বস্ত্রশিল্পের বিপুল সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে উদ্যোগী হল শিলিগুড়ি পুরসভা এবং ফেডারেশন অব চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, নর্থ বেঙ্গল (ফোসিন)। বুধবার শিলিগুড়ির সেবক রোডের শিল্পতালুকে কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে শিলিগুড়ির বেশ কিছু শিল্পোদ্যোগী উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের আধিকারিকেরা ওই কর্মশালায় বস্ত্রশিল্পে আগ্রহীদের জন্য দফতরের নানা প্রকল্পের কথা জানান। বড় শিল্প ছাড়াও অল্প জমিতে কয়েকটি পাওয়ার লুম বসিয়েও স্বনির্ভর হওয়া যায় সেই ব্যাপারেও বিস্তারিত আলোচনা করেন। কর্মশালার উদ্বোধন করতে গিয়ে শিলিগুড়ির মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “শিলিগুড়িতে বাজার রয়েছে। শ্রমিক রয়েছে। উদ্যোগী রয়েছে। কী ভাবে কাজে নামবেন সেই ব্যাপারেই স্পষ্ট ধারণা নেই কারও। কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের আধিকারিকদের সঙ্গে আমরা পুরসভায় পৃথক ভাবে বৈঠক করতে চাই যাতে পুর এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের নিয়েও কোনও প্রকল্প তৈরি করা যায়।” ফোসিনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাসও বলেন, “শিলিগুড়িতে বহু উদ্যোগী রয়েছেন যাঁরা বিনিয়োগে আগ্রহী। সঠিক প্রকল্প, প্রশিক্ষণ-সহ শিল্প স্থাপনের সুবিধে পেলে কাজে নামতে আগ্রহী। সেটা জানার পরেই আমরা কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করি। আশা করছি, দ্রুত বেশ কয়েকটি শিল্প চালু করা সম্ভব হবে।”
উত্তরবঙ্গে রায়গঞ্জে একটি স্পিনিং মিল থাকার পরেও কেন যে উত্তরবঙ্গে কোনও পাওয়ার লুম ভিত্তিক বড় মাপের কেন্দ্র তৈরি হয়নি সেটা স্পষ্ট নয় কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের আধিকারিকদের কাছেও। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রক যেখানে বস্ত্র শিল্পে বিনিয়োগে আগ্রহীদের ৫-১০ শতাংশ হারে ভরতুকি দিতে তৈরি সেখানে এই সুযোগ উদ্যোগীদের কাজে লাগানো উচিত বলে মনে করেন তাঁরা। দফতরের কলকাতা আঞ্চলিক অফিসের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর (টেকনিক্যাল) অপূর্ব ভট্টাচার্য বলেন, “শিলিগুড়িতে বস্ত্রের বিপুল বাজার। লাগোয়া নেপাল, ভুটান, সিকিম ছাড়াও গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চল রয়েছে। তার পরেও গঙ্গারামপুর ছাড়া উত্তরবঙ্গেও কোথাও সেখাবে পাওয়ার লুম প্রকল্প তৈরি হয়নি। অথচ, এই সমস্ত প্রকল্পে কমর্সংস্থানের সুবিধে রয়েছে। টেক্সটাইল পার্ক তৈরির জন্যও প্রায় ৪০ শতাংশ কেন্দ্রীয় ভুরতুকির ব্যবস্থা রয়েছে। এমনকী, উদ্যোগীদের প্রকল্প তৈরি করে দেওয়া থেকে শুরু করে প্রশিক্ষণের সুবিধেও রয়েছে। এদিনের কর্মশালায় সবই উদ্যোগীদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে।” কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা রাজ্যে এখন প্রায় ১৮ হাজার পাওয়ার লুম রয়েছে। তার বেশির ভাগই কলকাতা লাগোয়া এলাকায়। সেখানকার শ্রমিকদের ন্যূনতম প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে কাঁচামাল সংগ্রহের ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের আধিকারিকেরা নানা ভাবে সাহায্য করে থাকেন। কলকাতায় ইতিমধ্যেই ২টি টেক্সটাইল পার্ক তৈরির কাজ চলছে। শিলিগুড়িতেও এই ধরনের পার্ক তৈরির ব্যাপারে পুরসভার পক্ষ থেকে আগ্রহ প্রকাশ করেন মেয়র পারিষদ অরিন্দম মিত্র। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে মেয়র পারিষদ সঞ্জয় পাঠক, কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের অ্যাটিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অসিত ধর-সহ অন্যান্যরা আলোচনায় অংশ নেন। |