|
|
|
|
ব্যাঙ্কে অনিয়ম, অভিযোগ |
অনির্বাণ রায় • জলপাইগুড়ি |
কাগজে কলমে ঋণ মঞ্জুর হয়েছে ৫৬ লক্ষ টাকা। বাস্তবে দেওয়া হয়েছে তিন কোটিরও বেশি টাকা। দার্জিলিঙ জেলার এক ব্যবসায়ীকে বাণিজ্যিক কারণে দেওয়া ঋণের ক্ষেত্রে এমনই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল কো আপারেটিভ ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে। ঋণ দিতে হলে যে নথিপত্র ব্যাঙ্কে জমা রাখতে হয় তা না রেখেই শিলিগুড়ি লাগোয়া এলাকার আরও এক বাসিন্দাকে ঋণ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। জলপাইগুড়ি জেলার এক বাসিন্দাকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সম্পত্তি গচ্ছিতও রাখেননি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। মোট চারটে ক্ষেত্রে ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ খুঁজে পেয়েছে রাজ্য সমবায় দফতর। বিধি ভেঙে ঋণ দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল কো অপারেটিভ ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতি কেন ভেঙে দেওয়া হবে না জানতে চেয়ে শোকজ করেছে রাজ্য সমবায় দফতর। সমবায় দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চারটি ক্ষেত্রে মোট ঋণের পরিমান চার কোটি টাকারও বেশি। প্রতিটি ঋণ অকৃষি। বাণিজ্যিক ভবন তৈরি, নগদ ঋণ, ব্যাক্তিগত ঋণ হিসাবেই সেগুলি ব্যাঙ্কের নথিতে দেখানো হয়েছে। রাজ্যে ক্ষমতা পরিবর্তনের পরে জলপাইগুড়ির বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা স্টেন্ট্রাল কো অপারেটিভ ব্যাঙ্কের কয়েকটি ঋণ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ জানিয়েছিলেন রাজ্য সমবায় কর্তৃপক্ষকে। জলপাইগুড়ির বিধায়ক বলেন, “সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের ঋণ সংক্রান্ত বিষয়ে অনিয়মের বিভিন্ন অভিযোগ আমার কাছে আসে। ওই অভিযোগগুলিকে যথাযথ স্থানে পৌঁছে দিই। এবার আইন আইনের পথে চলবে।” গত বছর রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী হায়দার আজিজ সফি জলপাইগুড়িতে গিয়ে সেন্ট্রাল কো অপারেটিভ ব্যাঙ্ক পরিদর্শন করেন। সে সময় তিনি নিজেও ঋণ বিলির ক্ষেত্রে অনিয়মের বিষয়ে ব্যাঙ্ক কতৃপক্ষের কাছে খোঁজখবর করেন। সুখবিলাসবাবুর অভিযোগ পেয়ে রাজ্য সমবায় দফতরের প্রতিনিধিদল অভিযোগগুলির তদন্ত করতে জলপাইগুড়িতে যান। তদন্তকারী দলের কাছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ‘পদ্ধতিগত ভুল’ এবং ‘পরবর্তীতে শুধরে নেওয়া হয়েছে,’ বলে জবাব দেন। ব্যাঙ্কের ওই জবাব ‘সন্তোষজনক’ মনে না করায় কেন ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতিকে ভেঙে দেওয়া হবে না তার জবাব দিতে কলকাতায় ডেকে পাঠানো হয় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যানকে। সমবায় মন্ত্রী হায়দার আজিজ সফির সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “বিষয়টি একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। এই মুহূর্তে এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়।” সম্প্রতি ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান গোবিন্দ রায় কলকাতায় গিয়ে রাজ্য সমবায় দফতরে জবাব পেশ করেন। গোবিন্দবাবু বলেন, “কলকাতায় এসে ব্যাঙ্কের যাবতীয় জবাব জমা দিয়েছি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যে অভিযোগগুলি হয়েছে তা আমার চেয়ারম্যান পদে বসার আগে। একটি ঋণ নিয়ে হাইকোর্টে মামলাও চলছে। চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পরে একটি ১০ লক্ষ টাকার ঋণ নিয়ে অভিযোগ হয়েছিল। সেটি ব্যাঙ্কের এক কর্মীর ভুল। তার জন্য তাঁকে শাস্তিও দেওয়া হচ্ছে। ব্যাঙ্কের ভুমিকা স্বচ্ছ। সব প্রমাণ কলকাতায় জমা দিয়েছি।” |
|
|
|
|
|