দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি বাসস্ট্যান্ড থেকে মথুরাপুর স্টেশন মোড় পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার রাস্তায় যাতায়াত দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই এলাকার মানুষ এবং যানচালকদের কাছে। খানাখন্দে ভরা রাস্তায় গাড়ি চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, রাস্তার সংস্কারের জন্য পূর্ত দফতরের কাছে বারবার আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। উল্টে যত দিন গিয়েছে, রাস্তার অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যস্ত ওই রাস্তায় নিত্য প্রায় সাতশো অটোরিকশা চলাচল করে। ট্রেকার চলে প্রায় একশোটি। মিনিবাস চলে ৩৫টি। এ ছাড়া মোটরভ্যান ও অন্যান্য গাড়ি তো রয়েইছে। মিনিবাসগুলি রায়দিঘি থেকে মথুরাপুর স্টেশন মোড় হয়ে ডায়মন্ড হারবার পর্যন্ত যাতায়াত করে। রায়দিঘির সুন্দরবন এলাকার পাথরপ্রতিমা, কুলতলি, এবং জয়নগর এলাকার বেশ কিছু অংশের মানুষকে নিত্য প্রয়োজনে ডায়মন্ড হারবার স্টেশনে যাতায়াত করতে হয়। |
এ ছাড়া এলাকার অধিকাংশ মানুষ মথুরাপুর থেকে ট্রেনে কলকাতায় নিত্য যাতায়াত করেন। এই অবস্থায় নিত্য কয়েক হাজার মানুষ এবং যানবাহন এই রাস্তায় চলাচল করলেও রাস্তার শোচনীয় হাল ফেরাতে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। দীর্ঘ এই রাস্তার বেশিরভাগ জায়গাতেই পিচের আস্তরণ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। কোনও কোনও জায়গায় সেই সব গর্ত এতটাই গভীর যে গাড়ির চাকা পড়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য, রাস্তার মাঝে, দু’পাশে গর্তে চাকা পড়ে গাড়ি এমন দুলতে থাকে যে মনে হয় যেন নৌকায় বসে আছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই রাস্তায় যাতায়াত করতে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, খারাপ রাস্তার কারণে যানবাহনের গতি কমে যাওয়ায় সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছনোই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও গুরুতর সমস্যা হচ্ছে।
যানচালকদের অভিযোগ, রাস্তার খারাপ অবস্থার কারণে গাড়ির যন্ত্রাংশের প্রচণ্ড ক্ষতি হচ্ছে। জোরে গাড়ি চালানোয় সমস্যা হচ্ছে। অথচ যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হওয়ার কারণে তাঁদের দোষারোপ করছেন। বাধ্য হয়ে বহু চালক গাড়ি বন্ধ করে দেওয়ায় সমস্যা আরও বেড়ে গিয়েছে। প্রায় বাদুড়ঝোলা হয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বাড়ছে। ওই রুটে চলাচলকারী মিনিবাস মালিক ইউনিয়নের সম্পাদক রহিচউদ্দিন মোল্লার অভিযোগ, রাস্তা সারানোর জন্য পূর্ত দফতরের কাছে একাধিকবার আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু তাঁদের কোনও হেলদোল নেই। যানবাহনের ক্ষতির পাশপাশি যাত্রীদের সুরক্ষার দিকে নজরই নেই প্রশাসনের।
রাস্তার সংস্কার প্রসঙ্গে পূর্ত দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ‘অনুন্নত এলাকায় উন্নয়ন প্রকল্প’-এর অধীনে ওই রাস্তা সংস্কারের পরিকল্পনা হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। |