ব্রিকস-এর মঞ্চে যৌথ প্রতিশ্রুতির পর্ব শেষ হওয়ার পরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসল নয়াদিল্লি-বেজিং।
আজ সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ এবং চিনের প্রেসিডেন্ট হু জিনতাওয়ের শীর্ষ বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ঘাটতির দিকটি বিশেষ ভাবে তুলে ধরে নয়াদিল্লি। প্রেসিডেন্ট হিসাবে এটাই শেষ ভারত সফর হু-র। তিনি জানিয়েছেন, ভারত থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানি বাড়াতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে তাঁর সরকার। চিনে আগামী নেতৃত্বও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ভারতের অংশীদারি বাড়ানোর বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনা করবে।
বেজিংয়ের সঙ্গে সুস্থ কূটনৈতিক প্রতিযোগিতার পাশাপাশি ভারত এবং চিনের ‘পারস্পরিক বোঝাপড়া’ বাড়ানো এশিয়া তথা গোটা বিশ্বের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে দিল্লি। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ সম্প্রতি বলেছেন, ভারত এবং চিন এই দু’দেশের রাষ্ট্রপ্রধান যখন করমর্দন করেন, গোটা বিশ্বই সে দিকে তাকিয়ে থাকে। বিদেশমন্ত্রী কৃষ্ণের কথায়, “দু’দেশের সম্পর্ক এখনও অনেকটাই অনাবিষ্কৃত রয়েছে। আমরা পারস্পরিক উদ্বেগগুলি নিরসন করতে না পারা পর্যন্ত এশিয়ার উন্নয়ন চূড়ান্ত মাত্রায় পৌঁছতে পারবে না।” তাঁর বক্তব্য, “ভারত এবং চিন অর্থনৈতিক ও পরিকাঠামোগত ক্ষেত্রে অর্থপূর্ণ সহযোগিতা গড়ে তুলতে পারলে গোটা বিশ্ব তাকে সম্মান জানাবে। কারণ, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগের উন্নয়নের জন্য আমরা কাজ করছি।”
আজ সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই বৈঠক করেছেন দুই শীর্ষ নেতা। আলোচনা হয়েছে সীমান্ত সমস্যা মেটানোর লক্ষে গড়া নতুন বন্দোবস্ত থেকে তিব্বত, সব বিষয় নিয়েই। স্বাধীনতার দাবিতে দেশান্তরী তিব্বতিদের বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে হু-র সফর নিয়ে যথেষ্ট চিন্তায় ছিল বেজিং। চিনা প্রেসিডেন্টের ভারত সফরের প্রতিবাদ করে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়েছিলেন জামফেল ইয়েসি নামে এক তিব্বতি যুবক। সেই ঘটনার জেরে সোমবার থেকে কয়েকশো তিব্বতি বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার হু জিনতাও দিল্লি ছাড়ার পরে আটকদের ছাড়া হবে বলে জানানো হয়েছে। তিব্বতি বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে দিল্লির বিভিন্ন অংশ পুলিশি পাহারা রয়েছে। ফের যাতে কেউ গায়ে আগুন দিতে না পারেন, তার জন্য ভেজা কম্বল নিয়ে তৈরি রয়েছে পুলিশ। অন্য দিকে ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন চিনা নেতৃত্ব। সফররত চিনের এশিয়া বিষয়ক কর্তা লুও ঝাহুই বলেছেন, “ভারত সরকার যে ভাবে সুষ্ঠু হাতে সমস্ত গোলযোগের মোকাবিলা করেছে, তা প্রশংসনীয়।”
ধর্মগুরু দলাই লামার ‘উস্কানিতেই’ এই বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। |