|
|
|
|
কামড়ে জখম পাঁচ |
কামাখ্যা মন্দিরের কাছে চিতাবাঘকে পিটিয়ে হত্যা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
ফের চিতাবাঘের হানা গুয়াহাটি শহরে। এ বার ঘটনাস্থল কামাখ্যা মন্দিরের প্রবেশপথ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, আজ বেলা একটা নাগাদ আদিমগিরি এলাকায় পূর্ণবয়স্ক এক চিতাবাঘের দেখা মেলে। চিতাবাঘের আঁচড় ও কামড়ে জখম হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। তার মধ্যে ভবেন রায় নামে একজনের আঘাত গুরুতর। এরপর এলাকার লোকজন রড, বাঁশ, দা, লাঠি নিয়ে চিতাবাঘের সন্ধানে বের হন। আদিমগিরির ঢালে, চারদিকের ঝোপে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। আগুনে দিশাহারা চিতাবাঘটি পালানোর পথ পায়নি। তারপর বনের প্রাণীটিকে পিটিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। অথচ অদূরেই থানা। কোনও পুলিশকর্মী বা গুয়াহাটি চিড়িয়াখানার চিকিৎসক-বনকর্মীরা বাঘ বাঁচাতে আসেননি। পরে, বিকেলে, আরও একটি চিতাবাঘকে এলাকায় দেখা যায়। তার সন্ধানে তল্লাশি চলছে।
কামাখ্যাগেট এলাকার বাসিন্দা ভবেন রায় জানান, তাঁদের একটি ছাগলকে চিতাবাঘটি প্রথমে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল। ভবেনবাবু ও তাঁর ছেলের তাড়া খেয়ে চিতাবাঘটি ঝোপে লুকিয়ে পড়ে। পরে পিছন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ভবেনবাবুর মাথায় কামড় বসায় সে। তাঁর হাতও গুরুতরভাবে জখম হয়েছে। ভবেনবাবুকে বাঁচাতে গিয়ে, দীপ স্বর্গীয়ারি, দুর্গা রায়, রাজীব বর্মণ ও কিরণচন্দ্র দাসও চিতাবাঘের আঁচড়ে-কামড়ে ক্ষতবিক্ষত হন। প্রাণ বাঁচাতে চিতাবাঘের মুখের সামনে হাত নিয়ে গিয়েছিলেন কিরণবাবু। বাঘের কামড়ে তাঁর বুড়ো আঙুলটিই বাদ চলে যায়। জখম ব্যক্তিরা গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। এদের মধ্যে, ভবেনবাবুর আঘাত গুরুতর।
চিড়িয়াখানার চিকিৎসক এম এল স্মিথ জানান, তাঁরা সন্ধ্যা ৬টায় খবর পান। ততক্ষণে বাঘটি মারা গিয়েছে। পরে, এলাকায় আরও চিতাবাঘ বেরনোর সংবাদ পেয়ে চিড়িয়াখানার চিকিৎসকেরা ঘটনাস্থলে যান। সন্ধ্যার পর নিহত চিতাবাঘের দেহটি চিড়িয়াখানায় আনা হয়। কাল খানাপাড়া পশু হাসপাতালে তার ময়না তদন্ত হবে।
গত দুই মাসে, বার দশেক শহরে চিতাবাঘ হানা দিয়েছে। উদ্ধার করা গিয়েছে পাঁচটিকে। মারা গিয়েছে চারটি। চিতাবাঘের হানায় জখম হয়েছেন ২০ জন। এদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যের ডিব্রুগড় ও বাক্সা জেলায় চিতাবাঘ মেরে খেয়ে ফেলার মতো ঘটনাও ঘটেছে। কামরূপ জেলাতে চিতাবাঘ মেরে কুপিয়ে ফালা ফালা করে দেন গ্রামবাসীরা। উজানি অসমেও গত দুই মাসে তিনটি চিতাবাঘ মারা যায়। উদ্ধার হয় চারটি। চিতাবাঘ ও মানুষের সংঘাত এড়াতে রাজ্যে বিশেষ কমিটি গড়া হলেও দ্রুত নগরায়ণের ফলে শহরের পাহাড়-জঙ্গল কমতে থাকায় বারবার চিতাবাঘ লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। আজকের ঘটনায় স্থানীয় মানুষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করবে বলে বন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। |
|
|
|
|
|