বেহাল সিগন্যাল, ভয়ের যাতায়াত জাতীয় সড়কে
রণ ফাঁদ।
২ নম্বর জাতীয় সড়কের এবিএল মোড়-কে এখন এই ভাবেই দেখছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গত ২৩ মার্চ দু’টি ট্যাঙ্কারের মুখোমুখি সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে মৃত্যু হয় মোটরবাইকে থাকা দুই আরোহীর। মারা যান একটি ট্যাঙ্কারের চালকও।
শুধু এবিএল মোড় নয়। সিগন্যাল পোস্ট উপড়ে পড়ে আছে অথবা যথাযথ ভাবে আলো জ্বলে না এমন তালিকায় রয়েছে মুচিপাড়া, বিধাননগর বা ডিভিসির মতো গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিও। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন।
এলাকার বাসিন্দারা অবশ্য এই সব আশ্বাসে আর ভরসা পাচ্ছেন না। রবিবার সন্ধ্যায় বিধাননগর মোড়ে স্থানীয় প্রবীণেরা জড়ো হয়ে শুক্রবারের দুর্ঘটনায় মৃত তিন জনের আত্মার শান্তিকামনা করে নীরবতা পালন করেন। তাঁদের ভাষায়, “জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এটা আমাদের নীরব প্রতিবাদ।”
বিধাননগর মোড়ে ভাঙা সিগন্যাল পোস্ট।
২ নম্বর জাতীয় সড়ক চার লেন হওয়ার পরে বিভিন্ন মোড়ে আধুনিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু করেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তীব্র গতিতে ছুটে চলা গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাঝে মাঝেই ধাক্কা মারে সেই সব সিগন্যাল পোস্টে। পোস্ট উপড়ে যায়। ফের তা তুলে নির্দিষ্ট জায়গায় বসানোর ব্যবস্থা করেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, এই কাজ করতে অনেক সময়েই দীর্ঘসূত্রিতা দেখান জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি একের পর এক মোড়ে গাড়ির ধাক্কায় সিগন্যাল পোস্ট উপড়ে গিয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেই সমস্ত পোস্ট তুলে নতুন করে স্থাপনের কোনও উদ্যোগ লক্ষ করা যাচ্ছে না জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে। ফলে দিনের পর দিন বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে সিগন্যাল ব্যবস্থা।
জাতীয় সড়কের বিভিন্ন মোড় ঘুরে দেখা গিয়েছে, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুচিপাড়া ও ডিভিসি মোড়ে একটি করে সিগন্যাল পোস্ট উপড়ে গিয়েছে। বিধাননগর মোড়ে উপড়ে পড়ে আছে দু’টি সিগন্যাল পোস্ট। দুর্ঘটনার অনেক আগে থেকেই এবিএল মোড়ে ভেঙে পড়ে আছে দু’টি পোস্ট। বাকি দু’টির একটিতে আলো নেই। অন্যটিতে আলো জ্বলে না। তার উপরে গাঁধী মোড়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশে ডিভাইডারের রেলিং ভাঙা। সব মিলিয়ে জাতীয় সড়কের বিভিন্ন মোড়ে যে কোনও সময় প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা বাসিন্দাদের। সৌজন্যে বেহাল সিগন্যাল ব্যবস্থা।
সুভাষপল্লির বাসিন্দা সুবীর রায়, নিবেদিতা পার্কের সত্যগোপাল বন্দ্যোপাধ্যায়’রা বলেন, “মোড়গুলির যা অবস্থা তাতে যে কোনও দিন যে কোনও ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে। আমাদের দাবি, অবিলম্বে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।”
এবিএল মোড়ে শুক্রবার দুর্ঘটনার পরে বালি
ঢালা হলেও তা এখনও সরানো হয়নি।
বেহাল
সিগন্যাল পোস্ট।
প্রায় একই কথা জানানো হয়েছে ট্রাফিক পুলিশের তরফেও। অতীতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিল স্থানীয় থানাগুলিই। কিন্তু আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট গঠনের পর ১ জানুয়ারি থেকেই আলাদা ট্রাফিক পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। বিভিন্ন মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে। কিন্তু সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু না থাকায় তাঁদের কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বে থাকা পুলিশ বা সিভিক পুলিশ কর্মীরা। এসিপি (ট্রাফিক) শিবপ্রসাদ পাত্র জানান, বিষয়টি তাঁরা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে এক আধিকারিকের জবাব, “দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।” কিন্তু কবে তা নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেননি তিনি। কেনই বা ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা যথাযথ ভাবে কার্যকর করা হচ্ছে না, কেন দিনের পর দিন ভেঙে পড়ে থাকছে সিগন্যাল পোস্ট সে সব নিয়েও স্পষ্ট জবাব মেলেনি তাঁর কাছ থেকে।

ছবিগুলি তুলেছেন বিকাশ মশান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.