নিজস্ব সংবাদদাতা • রামপুরহাট |
পড়শি বাবা ও ছেলেকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল একই গ্রামের ১১ জন বাসিন্দার। বুধবার রামপুরহাট আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক গুরুপদ মণ্ডল এই রায় দেন। সাজাপ্রাপ্তদের বাড়ি নলহাটি থানার নতুন গ্রামে।
সাজাপ্রাপ্তরা হলকিরীটী ভূষণ মণ্ডল ও তার পাঁচ ছেলে চন্দ্রশেখর, সুবোধ, প্রফুল্ল, প্রবীর, জগন্নাথ এবং কিরীটীর ভাইপো নকুল, তার তিন ছেলে অজয়, অভয়, অসীম। এ ছাড়া কিরীটীর এক আত্মীয় সনত মণ্ডলেরও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। অ্যাডিশনাল পাবলিক প্রসিকিউটর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ১৯৯৬ সালে ৪ মে ভোর ৫টা নাগাদ নতুন গ্রামের পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা শিবশঙ্কর মণ্ডলের তিন ছেলে গৌতম মণ্ডল, প্রশান্ত মণ্ডল, বরুণ মণ্ডল মাঠের দিকে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরোতেই সাজাপ্রাপ্তরা পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে লাঠি, শাবল, টাঙ্গি, অস্ত্র নিয়ে তাঁদের উপরে চড়াও হয়। ছেলেদের মারধর করছে দেখে শিবশঙ্করবাবু তাঁদের বাঁচাতে যান। তখন সাজাপ্রাপ্তরা শিবশঙ্করবাবুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। গুরুতর জখম অবস্থায় শিবশঙ্করবাবুর ছেলে প্রশান্তকে প্রথমে নলহাটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। পরে সেখান থেকে রামপুরহাট হাসপাতাল ও বর্ধমান মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় কলকাতার এসএসকেএমে ভর্তি করানো হয়। পরে সেখানেই মারা যান প্রশান্তবাবু।
এ দিকে, নলহাটি থানায় শিবশঙ্করবাবুর ভাই প্রভাকর মণ্ডল ১১ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। দীর্ঘদিন মামলা চলার পরে এ দিন আদালত রায় দেয়। শিবশঙ্করবাবুর ছোট ছেলে গৌতম মণ্ডল বলেন, “আমাদের বাড়ি লাগোয়া দু’শতক জায়গা দখল করা নিয়ে পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা চন্দ্রশেখরদের সঙ্গে বিরোধ চলছিল।” তাঁর দাবি, “ওই জায়গা আমার বাবা কিনেছিলেন। অথচ ওরা জোর করে দখল নিয়ে চেয়েছিল। পাঁচিল দিয়ে বাড়ি তৈরিও শুরু করেছিল। প্রতিবাদ করলে আক্রোশে ওরা বাবা ও ভাইকে খুন করে।”
অন্য দিকে, রামপুরহাটের ফাস্ট ট্র্যাক দ্বিতীয় আদালত বুধবার এক বধূকে খুনের দায়ে ৬ বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন স্বামী ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায়কে। মৃত বধূর নাম শিপ্রা চট্টোপাধ্যায়। প্রমাণের অভাবে ওই বধূর শ্বশুর প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় ও দেওর অর্ঘ্য চট্টোপাধ্যায় বেকসুর খালাস পান। সরকারি আইনজীবী আব্দুল মালেক জানিয়েছেন, ২০০৭ সালের ১০ জুলাই মুরারই থানার মিত্রপুরের বাসিন্দা কল্যাণ মুখোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর দিদি শিপ্রা চট্টোপাধ্যায়কে খুন করেছে জামাইবাবু জাজিগ্রামের বাসিন্দা ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায়, দিদির শ্বশুর প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় ও দেওর অর্ঘ্য চট্টোপাধ্যায়। এ দিন বিচারক বিচারক কুমকুম সিংহ এই রায় দিয়েছেন। |