শ্রমিকদের উপরে এক দল যুবকের ‘হামলা’র জেরে ফের বনগাঁর পেট্রাপোল সীমান্তে প্রস্তাবিত সুসংহত চেকপোস্ট তৈরির কাজ বন্ধ হয়ে গেল। মঙ্গলবার রাতে চোরাপথে ঢুকে এক দল বাংলাদেশি ওই হামলা চালায় এবং তাতে এক শ্রমিক জখম হন বলে অভিযোগ। এরই প্রতিবাদে বুধবার ওই প্রকল্পের কাজে যোগ দেননি শ্রমিকেরা। আজ, বৃহস্পতিবারও সেই কাজ শুরু হবে কিনা, সে ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থা। তারা এ ব্যাপারে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট মহলে অভিযোগ দায়ের করেছে।
জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ এবং বিএসএফের সঙ্গে ওই বিষয়ে কথা বলা হচ্ছে।” ওই প্রকল্পে বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার কাছ থেকে ‘সাব-টেন্ডার’ পাওয়া ঠিকাদার সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার রমন ভৌমিক বলেন, “হঠাৎ কেন বাংলাদেশিরা হামলা করল বুঝতে পারলাম না। শ্রমিকেরা ভয়ে আর কাজ করতে চাইছেন না। ফের কাজ শুরু করতে হলে আগে শ্রমিকদের ভয় ভাঙাতে হবে। এ ভাবে চললে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে সমস্যা হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রস্তাবিত প্রকল্পটিতে এখন মাটি ফেলে জমি উঁচু করার কাজ চলছে। মঙ্গলবার রাতে সেই কাজ করছিলেন ১০-১২ জন শ্রমিক। সাড়ে ৮টা নাগাদ জনা ষাটেক বাংলাদেশি যুবক চোরাপথে ঢুকে আচমকাই তাঁদের উপরে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। শ্রমিকেরা জানান, ওই যুবকদের হাতে রড, লাঠি ছিল। তারা ইটও ছুড়তে থাকে। পালাতে গিয়ে ইটের আঘাতে এক শ্রমিক জখম হন। একটি ট্রাকে ভাঙচুর চালানো হয়। যন্ত্রপাতি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ওই বাংলাদেশিরা। ব্যর্থ হয়ে ফিরে যায়।
১৭২ কোটি টাকার প্রস্তাবিত প্রকল্পটি ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। গত বছর ২৭ অগস্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম প্রকল্পটির শিলান্যাস করে আশা প্রকাশ করেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। কিন্তু ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে জটিলতার জেরে চাষিদের ‘বাধা’য় ইতিমধ্যে কয়েক দফায় বেশ কিছু দিন প্রকল্পের কাজ বন্ধ ছিল। এ বার ফের বন্ধ হওয়ায় চেকপোস্টের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করা যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
যে এলাকায় কাজ চলছে, সেখানে জোরালো আলো লাগানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, এর ফলে, চোরাপথে বাংলাদেশিদের যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। সেই কারণেই এই হামলা হতে পারে। পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, “দু’দেশের সরকার বাণিজ্যে গতি আনতে উদ্যোগী হয়েছে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে কিছু বাংলাদেশি নিজেদের স্বার্থে তাতে বাধা দিচ্ছে। অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।” |