|
|
|
|
বিডিওদের নিয়ে বৈঠক |
নতুন ঝাড়গ্রাম জেলায় ১১টি ব্লক চায় প্রশাসন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে প্রস্তাবিত ঝাড়গ্রাম জেলায় ১১টি ব্লক গঠনের পক্ষপাতী প্রশাসন। মঙ্গলবার প্রস্তাবিত জেলা গঠন নিয়ে ঝাড়গ্রাম মহকুমার ৮টি ব্লকের বিডিওদের নিয়ে বৈঠক করেন মহকুমাশাসক বাসব বন্দ্যোপাধ্যায়। মহকুমাশাসক বলেন, “আলোচনার ভিত্তিতে তৈরি প্রস্তাব-রিপোর্টটি জেলায় পাঠানো হবে।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, বৈঠকে নতুন ঝাড়গ্রাম জেলায় তিনটি মহকুমা রাখার প্রস্তাব রয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশও তিনটি মহকুমা করার ব্যাপারে রাজ্য সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছে। তবে মাওবাদী দমনের পাশাপাশি, প্রশাসনিক কাজের সুবিধার জন্য ব্লক-ভিত্তিক থানা গঠনের যে প্রস্তাব পুলিশের তরফে দেওয়া হয়েছে, তাতে মহকুমার ৮টি ব্লক ও ৯টি থানার মধ্যে কয়েকটির পুনর্বিন্যাস ঘটিয়ে ১২টি ব্লক-ভিত্তিক থানা গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। পুলিশ ১২টি ব্লক-ভিত্তিক থানার পক্ষে প্রস্তাব দিলেও ঝাড়গ্রাম মহকুমা প্রশাসন কিন্তু ১১টি ব্লক গঠনেরই পক্ষে। পুলিশের প্রস্তাবিত পৃথক শিলদা ব্লকের (বেলপাহাড়ি ও বিনপুর থানার কিছু এলাকা এবং জামবনির একটি অঞ্চলকে নিয়ে শিলদা ব্লক বা থানা গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে পুলিশ) প্রয়োজন নেই বলেই মনে করছে প্রশাসন। প্রশাসনের যুক্তি, বিনপুর-১ (লালগড়) ব্লকে দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। বিনপুর-২ (বেলপাহাড়ি) ব্লকের অন্তর্গত গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যাও ১০টি। শিলদা ও সংলগ্ন অঞ্চলগুলি বেলপাহাড়ি ব্লকের অধীনে থাকলেও ওই অঞ্চলগুলি বিনপুর থানার অন্তর্গত। বিনপুর-১ ব্লক ভেঙে লালগড় ও বিনপুর ব্লক করার ব্যাপারে প্রশাসনের কোনও আপত্তি নেই। প্রশাসনের প্রস্তাব, বিনপুর-১ ব্লকের দশটি অঞ্চলের ৫টি অঞ্চল (বৈতা, ধরমপুর, লালগড়, কাঁটাপাহাড়ি ও রামগড়) নিয়ে লালগড় ব্লক গঠন করা হোক। বিনপুর-১ ব্লকের বাকি ৫টি অঞ্চল (বিনপুর, দহিজুড়ি, আঁধারিয়া, বেলাটিকরি ও নেপুরা) এবং বেলপাহাড়ি ব্লকের ৪টি অঞ্চলকে (শিলদা, কাঁকো, হাড়দা ও এড়গোদা) নিয়ে বিনপুর ব্লক গঠনের প্রস্তাব দিচ্ছে প্রশাসন। শিলদা, কাঁকো, হাড়দা ও এড়গোদা অঞ্চল চারটি বর্তমানে বিনপুর থানার অন্তর্গত। বিনপুর ব্লক গঠনের জন্য বেলপাহাড়ি ব্লকের এলাকার পরিধি কমে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে প্রশাসনের প্রস্তাব অনুযায়ী, বেলপাহাড়ি ব্লকে থাকছে বাকি ৬টি অঞ্চল (শিমুলপাল, বাঁশপাহাড়ি, ভুলাভেদা, সন্দাপাড়া, বেলপাহাড়ি ও ভেলাইডিহা)। ফলে পৃথক শিলদা ব্লক গঠনের যৌক্তিকতা নেই বলেই মনে করছে প্রশাসন।
পুলিশের প্রস্তাব ছিল, নয়াগ্রাম ব্লককে ভেঙে চাঁদাবিলা ব্লক করার। নয়াগ্রাম ব্লকের ৫টি গ্রাম অঞ্চল (পাতিনা, চাঁদাবিলা, বড়খাঁকড়ি, মলম ও বড়নিগুই) এবং গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের কেন্দুগাড়ি অঞ্চলটিকে নিয়ে চাঁদাবিলা ব্লক করার প্রস্তাব দিয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ। মহকুমা প্রশাসন অবশ্য কেবলমাত্র নয়াগ্রাম ব্লকের ওই ৫ টি অঞ্চলকে নিয়ে চাঁদাবিলা ব্লক করার প্রস্তাব দিয়েছে। মহকুমা প্রশাসনের রিপোর্টে গোপীবল্লভপুর-১ এবং জামবনি ব্লকের এলাকা পুনর্বিন্যাসের কোনও প্রস্তাব থাকছে না। পুলিশের প্রস্তাবে গোপীবল্লভপুর-২ (বেলিয়াবেড়া) ও সাঁকরাইল ব্লক দু’টির কোনও হরফের ঘটানো হয়নি। প্রশাসনের রিপোর্টেও ব্লক দু’টির পুনর্বিন্যাসের কোনও প্রস্তাব নেই।
পুলিশি প্রস্তাবের সঙ্গে সহমত পোষণ করে ঝাড়গ্রাম ব্লক ভেঙে মানিকপাড়া ব্লক গঠনের প্রস্তাব দিচ্ছে প্রশাসনও। ঝাড়গ্রাম ব্লকের ১৩টি অঞ্চলের মধ্যে ৬ টি অঞ্চলকে (মানিকপাড়া, সর্ডিহা, চুবকা, লোধাশুলি, দুধকুণ্ডি ও শালবনি) নিয়ে মানিকপাড়া ব্লক করার পক্ষে প্রশাসনও মত দিয়েছে। পুনর্বিন্যাসিত ঝাড়গ্রাম ব্লকে থাকছে বাকি ৭টি অঞ্চল।
প্রশাসনের প্রস্তাব অনুযায়ী, ঝাড়গ্রাম সদর মহকুমার মধ্যে থাকছে ঝাড়গ্রাম, মানিকপাড়া, জামবনি এবং সাঁকরাইল ব্লক। গোপীবল্লভপুর মহকুমার মধ্যে গোপীবল্লভপুর-১, গোপীবল্লভপুর-২ (বেলিয়াবেড়া), চাঁদাবিলা ও নয়াগ্রাম ব্লককে রাখার প্রস্তাব দিয়েছে প্রশাসন। ওই মহকুমা-সদরটি গোপীবল্লভপুরের ছাতিনাশোলে করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বেলপাহাড়ি, বিনপুর ও লালগড় এই ৩টি ব্লক নিয়ে শিলদা মহকুমার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে (মহকুমা সদর হবে শিলদায়)। |
|
|
|
|
|