মণিপুরের জন্য নতুন রাস্তা খুলছে। জিরিবাম থেকে আরও ১২ কিলোমিটার এগিয়েছে রেললাইন। শুক্রবার ধলাখাল পর্যন্ত পরীক্ষামূলক ভাবে একটি ইঞ্জিন চালিয়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। স্বাধীনতার ছয় দশক পরে জীবনে এই প্রথম ট্রেনের ইঞ্জিন দেখলেন অন্দর মণিপুরের গ্রামীণ মানুষজন। তাঁদের চোখে মুখে ছিল মুগ্ধতার আবেশ।
এত কাল মণিপুরে মাত্র দেড় কিলোমিটার রেললাইন এবং একটিই রেলস্টেশন ছিল জিরিবাম। সেখান থেকে আরও ১২ কিলোমিটার এগিয়ে যাওয়ায় শুধু ওই অংশের মানুষজনই নন, রাজ্যবাসী মাত্রই খুশি। কারণ, সড়ক অবরোধে প্রায়ই বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয় মণিপুরকে। বাইরের সঙ্গে যোগাযোগের দুটি মাত্র জাতীয় সড়ক। নাগালিম আন্দোলনের সমর্থকেরা মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন দাবিতে দুই সড়কেই একযোগে অবরোধ গড়ে তোলেন। স্থলবেষ্টিত মণিপুরে তখন জিনিসপত্রের দাম মাত্রা ছাড়ায়। বিশেষ করে ওষুধপত্র, রান্নার গ্যাস তিন গুণ দাম দিয়েও মেলে না। সাধারণ মানুষ আশাবাদী, রেললাইন ইম্ফল পর্যন্ত সম্প্রসারিত হলে এই অবস্থা থেকে রেহাই মিলবে।
২০০৪ সালে জিরিবাম থেকে টুপুল পর্যন্ত ৮৪ কিলোমিটার রেললাইনের শিলান্যাস হয়েছিল। তখন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবকে নিয়ে জিরিবাম আসেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। তিনি একে জাতীয় প্রকল্প হিসেবে ঘোষণা করেন। রেলকর্তারা বলেন, ভৌগোলিক অবস্থান এবং জঙ্গি যন্ত্রণার জন্য ঠিক ভাবে কাজ করা যায়নি। তবু তাঁদের আশা, ২০১৪ সালের মধ্যে টুপুল পর্যন্ত ট্রেন চালানো সম্ভব হবে। একই সঙ্গে কাজে হাত দেওয়া হয়েছে রাজধানী ইম্ফল পর্যন্ত লাইন সম্প্রসারণের। এর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০১৬ সাল।
ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার এস পি দেশমুখ অবশ্য এই রেললাইনের কাজ এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সহযোগিতার কথা গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, জঙ্গি যন্ত্রণা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে। এই ভাবে চলতে থাকলে নির্দিষ্ট সময়েই মণিপুরের রাজধানীকে রেল মানচিত্রে জুড়ে দেওয়া যাবে।
অপহৃতের সন্ধান নেই। করিমগঞ্জ জেলার দুল্লভছড়া থেকে মনোরঞ্জন দাস নামে অবসরপ্রাপ্ত এক ব্যাঙ্ককর্মীকে তুলে নিয়ে গিয়েছে জঙ্গিরা। পুলিশ দু’দিনেও তাঁর সন্ধান বার করতে পারেনি। বরং পুলিশের অভিযান চলাকালেই জঙ্গলে বাঁশ কাটতে গিয়ে জঙ্গিদের হাতে আক্রান্ত হন সুব্রত নাথ নামে এক দিনমজুর। গলায় দায়ের কোপ বসানোয় তিনি এখন শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশের সার্কল ইন্সপেক্টর কান্তিভূষণ দেব জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে আটটায় জঙ্গিরা দুল্লভছড়ার গম্ভীরা কলোনির অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মী মনোরঞ্জনবাবুর বাড়িতে হানা দেয়। বন্দুক দেখিয়ে তাঁকে তুলে নিয়ে যায় তারা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে কে গুপ্তর নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী তল্লাশিতে নামে। এখনও অপহৃত বা অপহরণকারীদের সন্ধান মেলেনি। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’ জনকে থানায় আনা হয়েছে। কান্তিবাবুর ধারণা, অপহরণকারীরা ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক লিবারেশন আর্মি (উদলা) নামে রিয়াং জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। তবে এখনও কেউ এই ঘটনার দায় স্বীকার করেনি। |