ছাত্র পরিষদ ছেড়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ১১জন প্রতিনিধি তাঁদের ছাত্র সংগঠনে যোগ দিলেন বলে দাবি করল তৃণমূল। রবিবার হিলকার্ট রোডে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে তাদের একাংশ দলের জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের হাত থেকে দলীয় পতাকা নেন। তাদের সঙ্গে ৪০ জন সমর্থকও ছাত্র পরিষদ ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন বলে জানানো হয়। ছাত্র পরিষদের দাবি, তাদের ৫-৬ জন ছাত্র প্রতিনিধি তৃণমূলে যোগ দিলেও বাকিরা তাদের সংগঠনেই রয়েছেন। ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি অমিত তালুকদারের অভিযোগ, “উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর নির্দেশে দলের এক নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে গৌতমবাবুর দফতরে কাজের টোপ দিচ্ছেন। নির্দেশ মানা না হলে ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে একই রকম অভিযোগ জানিয়ে রোনাল্ডের মতো জেলে পাঠানোর হুমকি দেওয়া হচ্ছে।” |
পুলিশে তা নিয়ে অভিযোগ জানানো না হলেও শীঘ্রই সাংবাদিক বৈঠক ডেকে ওই ছাত্র প্রতিনিধিরা বিবৃতি দেবেন বলে দাবি করেছেন অমিতবাবু। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ছাত্র পরিষদ এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা-সমর্থকদের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় পুলিশ ছাত্র পরিষদের এক নেতাকে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করে। ছাত্র পরিষদ অভিযোগ জানান, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী নির্দেশেই রোনাল্ডকে জামিন অযোগ্য ধারায় পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও তোলে ছাত্র পরিষদ। দলের বিধায়কদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই ব্যাপারে অভিযোগ জানানোর হুমকি দিয়েছেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকার। এ দিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী ওই প্রসঙ্গে অভিযোগ করেন, “ছাত্রকে মারধর করার পরেও গত এক সপ্তাহ ধরে শহরে আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়ে তাণ্ডব চালানো হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিদের একাংশ আমাদের দলে যোগদান করিয়ে তাঁদের একটা ছোট শিক্ষা দেওয়া হল। যাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানানোর হুমকি দিচ্ছেন তাদের কথার সঙ্গে সিপিএমের মিল রয়েছে।” ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পঙ্কজ সিংহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রই নন। উত্তরে এ দিন গৌতমবাবু জেলা কংগ্রেস সভাপতির নাম না করে আক্রমণের সুরে বলেন, “ছাত্র পরিষদের তাণ্ডবের যাঁরা পৃষ্ঠপোষক তারা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পা দেননি। পঙ্কজ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য হতে পারবে না কেন? তা হলে যিনি আইন জানেন না তিনি কী ভাবে আইনসভার সদস্য হবেন?” যা শুনে শঙ্করবাবুর উত্তর, “ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে মন্ত্রী না ঘাঁটালেই ভাল হয়। তাহলে অনেকেই নানা প্রসঙ্গ তুলবেন। আসলে গৌতমবাবু বোধহয় ভুলে গিয়েছেন যে তিনি কেবল তৃণমূলের মন্ত্রী নন।” ১৮ মার্চ রবিবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ নম্বর গেটের সামনে ছাত্র পরিষদ এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা সমর্থকদের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটে। ওই রাতে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ভর্তি জখম ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদককে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার তিনি জামিন পান। অন্য দিকে জখম তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা পঙ্কজ সিংহের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করা এবং তাকে গ্রেফতার না করায় পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামে কংগ্রেস। গৌতম দেবের হাত থেকে দলীয় পতাকা নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন ছাত্র প্রতিনিধিরা। |