উলুবেড়িয়ায় লিগ্যাল এড ক্লিনিক
আইনের কাজে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা
ছোটখাট আইনি সমস্যা সমাধানে এ বার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদেরও প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে লাগানো হবে।
শনিবার উলুবেড়িয়ায় এসেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তথা রাজ্য আইনি সহায়তা কর্তৃপক্ষের কার্যকরী সভাপতি পিনাকী ঘোষ। রাজ্যের প্রথম ‘লিগ্যাল এড ক্লিনিক’-এর উদ্বোধন করে বিচারপতি বলেন, “গ্রামাঞ্চলের বহু মানুষ এখনও পর্যন্ত আইনের সঠিক প্রয়োগ কী ভাবে করতে হয় সে বিষয়ে প্রায় কিছুই জানেন না। ফলে অতি সাধারণ বিষয়েও নিজেদের মধ্যে বিবাদ হলে তাঁরা সটান চলে আসছেন হাইকোর্টে মামলা ঠুকতে।” বিচারপতি বলেন, “আদালত পর্যন্ত না-এসে বহু সমস্যা আইন মোতাবেক নিজেদের মধ্যে বসেই মিটিয়ে নেওয়া যায়। গ্রামাঞ্চলের মানুষকে আইনি পরামর্শ দেওয়ার জন্য অন্যান্যদের সঙ্গে স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ পাওয়ার পরে তাঁরা ‘প্যারা-লিগ্যাল ভলেন্টিয়ার’ হিসাবে কাজ করবেন। ছোটখাটো আইনি সমস্যা মেটাতে তাঁরা গ্রামবাসীদের সাহায্য করবেন। সমস্যা জটিল হলে পরামর্শ দেবেন আইনজ্ঞেরা।”
নিজস্ব চিত্র।
উলুবেড়িয়া ২ ব্লক কার্যালয়ের দোতলার একটি ঘরে খোলা হয়েছে লিগ্যাল এড ক্লিনিকটি। হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে এখানে সব সময় থাকবেন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত প্যারা-লিগ্যাল ভলেন্টিয়ারেরা। গ্রামাঞ্চলের মানুষকে বিশেষ করে ছোটখাটো সমস্যার সমাধানে প্রাথমিক আইনি সহায়তা দেবেন তাঁরা। সমস্যা জটিল হলে তা পাঠানো হবে আইনজীবীদের কাছে। উলুবেড়িয়া মহকুমা আইনি সহায়তা সমিতিই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা-সহ অন্যান্যদের আইনি প্রশিক্ষণ দেবে। শুধু তাই নয়, যে সব আইনজীবী ‘ক্লিনিকের’ সঙ্গে যুক্ত থাকবেন তাঁদের তালিকাও তৈরি করবে তারা। ক্লিনিকের সঙ্গে যুক্ত প্যারা-লিগ্যাল ভলেন্টিয়ার এবং আইনজীবীরা দৈনিক ভাতা পাবেন।
পিনাকীবাবু বলেন, “জাতীয় আইনি সহায়তা কর্তৃপক্ষ ২০১০ সালে আইন করে দেশের প্রতিটি গ্রামে একটি করে লিগ্যাল এড ক্লিনিক তৈরি করার কথা বলেছে। কিন্তু অর্থ এবং পরিকাঠামোগত অসুবিধার জন্য প্রতিটি গ্রামে এখনও পর্যন্ত প্রকল্পটি চালু করা যায়নি। আপাতত ঠিক হয়েছে প্রশাসন যদি এগিয়ে আসে তা হলে রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে একটি করে লিগ্যাল এড ক্লিনিক চালু করা হবে। হাওড়া জেলা প্রশাসন এগিয়ে আসায় উলুবেড়িয়ায় রাজ্যের প্রথম লিগ্যাল এড ক্লিনিক চালু করা হল।” হাওড়ার জেলাশাসক সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ বলেন, “হাওড়ার বাকি ১৩টি ব্লকেও খুব শীঘ্রই এই ক্লিনিক চালু করা হবে।” হাওড়া জেলায় শিশু এবং মহিলা পাচার বাড়ছে। এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জেলাশাসক বলেন, “বাইরে কাজ দেওয়ার নাম করে অনেকে শিশু ও মহিলাদের নিয়ে গিয়ে পাচার করে দেয়। শিশু ও মহিলাদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আইনি ব্যবস্থা কী আছে তা না-জেনেই অবিভাবকেরা পাচারকারীদের ফাঁদে পা দেন। কেউ বাইরে শিশু ও মহিলাদের নিয়ে যেতে চাইলে অভিভাবকেরা লিগ্যাল এড ক্লিনিকে এসে আইনগত সুরক্ষা কী ভাবে করা যায়, সে বিষয়ে পরামর্শ নিয়ে যেতে পারেন।” শুধু আইনি পরিষেবাই নয়, জন্ম ও মৃত্যুর শংসাপত্রের জন্য কোথায় কী ভাবে আবেদন করতে হবে, চাকরির দরখাস্ত কী ভাবে করতে হবে, রেশন কার্ড কী ভাবে পাওয়া যাবে সেই সব দৈনন্দিন সমস্যার সমাধানের জন্যও গ্রামবাসীদের পরামর্শ দেওয়া হবে লিগ্যাল এড ক্লিনিক থেকে। সব পরিষেবাই পাওয়া যাবে বিনামূল্যে। আইনি পরামর্শ পাওয়ার জন্যও মহিলাদের কোনও মূল্য দিতে হবে না। আবার ৫০ হাজার টাকার নীচে যে সব পুরুষ বার্ষিক আয় করেন তাঁরা সকলেই লিগ্যাল এড ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে আইনি পরামর্শ পেতে পারবেন। অনুষ্ঠানে হাজির উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক নির্মল মাজি বলেন, “উলুবেড়িয়ার লিগ্যাল এড ক্লিনিকটিকে মডেল হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। যাতে রাজ্যের অন্যান্য ব্লকগুলি এটি চালু করতে এগিয়ে আসে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.