|
|
|
|
গরমে বিপাকে এলাকাবাসী |
নন্দীগ্রামে বন্ধ জল সরবরাহ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
পঞ্চায়েত সমিতি ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের দায় এড়ানোর টালবাহানায় বন্ধ হয়ে রয়েছে নন্দীগ্রামে অচল পাম্প হাউস মেরামতের কাজ।
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নন্দীগ্রামের দুটি পাম্প হাউস গত দু’মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। ওই জল সরবরাহ প্রকল্পের দায়িত্ব এক বছর আগে নন্দীগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতিকে সঁপেছিল জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। এই পরিস্থিতিতে পাম্প হাউস সারানো নিয়ে টালবাহানা শুরু হয়েছে দু’পক্ষে। এ দিকে, জল সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন ওই প্রকল্পের উপর নির্ভরশীল নন্দীগ্রাম বাজার ও সংলগ্ন এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, নন্দীগ্রাম ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র চত্বর ও কলেজ চত্বরে থাকা দু’টি পাম্প হাউসে ভূগর্ভস্থ জল তুলে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয় নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ড থেকে জৈরুরমোড় পর্যন্ত পুরো বাজার ও সংলগ্ন বসতি এলাকায়। ওই পানীয় জলের উপরই নির্ভরশীল এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা। আগে ওই জল সরবরাহ প্রকল্পের দায়িত্ব জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের হাতে থাকলেও রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা মেনে ওই প্রকল্প ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতিকে হস্তান্তর করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় দুই মাসের বেশি সময় ধরে জল সরবরাহ বন্ধ থাকা সত্ত্বেও পঞ্চায়েত সমিতি তা সারাতে উদ্যোগী হয়নি। ফলে চলতি গ্রীষ্মকালে নন্দীগ্রাম ও সংলগ্ন এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা চরমে উঠেছে। গত এক বছর পঞ্চায়েত সমিতির হাতে থাকা ওই জল সরবরাহ প্রকল্পের অচলাবস্থা কাটাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
প্রকল্পের দায়িত্ব নিজেদের হাতে থাকার কথা মেনে নিলেও জল সরবরাহ বন্ধ হওয়ার দায় নিতে নারাজ পঞ্চায়েত সমিতি কর্তৃপক্ষ। নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আবু তাহের বলেন, “জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের তৈরি ওই পাম্প হাউসগুলি বেশ কয়েক বছরের পুরনো হওয়ায় বর্তমানে অকেজো হয়ে পড়েছে। মেরামতির জন্য আমরা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জেলা পরিষদকেও এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েছি।”
অন্য দিকে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সহকারী বাস্তুকার অমর দাস বলেন, “২০১১ সালের ফেব্রুুয়ারি মাসে ওই জল সরবরাহ প্রকল্প পঞ্চায়েত সমিতির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। ফলে প্রকল্পের মেরামতির দায়িত্ব পঞ্চায়েত সমিতিরই। তবে কারিগরি সহায়তা চাইলে সাহায্য করা হবে।”
স্থানীয় ও দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জল সরবরাহ প্রকল্পের দুটি পাম্প হাউস চালানোর জন্য ঠিকাদারের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ঠিকাদারের নিযুক্ত কর্মীরাই দুটি পাম্প হাউস চালাত। কয়েক বছর ধরে কর্মরত ওই ঠিকাকর্মীদের সরিয়ে তৃণমূল নের্তৃত্ব দলীয় কয়েকজন কর্মীকে নিযুক্ত করেছে। অভিযোগ, দলীয় কর্মীদের নিয়োগের ব্যাপারে যে ভাবে উদ্যোগী হয়েছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব, পাম্প সারানোয় তার বিন্দুমাত্রও নজরে আসেনি। জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেন বলেন, “নন্দীগ্রামে জল সরবরাহ প্রকল্পের দুটি পাম্প হাউস বন্ধ থাকার বিষয়টি জানতে পেরেছি। দীর্ঘদিনের পুরনো ওই জল সরবরাহ প্রকল্প সংস্কারের জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি।” |
|
|
|
|
|