আগামী বছর বালুরঘাট পুরসভার ভোট। হাতে এক বছর সময় থাকলেও বালুরঘাট পুরসভার নির্বাচন নিয়ে এখনই উদ্বিগ্ন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। এ বার পুর নির্বাচনে ৫০ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হবে। অথচ বালুরঘাট টাউন মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের বেহাল দশা। বিধানসভা নির্বাচনের পরে টাউন মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তার জেরে নিস্ত্রিয় হয়ে পড়েছে শহরের ২৩টি ওয়ার্ড কমিটিও। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে পুর নির্বাচনে দল লড়াইয়ে নামবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলেই। জেলা সদর বালুরঘাটে সদ্য অনুষ্ঠিত কলেজ ভোটেও বাম ছাত্র সংগঠনের কাছে হেরে গিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। জেলা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী তথা বিধায়ক মাহমুদা বেগম অবস্য দাবি করেছেন, “এপ্রিলে সম্মেলন করে দলের সংগঠন নতুন করে সাজা হবে।” বালুরঘাটে অনুষ্ঠিত শহর তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সম্মেলনে পুরসভার ভোটে আরএসপির বিরুদ্ধে রণকৌশল কী হবে তা নিয়ে নেতৃবৃন্দের বক্তব্যে উঠে এসেছে এই উদ্বেগ। দলে উপদল তৈরি এবং গোষ্ঠী রাজনীতিকেও দায়ী করেছেন শহরের একাংশ ওয়ার্ড কমিটির নেতৃবৃন্দ। সম্মেলন মঞ্চে কারামন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী এবং দলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের সামনে বেশ কিছু ওয়ার্ড কমিটির নেতা অভিযোগ করেন, এই দশ মাসেই দলে বেনোজল ঢুকে পড়েছে। ওয়ার্ড কমিটির সভাপতিদের অন্ধকারে রেখে দলের নামে নানা কর্মসূচি ও অনুষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে দলের নামে চাঁদা তোলার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ওয়ার্ডে দলের কাজকর্মে স্বচ্ছ্ব ভাবমূর্তির লোক নজরে আসছে না। তাই অধিকাংশ ওয়ার্ডেই মহিলাদের দলে টানতে তেমন সাড়া মিলছে না। অথচ বালুরঘাট শহরের ২৩ টি ওয়ার্ডে মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেক সংখ্যকই মহিলা। তৃণমূল জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, “বালুরঘাটে মহিলা সংগঠন বাড়াতে জোর দিয়েছি। জেলার মহিলা সভানেত্রী তথা বিধায়ক মাহমুদা বেগম বিষয়টি দেখছেন। সব ওয়ার্ডে মহিলা কমিটি তৈরির উদ্যোগ চলছে। কর্মীদের হতাশ হওয়ার কারণ নেই।” ৮ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির পক্ষে তৃণমূল নেতা জগন্ময় রায় অভিযোগ করেন, “বার্ধক্য থেকে বয়স্ক ভাতা, জি আরের চাল-গম বিলি বণ্টনের সুবিধা আদায়ে গরিব ওয়ার্ডবাসীর পাশে থাকতে আমরা ব্যর্থ।” তাঁর মতো একাধিক ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের কথায়, “শহরে ছাত্র, যুব ও শিক্ষক সংগঠন বৃদ্ধির সঙ্গে সমতা রেখে মহিলা সংগঠন বাড়াতে না পারলে আগামী পুরভোটে আরএসপিকে হটানো কঠিন হয়ে পড়বে।” বালুরঘাট শহর লোকাল কমিটির সভাপতি অসিত রায় বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “শহরের অধিকাংশ ওয়ার্ডে মহিলা শাখা কমিটি নেই। মহিলা সংগঠন বাড়াতে জোর দিয়েছি। আগামীতে পুরভোটে মূল সংগঠনের পাশাপাশি মহিলা কমিটির সদস্যদের নিয়ে আমরা লড়ব।” |