ক্ষতিপূরণ ঘোষণা না-করে নতুন প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করেছে রেল। ওই অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামল কালিয়াগঞ্জ নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটি। বুধবার সংগঠনের নেতৃত্বে কয়েকশো চাষি স্থানীয় বিডিও অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায়। পরে বিডিওর মাধ্যমে উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসকের কাছে রেলের বিরুদ্ধে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে একাধিক অভিযোগও জানানো হয়। প্রায় দু’ঘন্টা ওই ঘেরাও আন্দোলন চলে। কালিয়াগঞ্জের বিডিও সৌমাল্য ঘোষ বলেন, “কমিটির দাবি জেলাশাসকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের কর্তারা ওই বিষয়ে রেল কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।” উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম ভূষণ পটেল বলেন, “জমির মালিকদের অভিযোগ হাতে পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতটুকু বলতে পারি রেলপথ তৈরির জন্য যাদের জমি নেওয়া হবে তাঁদের কেউ বঞ্চিত হবেন না। তাঁরা রেলের নিয়ম মেনে জমির দাম ও ক্ষতিপূরণ পাবেন।” যদিও প্রশাসন ও রেল কর্তাদের ওই বক্তব্যে আশ্বস্ত হতে পারেননি নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটির কর্তারা। তাঁরা জানান, জমি চিহ্নিত করার আগে রেলের তরফে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি। এমনকী উপযুক্ত সরকারি ক্ষতিপূরণের কথাও বলা হয়নি। আগামী ৭ এপ্রিলের মধ্যে রেল কর্তারা স্থানীয় চাষিদের সঙ্গে আলোচনায় বসে ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা না-করলে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া আটকে দেওয়া হবে বলেও তাঁরা এ দিন হুমকি দেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের রেল বাজেটে কালিয়াগঞ্জ-বুনিয়াদপুর রেলপথ তৈরির কথা ঘোষণা করেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী। প্রায় ২৪ কিলোমিটার ওই রেলপথ তৈরির জন্য গত ২২ ফেব্রুয়ারি জমি অধিগ্রহণের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। গত ১৭ মার্চ এবং ১৯ মার্চ ইংরেজি ও বাংলা দৈনিকে ওই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটির অভিযোগ, বিজ্ঞপ্তিতে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি থাকলে এক মাসের মধ্যে জানাতে বলা হয়। কিন্তু ২২ ফেব্রুয়ারি ওই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হলেও তা বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে অনেক পরে। জমির মালিকরা অভিযোগ জানানোর জন্য মাত্র ৬ দিন সময় পেয়েছেন। রেল কর্তারা ওই পরিস্থিতি খতিয়ে না দেখে খুঁটি পুতে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করে দেন। কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকার বলেন, “রেল দফতর জমির ক্ষতিপূরণ না দেওয়ার জন্য কৌশলে জমির মালিকদের কিছু না জানিয়ে শুনানিতে না ডেকে জমি অধিগ্রহণের কাজে নেমেছে।” কমিটির তরফে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের কাছে লিখিতভাবে একই অভিযোগ জানানো হয়েছে। কমিটির নেতৃত্ব জানান, যে জমির ওপর দিয়ে ওই রেলপথ তৈরি হবে সেখানে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ ও দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশুমন্ডি ব্লকের প্রায় দেড় হাজার চাষি রয়েছে। |