খাতায়-কলমে ছাত্র সংখ্যা বেশি দেখিয়ে মিড-ডে মিল সহ একাধিক প্রকল্পে দুর্নীতি করার অভিযোগে পুরুলিয়ার সাঁতুড়ি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করল পুলিশ। প্রায় ছ’মাস ধরে গা ঢাকা দেওয়া প্রধান শিক্ষক ধনঞ্জয় মাহাতোকে বুধবার রঘুনাথপুর শহরে তাঁর বাড়ি থেকে পুলিশ ধরে। রঘুনাথপুর আদালতে হাজির করানো হলে তাঁর ৩ দিনের পুলিশ হেফাজত হয়। পরে অসুস্থ বোধ করায় তাঁকে রঘুনাথপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রঘুনাথপুরের এসডিপিও দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন “ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও কেউ জড়িত কি না, দেখা হবে।”
ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক তথা সিপিএমের সাঁতুড়ি জোনাল কমিটির সম্পাদক মনবোধ মুর্মু ও ধনঞ্জয়বাবুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত বছর সেপ্টেম্বরে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। প্রশাসন সূত্রের খবর, সাঁতুড়ির বিডিও ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য স্কুলে গিয়ে প্রাথমিক তদন্তে করে অভিযোগের সত্যতা পান। |
ধৃত প্রধান শিক্ষক ধনঞ্জয় মাহাতো। নিজস্ব চিত্র |
পরে স্কুল শিক্ষা দফতর ও প্রশাসন যৌথভাবে তদন্ত করে। ৭ সেপ্টেম্বর বিডিও এবং জেলা সহকারী স্কুল পরিদর্শক বৃন্দাবন ধাড়া সাঁতুড়ি থানায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও মনবোধবাবুর বিরুদ্ধে সেই দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার দু’টি পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশের দাবি, এর পর থেকেই প্রধান শিক্ষক গা ঢাকা দেন। মনবোধবাবু পুরুলিয়া আদালতে আগাম জামিন নেন। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “ওই স্কুলে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ২৩৩ জন ছাত্র থাকলেও খাতায়কলমে দেখানো হয়েছে ৪৪৫ জন। ছাত্র সংখ্যা বেশি দেখিয়ে মিড-ডে মিল থেকে শুরু করে তফসিলি জাতি ও উপজাতি ছাত্রদের অনুদান এবং বই কেনার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ ছাড়াও প্রধান শিক্ষক নিজের পৈতৃকবাড়ি মারবেদিয়ায় আদিবাসী ছাত্রাবাস চালাচ্ছেন। অথচ স্কুল চত্বরেই ওই ছাত্রাবাসের অনুমোদন রয়েছে।”
রঘুনাথপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট জিগীষেন্দ্র সিংহ বলেন, “প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ তছরুপ-সহ একাধিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে।” ধনঞ্জয়বাবুর দাবি, “স্কুলের উন্নয়ন করায় ষড়যন্ত্রের শিকার হলাম।” জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) রাধারানি মুখোপাধ্যায় বলেন “প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |