সেচখাল পেরনোর সেতু নেই, ভরসা বালির বস্তা
প্রায় ৪০ বছর ধরে প্রশাসনের কাছে সেচখাল পেরোনোর জন্য সামান্য একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন কেতুগ্রাম ২ ব্লকের চক খাঁড়ুলিয়া গ্রামের বাসিন্দারা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও সুরাহা হয়নি তার। আপাতত খালের জল আটকে বালির বস্তা রেখে তার উপর দিয়েই চলছে পারাপারের কাজ।
কেতুগ্রাম ২ পঞ্চায়েতের সদর দফতর গঙ্গাটিকুরিতে। সেখান থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরেই রয়েছে গ্রামটি। সেচখালটি পেরিয়ে পৌঁছতে হয় ওই গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ওই খালের উপর একটি পাকা সেতু নির্মাণের ‘সূচনা’ করে তার শিলান্যাস করেছিলেন বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি সিপিএমের উদয় সরকার। সঙ্গে ছিলেন সিপিএমের তৎকালীন বিধায়ক তমাল মাঝি। দরপত্র ডেকে কাজের বরাতও দেওয়া হয়। কিন্তু টাকার সংস্থান না থাকায় বাস্তবায়িতই করা যায়নি পরিকল্পনাটি। গ্রামবাসীরা জানান, গত বছর বর্ধমান জেলা পরিষদ নিজস্ব তহবিল থেকে এক কোটি টাকা খরচ করে সেচখালের উপর পাকা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই মতো মাটিও পরীক্ষা করা হয়। ঠিকাদার গোষ্ঠীও নির্মাণসামগ্রী কিনে ফেলেছিল। কিন্তু মাঝপথেই আটকে যায় কাজটি।
নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমান জেলা পরিষদের পূর্ত দফতরের স্থায়ী সদস্য সরোজ ভট্টাচার্য বলেন, “বিগত বাম সরকার ওই সেতুর জন্য টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। সে কারণেই কাজের সূচনা করা হয়েছিল। তৃণমূল সরকার টাকা দেয়নি। সে কারণেই কাজটি বাতিল করা হয়েছে।” কেতুগ্রাম ২ ব্লকের তৃণমূল নেতা দেবাশিস মণ্ডলের অবশ্য পাল্টা প্রশ্ন, “টাকার সংস্থান ছাড়া টেন্ডার ডাকা হল কী ভাবে?”
কিন্তু দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ না হওয়ায় স্বভাবতই ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের ক্ষোভ, ১৯৭৩ সাল থেকে রাজ্য প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ওই সেচখালের উপরে একটি পাকা সেতু নির্মাণের আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেউ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকী বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেতুটির শিলান্যাস করা স্রেফ নির্বাচনী চমক ছিল, এমনও মন্তব্য করছেন কেউ কেউ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বছর দশেক আগে আলপথেই যাতায়াত করতে হত গ্রামের বাসিন্দাদের। আলপথ ধরে আজিমগঞ্জ-কাটোয়া রেললাইন হয়ে ঘুরপথে গন্তব্যে পৌঁছতে হত গ্রামবাসীদের। ২০০৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কেতুগ্রামের ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি ওই সেচখালের উপর একটি অস্থায়ী কাঠের সেতু নির্মাণ করে। কিন্তু তিন বছর পরেই বন্যার সময়ে তা ভেঙে পড়ে। কাজ চালানোর জন্য স্থানীয় নবগ্রাম পঞ্চায়েত মেরামত করে দেয় সেতুটি। কিন্তু গত বছর বন্যার সময় ফের ভেঙে পড়ে সেতুটি। এর পরে বাধ্য হয়ে নৌকায় খাল পেরোতেন গ্রামবাসীরা। কিছুদিন ধরে বালির বস্তাই ভরসা তাঁদের। গ্রামবাসী সন্ন্যাসী মাঝি বলেন, “সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের আমল থেকে বর্তমানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে আমাদের দুরাবস্থার কথা জানিয়েছি। কিন্তু ফল হয়নি কোনও। পাকা সেতু হতে গিয়েও আটকে গেল।” গ্রামবাসী সুখদেব মাঝি, দুখিরাম মাঝিদের ক্ষোভ, “আমরা কত আশা করেছিলাম, এ বার পাকা সেতু হবে। কেন যে ওই সেতু আর হল না বুঝতে পারছি না।” কবে তৈরি হবে সেতু, তা নিয়ে অন্ধকারে সিপিএম পরিচালিত কেতুগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিতিও। ওই সমিতির পূর্ত দফতরের কর্মাধ্যক্ষ তপন মাঝি বলেন, “আমরাও ঠিক মতো জানি না, কী কারণে ওই সেতুর কাজ বন্ধ রয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.