণমূল জানিয়েছে, তাদের ৪ জনকে পুড়শুড়ার শ্রীরামপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে। |
কংগ্রেসের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটের আগে এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করার জন্য তৃণমূল ওই হামলা চালায়। দলের জেলা সম্পাদক দিলীপ নাথ বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করায় তৃণমূল আমাদের ছেলেদের উপরে হামলা চালাল। প্রার্থী যাতে দিতে না পারি, সেই উদ্দেশ্যেই তৃণমূল নানা দিকে সন্ত্রাস করছে।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। পুড়শুড়ার তৃণমূল বিধায়ক পারভেজ রহমানের দাবি, “একটি মুদির দোকানে বসে কিছু যুবক মেয়েদের উত্ত্যক্ত করছিল। প্রতিবাদ করায় আমাদের ছেলেদের মারধর করা হয়। পরে গ্রামবাসীরাই একজোট হয়ে রুখে দাঁড়ান। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।” সুকুমারবাবুর দোকান বন্ধ রাখার হুমকির অভিযোগও তিনি অস্বীকার করেছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সুকুমারবাবু অভিযোগ, “দলীয় সভায় যাওয়ায় জন্য তৃণমূল বুধবার আমার দোকান বন্ধ রাখার হুমকি দিয়েছিল। বিষয়টি দলকে জানিয়ে এ দিনদোকান খুলি। কিন্তু খোলামাত্র ওরা হামলা চালাল। লুঠপাট করল। আমাদের দলের ছেলেরা প্রতিবাদের চেষ্টা করলে ওরা মারধর করে।” আহত তৃণমূল কর্মী সাকির খানের অভিযোগ, “বাজার করে ফেরার পথে মুদি দোকান থেকে আমাকে কটূ মন্তব্য করা হয়। প্রতিবাদ করায় ওরা মারে। আমাকে বাঁচাতে এসে দলের লোক মার খান।” |