এক চাষিকে কুপিয়ে, নলি কেটে খুন করে তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণ করল জনা সাতেক দুষ্কৃতী। কয়েক হাজার টাকা এবং কিছু সোনার গয়নাও হাতিয়ে নেয় তারা। মঙ্গলবার গভীর রাতে হুগলির পোলবার পাটনা-দক্ষিণপাড়া গ্রামের ঘটনা। বুধবার চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ওই মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষা করায় পুলিশ। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, পরীক্ষায় গণধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। ঘটনার পিছনে ব্যক্তিগত আক্রোশ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। হুগলির পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “নির্দিষ্ট কিছু সূত্র পাওয়া গিয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই তা জানানো যাবে না। আশা করছি, দুষ্কৃতীদের শীঘ্রই ধরা যাবে।’’
স্বচ্ছল এই পরিবারটি দোলের দিন থেকেই আতঙ্কে ভুগছিল। সে দিন সকালে ওই চাষি দেখেন, তাঁর ট্রাক্টরে ১০ হাজার টাকা চেয়ে একটি হুমকি-চিঠি সাঁটা রয়েছে। চিঠিতে কারও নাম ছিল না। পোলবা থানায় সে কথা জানানো হয়।
মঙ্গলবার রাত ১২টা নাগাদ কয়েকটি মোটরবাইকে জনাসাতেক দুষ্কৃতী এসে ওই বাড়িতে চড়াও হয়। পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা পাঁচিল টপকে ঢোকে। বাড়িটির বাথরুম ঘর থেকে কিছুটা তফাতে। দোলের পর থেকেই রাতে বাথরুমে যেতে হলে ওই দম্পতি এবং তাঁদের স্কুলপড়ুয়া ছেলে, তিন জনে এক সঙ্গে বেরোতেন। এ দিন সাড়ে ১২টা নাগাদ তাঁরা বেরোতেই দুষ্কৃতীদের খপ্পড়ে পড়েন। দুষ্কৃতীরা তিন জনকে আলাদা ভাবে তিনটি ঘরে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার শুরু করে। দুষ্কৃতীরা চলে গেলে ওই মহিলা নিজেই কোনও রকমে বাঁধন খুলে পাশের ঘর থেকে ছেলেকে উদ্ধার করেন। তারপরে দেখেন অন্য ঘরে খাটে স্বামীর রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। পুলিশ তদন্তে আসে। বুধবার ঘটনাস্থলে আসেন জেলা পুলিশের কর্তারা। ব্যারাকপুর থেকে আনা হয় পুলিশ-কুকুর। ওই মহিলা জানান, দুষ্কৃতীদের তিনি আগে কখনও এলাকায় দেখেননি। তাদের বয়স ২৫-৩০ বছরের মধ্যে। প্রত্যেকের হাতেই ধারালো অস্ত্র ছিল। তিনি বলেন, “ভয়ে আমরা চেঁচাইনি। স্বামীকে খুন করার পরেই ওরা আমার উপরে অত্যাচার চালাল। যাওয়ার আগে আমার গায়ের গয়না ছাড়াও আলমারি থেকে ধান বিক্রির ৪০ হাজার টাকা এবং ৮ ভরি সোনার গয়না নিয়ে যায়।” প্রতিবেশীরা জানান, চাষাবাদ নিয়েই সারা দিন ব্যস্ত থাকতেন ওই চাষি। তাঁর কোনও শত্রু থাকার কথা তাঁরা জানতেন না। মঙ্গলবার রাতে তাঁরা কেউ কোনও শব্দ পাননি। |