|
|
|
|
বনধে না আসায় কোপ ৯ জনের বেতন ও মেয়াদে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ঘোষণা ছিল আগেই। সেইমতো ২৮ ফেব্রুয়ারি ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকা ধর্মঘটের দিন অনুপস্থিত ৯ জন সরকারি কর্মীর এক দিনের বেতন কাটার নির্দেশ দিল রাজ্য। তাঁদের চাকরির মেয়াদও এক দিন কমে যাবে। এঁরা সকলেই চুঁচুড়ার ধান্য গবেষণা কেন্দ্রের কর্মী। কৃষি দফতরের যুগ্ম মহানির্দেশক ওই ৯ জনকে ২৬ মার্চ চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, ‘শো-কজ’ নোটিসের উত্তরে অনুপস্থিতির কারণ হিসাবে কর্মীরা যা জানিয়েছেন, তা সরকারি আদেশনামার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তাই ওই দিনের অনুপস্থিতিকে বেআইনি ঘোষণা করে বেতন কাটার নির্দেশ দেওয়া হল।
চুঁচুড়ার ধান্য গবেষণা কেন্দ্রের ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্ট গৌতম গঙ্গোপাধ্যায় এই ৯ জনের এক জন। কারণ দর্শানোর নোটিসের উত্তরে তিনি স্পষ্ট লিখেছিলেন, “বেশ কিছু কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন/কর্মচারী সংগঠন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল। যে সব দাবিতে ওই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়, তাতে কর্মচারীদের দাবিও ছিল। সেই দাবি আমি সমর্থন করেই সে দিন অফিসে অনুপস্থিত থেকেছি।” তিনি লিখেছেন, “রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিধিতে ধর্মঘট করার যে অধিকার দেওয়া আছে, তা মেনেই আমার অধিকার প্রয়োগ করেছি। সেই সঙ্গেই জানাচ্ছি, ২৮ ফেব্রুয়ারির ধর্মঘটকে কোনও সরকারি কর্তৃপক্ষ বেআইনি ঘোষণা করেননি। ফলে ওই দিন অনুপস্থিত থাকার জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায় না।”
সরকারি সূত্রের খবর, ওই দিন অনুপস্থিত থাকার জন্য প্রায় ৮০ হাজার কর্মীকে শো-কজ করা হয়। প্রায় সকলেরই জবাব পেয়ে গিয়েছে সরকার। কত জনের বেতন কাটা হবে, এখন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই কাজ শেষ করতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে। তাই ঠিক হয়েছে, এক দিনের বেতন কাটা হবে মে মাসে। এখন যে ৯ জনের বেতন কাটার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা প্রতীকী।
এই ঘটনার প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মচারী ইউনিয়ন (নব পর্যায়) আজ, বৃহস্পতিবার থেকে মহাকরণে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করবে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সমীররঞ্জন মজুমদার বলেন, “সরকারের এই স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে যৌথ ভাবে আন্দোলন করার জন্য সব ক’টি সংগঠনের সঙ্গে কথা বলব।” তাঁর অভিযোগ, “আধিকারিকরা এক হাতে কারণ দর্শানোর নোটিস দিচ্ছেন, অন্য হাতে বেতন কাটার নির্দেশও ধরিয়ে দিচ্ছেন।”
রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, আগেই অনেকের বেতন কাটার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ধর্মঘটের দিন গরহাজির ছিলেন বলে বেতন কাটা হয়েছে এমন ৩০ জনেরও বেশি কর্মচারী ইতিমধ্যেই তাঁদের সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাঁদের আইনি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ যোগাযোগ করেও পরে পিছিয়ে গিয়েছেন। অনন্তবাবুর অভিযোগ, “ধর্মঘটের দিন ছুটি নেওয়া নিয়ে মুখ্যসচিব ও অর্থসচিবের জারি করা নির্দেশের মধ্যে স্ববিরোধ রয়েছে। দু’টি নির্দেশই বেআইনি। যে সব অফিসার বেতন কাটার নির্দেশ দিচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|