জখম ১, ভাঙচুর কয়েকটি দোকানে
তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মারপিট জাঙ্গিপাড়ায়
ত রবিবার তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ের জেরে তুলকালাম কাণ্ড হয় হুগলির হরিপালে। জেলায় ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ থামাতে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন দলের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু শীর্ষ নেতৃত্বের ‘হুঁশিয়ারি’তেও পরিস্থিতি রাতারাতি বদলায়নি, বুধবার তার প্রমাণ মিলল জাঙ্গিপাড়ায়। এ দিন সকালে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে তেতে ওঠে জাঙ্গিপাড়া। কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর হয়। জখম অবস্থায় এক তৃণমূল কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ দিনের ঘটনার সূত্রপাত তৃণমূলের এক কর্মীকে গ্রেফতার করা নিয়ে। পুলিশ সূত্রের খবর, গত ১৭ মার্চ গ্রামে বচসা এবং মারামারি হয়েছিল। ওই ঘটনায় সুলক্ষণ দেঁড়ে নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করেছিলেন জনৈক কাশীরাম মালিক।
ওই অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ সুলক্ষণকে গ্রেফতার করে। তৃণমূল শিবিরের খবর, সুলক্ষণ দলের জাঙ্গিপাড়া ব্লক সভাপতি জয়দেব ওরফে ভোলা পাল এবং শেখ মইনুদ্দিন ওরফে বুধোর গোষ্ঠীভুক্ত। ওই গোষ্ঠীর অভিযোগ, দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি দেবেন সাহা-গোষ্ঠীর মদতে সুলক্ষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। তা নিয়ে দেবেন-গোষ্ঠীর ছেলেদের উপর বুধো-জয়দেব গোষ্ঠীর রাগ ছিল।
সুলক্ষণকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে এ দিন সকালে জয়দেব-বুধো গোষ্ঠীর কয়েকশো নেতা-কর্মী থানার সামনে চড়াও হন। সেখানে বিক্ষোভ চলে। ওসি আজিমুদ্দিন মণ্ডলকে একটি স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। অভিযোগ, থানায় আন্দোলন চলার সময়েই বিক্ষোভকারীদের একাংশ দেবেন-গোষ্ঠীর ছেলেদের উপর চড়াও হন। কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়।
থানার কাছেই তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয় চলে দেবেনবাবুর নেতৃত্বে। সেখানেও হানা দেয় বিক্ষোভকারীরা। দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বেধে যায়। হাতাহাতি বাধে। সংখ্যায় কম থাকায় দেবেনবাবুর গোষ্ঠীর ছেলেরা তখনকার মতো এঁটে উঠতে পারেনি। ওই গোষ্ঠীর কর্মী কান্ত মুর্মুকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। গোলমালে আশপাশের মানুষজন সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। জখম অবস্থায় কান্তকে জাঙ্গিপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় লিখিত কোনও অভিযোগ হয়নি। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দেবেনবাবুর অভিযোগ, “সিপিএম ছেড়ে সদ্য দলে যোগ দেওয়া লোকজনের কথা না শোনায় আমাদের উপর হামলা হল। দলের কেউ-কেউ এতে মদত দিচ্ছেন। এরা সিপিএম করার সময়ে আমাদের মারধর করেছে।” জয়দেববাবুর অবশ্য দাবি, থানায় ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ভাবে মিথ্যে এফআইআর করা হয়েছিল। গ্রামবাসীরা তারই প্রতিবাদ করেছেন।
অন্য দিকে, জয়দেববাবুর বক্তব্য, “ভাঙচুর-মারধর কিছুই হয়নি। সিপিএমের মদতে এক দল লোক বিশৃঙ্খলা করছিল। আমি গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিই।” তবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে তাঁর কথাতেও। জয়দেববাবু বলেন, “দেবেনবাবু আগে দলের ব্লক সভাপতি ছিলেন। পদ চলে যাওয়ায় তিনি বদনাম রটাচ্ছেন। একজনকে আহত সাজানো হয়েছে। এতে দলেরই ক্ষতি হচ্ছে, সেটা বুঝছেন না। গোটা বিষয়টি আমি বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে জানিয়েছি।” শেখ মইনুদ্দিন আবার বলেন, “ওই পার্টি অফিসে বসে কিছু ছেলে মদ খাচ্ছিল। আমরা তাদের ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছি। এক জনকে চড়চাপড় মারা হয়েছে। দেবেনবাবু পালিয়ে যান। উনি দলের বদনাম করছেন।”
স্নেহাশিসবাবুর মোবাইলে বহু বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি। দলের এক জেলা নেতা বলেন, “জাঙ্গিপাড়ায় দলে কিছু সমস্যা রয়েছে। এ নিয়ে আলোচনা হবে। গোটা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.