এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে ফেরার পথে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে কুড়ুল ছুঁড়ে মারায় আহত হলেও ওসি-সহ মালদহের রতুয়া থানার তিন পুলিশ কর্মী। গাড়ির সামনের কাচ ভেঙে কুড়ুলটি গিয়ে লাগে ওসি সুমন্ত্র বিশ্বাসের মাথায়। মঙ্গলবার গভীর রাতে পীরগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের সাতমারা গ্রামে এই ঘটনার পরে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে।
জেলার পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “একশো দিনের প্রকল্পে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তিন জনকে খুঁজতে ওই রাতে পুলিশ গ্রামে গিয়েছিল। তাদের একজনকে ধরে ফেরার পথে গ্রামবাসীদের একাংশ পুলিশের গাড়িটা ঘিরে ধরেন। তখন অন্য এক দিক দিয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন ওই পুলিশ কর্মীরা। সেই সময়েই একটি অন্ধকার জায়গায় আচমকা কুড়ুল ছুড়ে মারা হয়। কুড়ুলটা তাঁর মাথায় লাগে। কাচের আঘাতে আহত হয়েছেন অন্য দু’জন।” তিনি বলেন, “হামলার অভিযোগে দু’জন গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত অন্য দু’জনকে ওই রাতে আর ধরা যায়নি।”
পুলিশের দাবি, ওই অভিযুক্তকে ধরে গ্রাম থেকে ফেরার সময়ে আচমকা কয়েকজন গ্রামবাসী ‘চোর, চোর’ বলে চিৎকার করে তাঁদের তাড়া করেন। তাতে গ্রামের আরও অনেকে বেরিয়ে এসে তাঁদের ঘিরে ধরে হামলা করেন। |
পুলিশের উপরে হামলার অভিযোগে ধৃত তাজিবুর শেখের মা তসলিমা বিবির অবশ্য দাবি, “পুলিশ আমার বড় ছেলে সাইদুরকে ধরতে এসেছিল। সাইদুরকে না পেয়ে তাইজুরকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামবাসীরা বাধা দেন।”
এর আগে ২০১০ সালের ২৩ জানুয়ারি চাঁদপুর গ্রামে ফেরার আসামী ধরতে গিয়ে খুন হন রতুয়া থানার এসআই সনৎ ঘোষ। যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ কর্মী না-নিয়ে কেন তিনি সেই রাতে অভিযানে গিয়েছিলেন, তখন সেই প্রশ্ন উঠেছিল। মঙ্গলবারের ঘটনার পরে ফের একই প্রশ্ন তুলেছেন পুলিশের একাংশ। পুলিশ সুপার বলেন, “দুটি ঘটনা আলাদা। মঙ্গলবার রাতের অভিযানের সময়ে রতুয়া থানার ওসির সঙ্গে ২৬ জন পুলিশ কর্মী ছিলেন। গ্রামের অনেকে মিলে হামলা চালানোয় সমস্যা হয়।”
ওই গ্রাম পঞ্চায়েত সিপিএমের দখলে। সিপিএমের মালদহের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “একশো দিনের কাজে তছরূপের ঘটনা ঘটে থাকলে পুলিশ আইন মেনেই ব্যবস্থা নেবে।” |