নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জাতীয় সড়ক লাগোয়া বাড়িতে ধাক্কা মেরে উল্টে গেল মাটি বোঝাই ট্রাক। মাটি চাপা পড়ে মৃত্যু হল এক দম্পতির। শনিবার গভীর রাতে মালদহের রতুয়ার শ্রীপুরে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর ওই দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, মৃত দম্পতির নাম নাম হরেন মুশাহার (৫৫), ও মিনা মুশাহার(৪৬)। দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন ওই দম্পতির ৩ সন্তানও। তার মধ্যে ৫ বছরের শিশুকন্যা জ্যোতি মুশাহারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মালদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকি দুই শিশু কার্তিক ও কবিতাকে রাতে মালতিপুর হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরে রবিবার ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনার জেরে বেহাল জাতীয় সড়ক সংস্কারের দাবিতে এ দিন সকাল ৮টা থেকে দু’ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। ঘটনার কথা জানতে পেরে সকালেই মৃতের বাড়িতে যান মালতিপুরের আরএসপি বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সি। বেহাল রাস্তার জন্যই দুর্ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ বিধায়কের। |
মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তদন্ত শুরু হয়েছে। দুর্ঘটনার পরই চালক ও খালাসি পালিয়ে গিয়েছে। গাড়িতে মালিকানা সংক্রান্ত কোনও কাগজপত্র পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। শ্রীপুরে জাতীয় সড়কের পাশেই বেড়ার তৈরি বাড়িতে ৩ সন্তানকে নিয়ে থাকতেন দিনমজুর হরেন মুশাহার। তাঁর আরও দুই ছেলেমেয়ে রয়েছে। মেয়ে বিবাহিত। বড় ছেলে ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। দুর্ঘটনার সময়ে এলাকার বাসিন্দারা কিছু টের পাননি। রাত একটা নাগাদ বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যায় তাঁদের। বাড়ি থেকে বের হয়ে তাঁরা দেখেন ট্রাকটি হরেনবাবুর ঘরে ধাক্কা মেরে উল্টে রয়েছে। আর তার তলায় চাপা পড়ে রয়েছে ৫ জনই। খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশও। এরপর কোদাল-বেলচা দিয়ে মাটি সরিয়ে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আকস্মিক ওই ঘটনায় এলাকা শোকস্তব্ধ। কার্তিক ও কবিতাকে আগলে রেখেছেন ঠাকুমা ইলিচিয়া দেবী। মাঝে মধ্যেই আতঙ্কে কেঁপে উঠছে তারা। বাবা-মা হারা ওই দুই শিশুর কী হবে তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পরিবারের আত্মীয়রা। মৃতের ভাই অরুণবাবু বলেন, “পাশেই আমার বাড়ি। বিকট শব্দ শুনে ঘর থেকে বেরিয়েই দেখি দাদার বাড়ির উপর ট্রাক উল্টে রয়েছে। বুঝতে পারিনি কী সর্বনাশ হয়েছে।” |