টুর্নামেন্টের গোড়াতেই বিপর্যয় ও বিদায়।
গত বার এই সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলা। আর এ বার ছুটি হয়ে গেল কোয়ার্টার ফাইনালেই। বরোদার কাছে ৪ উইকেটে হেরে। গত বারের চ্যাম্পিয়ন বলে এ বার বাংলাকে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে হয়নি। সরাসরি শেষ চারের যুদ্ধে নেমেছিলেন মনোজ তিওয়ারি-লক্ষ্মীরতন শুক্লরা। কিন্তু টিমের ব্যাটিং বিপর্যয় ফেভারিটদের যাবতীয় অঙ্ক ওলট-পালট করে দিল।
তিরিশের গণ্ডি একজনও পেরোননি। সর্বোচ্চ লক্ষ্মীর ২৭। টিম সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা অবশ্য খেয়েছিল ম্যাচে নামার চব্বিশ ঘণ্টা আগেই। অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ার খবরে। কিন্তু সেই ধাক্কা সামলে দেওয়ার বদলে বাংলার ব্যাটসম্যানরা আরও ডুবিয়ে দিলেন। সদ্য এশিয়া কাপ ফেরত মনোজ তিওয়ারি ব্যর্থ (২৫ বলে ১৯)। ওপেন করতে নেমে সুবিধে করতে পারেননি ঋদ্ধিমান সাহাও (১২ বলে ১০)। মন্দের ভাল শুধু লক্ষ্মী এবং অনুষ্টুপ মজুমদার (২০)। কিন্তু তাতে আর জেতা যায়? রান তো সাকূল্যে শেষ পর্যন্ত উঠল ১১১। আর বাংলার বিরুদ্ধে বাজি জিততে বরোদার পাঠান ভাইদেরও লাগল না। ইউসুফ-ইরফানকে না নামিয়েও ম্যাচ বরোদা জিতে গেল হাসতে-হাসতে। চার বল হাতে রেখে। সৌজন্যেঅম্বাতি রায়াডুর চমৎকার হাফসেঞ্চুরি (৫৬ বলে ৬৬)।
একে ব্যাটিং বিপর্যয়। তার মধ্যে ভুল বোলিং কম্বিনেশনও ম্যাচে ভোগাল বাংলাকে। টিমের মধ্যে থেকেই প্রশ্ন উঠছে, বান্দ্রা কুর্লা কমপ্লেক্সের সবুজ উইকেট দেখেও কী ভাবে দুই স্পিনারের কথা ভাবল বাংলা টিম ম্যানেজমেন্ট? বলা হচ্ছে, সঞ্জীব স্যান্যালকে অনায়াসে নামিয়ে দেওয়া যেত ম্যাচে। বঙ্গ পেসারদের পারফরম্যান্স তো ম্যাচে মোটেই খারাপ নয়। সামি আহমেদ মাত্র ১৪ রান খরচ করে তিনটে উইকেট তুললেন। লক্ষ্মীও যথেষ্ট আঁটোসাঁটো (১-১৭)। দিন্দাও উইকেট তুলেছেন (১-২১)। আর সেখানে দুই স্পিনারের হিসেব? ইরেশ সাক্সেনা ৪ ওভারে দিলেন ২৫। উইকেট একটা। অর্ণব নন্দীর দশা আরও খারাপ। ২ ওভারে দিলেন ২০, কোনও উইকেট নেই।
টিমের পারফরম্যান্সের বহর দেখে রীতিমতো বিষণ্ণ শোনাচ্ছিল লক্ষ্মীর গলা। দিন কয়েক আগে বাংলাকে এক দিনের বিজয় হাজারে ট্রফিতে ভারতসেরা করেছিলেন। আর এ দিন দেখতে হল বাংলার ভরাডুবি। মুম্বই থেকে ফোনে বলছিলেন, “টিমটা আসলে তিন বা চার জনের উপর দাঁড়িয়ে পড়ছে। কোনও দিন মনোজ, দিন্দা ম্যাচ বার করছে। কোনও দিন ঋদ্ধি বা আমি। কিন্তু বাকিদেরও তো এ বার দায়িত্ব নেওয়া উচিত। নির্বাচকরা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সবাইকেই সুযোগ দিচ্ছেন। সিএবি এত সুবিধা দিচ্ছে আমাদের। ক্রিকেটারদের তো নিজেদের প্রশ্ন করা উচিত যে, বদলে আমরা কী দিচ্ছি বাংলাকে?”
|
সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলা ১১১-৭ (লক্ষ্মী ২৭, মনোজ ১৯, অনুষ্টুপ ২০, বহোরা ২-১৮), বরোদা ১১৪-৬ (রায়াডু ৬৬, সামি ৩-১৪, দিন্দা ১-২১, লক্ষ্মী ১-১৭)। |