রাজোয়ানা বিতর্কে উত্তেজনার পারদ ক্রমশ চড়ছে পঞ্জাবে। ফাঁসির বিপক্ষে থাকা শিখ সংগঠন ও শিবসৈনিকদের মধ্যে সংঘর্ষে দিনভর বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হল রাজ্য জুড়ে। যা থামাতে পুলিশ গুলি চালালে প্রাণ গেল এক জনের। গুলিতে গুরুতর জখম আর এক জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এরই মধ্যে বিয়ন্ত-খুনির ফাঁসি রুখতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগকে ‘নাটক’ বলে অকালি সরকারকে এক হাত নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এমন এক জনের ফাঁসি রুখতে তৎপর হয়েছে রাজ্য সরকার, যে দিনেদুপুরে রাজ্যেরই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর হত্যায় সাজাপ্রাপ্ত। সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মে লিপ্ত কেউ এ ভাবে রাজ্য জুড়ে রাজনৈতিক মদত পেতে পারে তা ভাবাই যায় না। জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসা রাজনীতিকরা বা একটি নির্বাচিত সরকার কী ভাবে মানুষের কথা না ভেবে এক জন খুনির পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে? রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। কোর্টের দুই সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত চার দিনে রাজ্য জুড়ে যা চলছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি নিয়ে সময়মতো পদক্ষেপ করলে বেশ কয়েক কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি বাঁচানো সম্ভব হতো। তা না করে রাজ্য এখন শেষ মুহূর্তে নাটক করছে। |
রাজ্যের আবেদনে সাড়া দিয়ে কালই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে বলবন্তের ফাঁসি আপাতত স্থগিত রাখার কথা জানানো হয়েছিল। এ দিন রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী সুখবীর সিংহ বাদল জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে একটি চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে রাজোয়ানার ফাঁসি মকুবের আর্জিটি এখনও বিবেচনাধীন। শীর্ষ আদালত যতক্ষণ না সেটি খারিজ করে দিচ্ছে তত দিন বলবন্তের ফাঁসি স্থগিত রাখা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার বলবন্তের ফাঁসি রদের দাবিতে রাজ্য জুড়ে বন্ধের ডাক দিয়েছিল শিখ সংগঠনগুলি। সেই সময় জোর করে দোকানপত্র খোলার চেষ্টা করায় পুলিশ ১৪ জন শিবসৈনিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। আজ তারই প্রতিবাদে গুরুদাসপুরে পাল্টা বন্ধের ডাক দিয়েছিল শিবসৈনিকেরা। সেখানেই দু’পক্ষের সংঘর্ষ থামাতে এ দিন গুলি চালাতে হয় পুলিশকে। গুলিতে প্রাণ যায় এক জনের। শহরের একাধিক এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ থামাতে এ দিন লাঠি চালানোর পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসের শেলও ফাটাতে হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুরুদাসপুর-সহ রাজ্যের একাধিক এলাকায় ফ্ল্যাগ মার্চ করে আধা সামরিক বাহিনী। রাজ্য পুলিশের ৬০ হাজার কর্মীর পাশাপাশি কাজে লাগানো হয়েছে ১৫ কোম্পানি আধা-সামরিক বাহিনীর জওয়ানকেও। চণ্ডীগড়, জালন্ধর-সহ একাধিক জায়গায় ১৪৪ ধারাও বলবৎ করা হয়েছে। |