সীমান্তে নয়া ভাড়াটে-বিধি
ভাড়াটেদের পরিচয় সংক্রান্ত নথিপত্র সংগ্রহের কাজ শুরু করতে চলেছে সীমান্তবর্তী করিমপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত। বছর চারেক আগে এই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার একটি বাড়ি থেকে এক দুষ্কৃতীকে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স গ্রেফতার করেছিল। ওই দুষ্কৃতী করিমপুরে একটি ঘর ভাড়া নিয়েই থাকতেন। তখন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি ভাড়াটেদের পরিচয় সংক্রান্ত নথিপত্র সংগ্রহের কাজও শুরু করেছিল।
কিন্তু তারপরে অবশ্য সে কাজ বেশি দূর এগোয়নি। করিমপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কংগ্রেসের তারক সরখেল বলেন, ‘‘সে বার নানা কারণে সে কাজ থমকে ছিল, আবার নতুন করে ভাড়াটেদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
আশপাশের এলাকার মধ্যে করিমপুর সদর জায়গা হিসাবে পরিচিত। কর্মসূত্রে বাইরের বিভিন্ন মানুষ এখানে কাজে এসে ঘর ভাড়া নেন। প্রত্যন্ত এলাকায় চাকরি করলেও করিমপুরেই বেশিরভাগ মানুষ ঘরভাড়া নিয়ে থাকেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে একটা সমস্যা থেকে যায়, যিনি ঘর ভাড়া দিচ্ছেন তিনি কিন্তু ভাড়াটের সম্পর্কে কোনও তথ্যই যাচাই করে নেন না। সেই ব্যক্তি কোন পেশায় জড়িত, কোথায় বাড়ি এইটুকু কেবল জেনে নেন। তারপরে মাসে মাসে ভাড়া পেলেই সন্তুষ্ট। কিন্তু সে ক্ষেত্রে একটা ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
পঞ্চায়েত কর্তারা জানাচ্ছেন, নাম বা পরিচয় ভাঁড়িয়ে সীমান্ত লাগোয়া এই এলাকায় কেউ ঘরভাড়া নিয়ে কোনও অপকর্ম করলে কারও কিছুই করার থাকবে না।
করিমপুরের রামকৃষ্ণপল্লি এলাকাতে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকেন গোয়াবাড়ি নেতাজি বিদ্যাপীঠের শিক্ষক কুন্তল বিশ্বাস। তিনি বলেন, “ভাড়া দেওয়ার সময়ে বাড়ির মালিক বা ভাড়াটে কেউই পরস্পরের সম্বন্ধে খুব একটা তথ্য জানতে চান না। তাতে দু’তরফেই সমস্যা হতে পারে। কোনও ভাড়াটে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে থাকলে তা ধরা কঠিন। সে ক্ষেত্রে সে কোনও অসামাজিক কাজ করে পালিয়ে গেলে বাড়ির মালিককে সমস্যায় পড়তে হতে পারে।”
তারকবাবু বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রতিটি গ্রাম সংসদে এ ব্যাপারে মাইক নিয়ে প্রচার করা হবে। বাড়ির মালিকদেরও আমরা বলে দেব ভাড়া দেওয়ার আগে ভাড়াটের কাছ থেকে পরিচয় সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র সংগ্রহ করতে। সেই নথি আমরাও সংগ্রহ করে রাখব। পরিচয় সংক্রান্ত নথিপত্রের ক্ষেত্রে রেশন কার্ড ও ভোটের সচিত্র পরিচয়পত্রের প্রতিলিপি বাধ্যতামূলক করা হবে। এ ছাড়াও যিনি ঘর ভাড়া নিচ্ছেন, তাঁর মূল ঠিকানা বা তিনি কী কাজ করেন, সে বিষয়েও লিখিত কাগজপত্র নেওয়া হবে।’’
গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্তারা জানাচ্ছেন, গ্রামের মানুষ প্রায় সবাই সবাইকে চেনেন। কিন্তু যাঁরা বাইরে থেকে আসছেন তাদের পরিচয় নিয়ে নিঃসংশয় হতে চান তাঁরা। জেলা পুলিশের এক অফিসারের কথায়, “হোটেলগুলোতে থাকতে গেলে ভোটের সচিত্র পরিচয়পত্র বা প্যান কার্ড দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ছাড়াও রাতে যাঁরা থাকছেন তাদের নাম, ঠিকানা, কী উদ্দেশ্যে তিনি এসেছেন, হোটেলে কতদিন থাকবেন-রোজ রাতে এ সব কিছু স্থানীয় থানাকে জানাতে হয়। হোটেল কর্তৃপক্ষকে ফলে হোটেলগুলোতে কারা থাকছেন, বা কী জন্য থাকছেন, তার একটা তথ্য থেকে যায় স্থানীয় থানায়। সন্দেহজনক কিছু মনে হলে সে রকমভাবে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। তবে ভাড়াটেদের বিষয়ে এ রকম কোনও তথ্য আমাদের কাছেও থাকে না। ফলে পঞ্চায়েত যদি এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তবে সেটা সত্যিই খুব ভাল। এটা অনেক কাজেও দেবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.