|
|
|
|
কোচবিহারে কেরোসিন পাননি ৮ লক্ষ কাডর্ধারী |
সময়মতো সরবরাহ হয়নি ২০০টি-র বেশি রেশন দোকানে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
পরীক্ষার মরসুমেও রেশনে কেরোসিন তেল পেলেন না কোচবিহারের মাথাভাঙা মহকুমা ও দিনহাটার সিতাই ব্লকের গ্রাহকরা। কেরোসিন পাননি কোচবিহার সদর, তুফানগঞ্জ ও দিনহাটা মহকুমার আরও ৫০টি রেশন দোকানের গ্রাহকেরা। সব মিলিয়ে সদ্য সমাপ্ত সপ্তাহে জেলার দুই শতাধিক রেশন দোকানের আট লক্ষাধিক গ্রাহক কেরোসিন পাননি। সংশ্লিষ্ট এলাকার রেশন গ্রাহক, অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে খোলাবাজারে কেরোসিনের বাজার দাম বেড়ে যাওয়ায় তাঁদের ক্ষোভ বেড়েছে। গোটা ঘটনার জেরে গ্রাহকদের সঙ্গে রেশন ডিলারদেরও বিক্ষিপ্ত গোলমাল বেড়ে গিয়েছে। খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের কোচবিহার জেলা নিয়ামক মানিক সরকার অবশ্য বলেছেন, “সময়মতো চাহিদা অনুযায়ী কেরোসিনের সরবরাহ না মেলায় মাথাভাঙা মহকুমা ও সিতাই ব্লকের কোনও ডিলারকে কেরোসিন দেওয়া যায়নি। ওই দুটি এলাকার গ্রাহকদের কেরোসিন বিলি করা যায়নি। পরের সপ্তাহে ওই ঘাটতি মিটিয়ে দেব।” কোচবিহার জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, ফি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার পর্যন্ত রেশন দোকানগুলিতে সরবরাহ করা পণ্য গ্রাহকদের দেওয়া হয়। এ জন্য ডিলারদের প্রাপ্য পণ্য বুধবারের মধ্যে বেশির ভাগ সময় বুঝিয়েও দেন খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের কর্তারা। সদ্যসমাপ্ত সপ্তাহে চাহিদা অনুযায়ী কেরোসিন তেলের সরবরাহ সময়মতো না মেলায় জেলার এক তৃতীয়াংশ প্রায় দুই শতাধিক রেশন ডিলারের নির্দিষ্ট কেরোসিনের জোগান দেওয়া যায়নি। গোটা মাথাভাঙা মহকুমার ১৩৫ ডিলার রয়েছেন। তাঁদের কাউকেই কেরোসিন দিতে পারেনি খাদ্য ও সরবরাহ দফতর। একই অবস্থা দিনহাটার সিতাই ব্লকের ১৯ জন ডিলারের সকলেরই। ফলে ওই দুটি এলাকার কোনও গ্রাহক কেরোসিন পাননি। পশ্চিমবঙ্গ এমআর ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের কোচবিহার জেলা সভাপতি অর্জুন দত্ত বলেন, “রবিবার শেষ হওয়া সপ্তাহে জেলার মাথাভাঙার ১৩৫, সিতাইয়ের ১৯, তুফানগঞ্জের ২২, কোচবিহার সদরের ২২ জন ছাড়াও দিনহাটার আরও কয়েকটি এলাকা মিলিয়ে দুশোর বেশি ডিলার কেরোসিন পাননি। কমপক্ষে ৮ লক্ষ গ্রাহককে কেরোসিন দেওয়া যায়নি। অথচ হকারদের সকলেই কেরোসিন পেয়েছেন। দফতর জোগান দিতে না পারলেও মানুষ আমাদের দুষছেন। অনেক ক্ষেত্রে গোলমালও হয়েছে।” খাদ্য ও সরবরাহ দফতর সূত্রে খবর, কোচবিহারে প্রতি সপ্তাহে গড়ে ৫৩০ কিলোলিটার কেরোসিন রেশনে দরকার হয়। গত সপ্তাহে ওই চাহিদার তুলনায় প্রায় ১৫০ কিলোলিটার কম বরাদ্দ এসেছে। ওই দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “অসম বা বিহার থেকে হাসিমারা ডিপোয় ওই কেরোসিন এনে তা এজেন্ট মারফত রেশনে সরবরাহের জন্য পাঠায় আইওসি। এবার এজেন্টরা চাহিদা মতো কেরোসিন পাননি বলেই এমন সমস্যা হয়েছে।’’ একে একাদশ শ্রেণি ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে, সামনে স্নাতক স্তরের পরীক্ষা। আগের সপ্তাহগুলিতেও বহু ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত কেরোসিন মেলেনি। এবারে মাথাভাঙা ও সিতাইয়ে সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ থাকায় সেখানকার বাজারে তেলের দাম বেড়েছে। মাথাভাঙার ডিওয়াইএফ নেতা কাজল রায় বলেন, “পরীক্ষার মরসুমে রেশনে কেরোসিন না মেলার প্রভাব খোলা বাজারে পড়েছে। কিছুদিন আগে যেখানে লিটার প্রতি ৩০-৩৫ টাকায় কেরোসিন পাওয়া যেত, তা ৪০ টাকা হয়েছে।” ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অরিন্দম দে জানান, সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব। |
|
|
|
|
|