বেসমেন্টে স্টোররুম, রিপোর্ট দিল পুলিশ
ত বুধবার মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্রনগরে যে বেসরকারি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড হয়, তার বেসমেন্টে দু’টি স্টোররুম ছিল বলে রিপোর্ট দিল পুলিশ। তবে সেই ঘরে কী মজুত থাকত, সেগুলি দাহ্য কি না, তার কোনও উল্লেখ রিপোর্টে নেই। রবিবার মেদিনীপুর আদালতে এই রিপোর্ট জমা পড়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বুধবার রাতেই হাসপাতালের ৪ কর্তা পীষূষ পাল, অলোক ঘোষ, পার্থসারথি মণ্ডল ও মনোজ পতি’কে গ্রেফতার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে বিচারক অলোক ঘোষকে ৩ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ শেষে রবিবার ফের তাঁকে মেদিনীপুর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক এ বার এক দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আজ, সোমবার ৪ হাসপাতাল কর্তাকেই ফের আদালতে হাজির করানো হবে।
এ দিনই আদালতে পুলিশ রিপোর্ট জমা পড়ে। হাসপাতালে গিয়ে কী দেখা গিয়েছে, কী পাওয়া গিয়েছে রিপোর্টে তার উল্লেখ রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ওই সূত্র জানাচ্ছে, পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন শনিবার দুপুরে অলোক ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছন তদন্তকারী পুলিশ অফিসার। সঙ্গে ছিলেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দমকল দফতরের এক কর্তা ও কর্মীরা। অগ্নিকাণ্ডের পর হাসপাতাল ‘সিল’ করে দেওয়া হয়।
অগ্নিকাণ্ডের পর হাসপাতালে তদন্তে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
ওই দিন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ‘সিল’ খোলা হয়। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংগ্রহ ও পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পর ফের ‘সিল’ করা হয় হাসপাতাল। তদন্তে গিয়ে ঠিক কী কী দেখেছে পুলিশ? রিপোর্ট অনুযায়ী, হাসপাতালের বেসমেন্টে এখনও এক হাঁটু জল রয়েছে। চারদিকে কালো ছাই। ফলে, সব কিছু স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। বেসমেন্টে ছিল ওষুধের দোকান। দু’টি স্টোররুমও রয়েছে। হাসপাতালে ১৭টি ফায়ার এক্সটিংগুইশার সিলিন্ডার ছিল বলেও উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে।
অগ্নিকাণ্ডের পর হাসপাতালের অন্যতম মালিক পীযূষ পাল ‘অন্তর্ঘাতে’র আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন। সেই আশঙ্কার প্রতি ‘প্রচ্ছন্ন সমর্থন’ রয়েছে পুলিশ রিপোর্টেও। সেখানে বলা হয়েছে, এটি দুর্ঘটনা কি না, এখনই বলা যাচ্ছে না। ফরেন্সিক তদন্তেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। পুলিশ সূত্রে খবর, আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখতে শীঘ্রই তদন্তে আসবে ফরেন্সিক দল। অভিযুক্ত অলোক ঘোষের আইনজীবী প্রদীপ মুখোপাধ্যায় অবশ্য রবিবার আদালতের কাছে জামিনের আবেদন জানাননি। অন্য দিকে, সরকারি আইনজীবী সৈয়দ নাজিম হাবিবও অভিযুক্তকে ফের পুলিশ হেফাজতে চেয়ে আবেদন করেননি। পুলিশের বক্তব্য, এই ৩ দিনে তদন্ত এগিয়েছে। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক কুন্তল চট্টোপাধ্যায় অভিযুক্তকে ফের আজ, সোমবার আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দেন। অন্য তিন অভিযুক্তে রও আজ হাজিরার দিন রয়েছে। জানা গিয়েছে, চার হাসপাতাল কর্তার জন্যই জামিনের আবেদন জানানো হবে।
গত বুধবার মেগিনীপুরের এই সরকারি হাসপাতালের বেসমেন্টে আগুন লাগে। কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ছড়ায় আতঙ্ক। হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও সমস্যায় পড়েন রোগী ও তার পরিজনেরা। ঘটনাটি ‘লঘু’ করে দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। যদিও তা অস্বীকার করেছে সংশ্লিষ্ট দফতর। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সব বিধি মেনেই হাসপাতাল চলছিল। অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী প্রদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বেসমেন্টে হঠাৎ আগুন লাগে। এটি দুর্ঘটনা। সেখানে কর্তৃপক্ষের কী দোষ? আমাদের কাছে তো সব কাগজপত্রই রয়েছে। কবে কোন দফতরে চিঠি লিখে কী আবেদন করা হয়েছিল, তা-ও আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।” তবে বেসমেন্টে স্টোররুম কেন ছিল এবং সেখানে কী কী সরঞ্জাম রাখা থাকত, তার সদুত্তর মেলেনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.