প্রতিনিয়ত যানজটে নাকাল দুবরাজপুর শহরকে কী ভাবে এই সমস্যা থেকে রেহাই দেওয়া যায় তার উত্তর খুঁজতে বৈঠক করল প্রশাসন। রবিবার সকালে দুবরাজপুর ধর্মশালায় হওয়া ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দুবরাজপুরের বিডিও, যুগ্ম বিডিও, পুরপ্রধান, ওসি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্য, নাগরিক সমিতির সদস্য, ব্যবসায়ী এবং বাস ও রিকসা ইউনিয়নের সদস্যরা। মূলত দুবরাজপুর থানার উদ্যোগে হওয়া এই বৈঠকে সে ভাবে সমাধান সূত্র না মিললেও বিভিন্ন প্রস্তাব উঠে এসেছে। দুবরাজপুরের বিডিও গোবিন্দ দত্ত বলেন, “একটি কোর কমিটি গঠন করে বৈঠকে উঠে আসা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং কার্যকরি করা হবে।” তবে যাই সিদ্ধান্ত হোক সেটা দিয়ে দুবরাজপুর শহরকে যানজট মুক্ত করার স্থায়ী সমাধান নয়। স্থায়ী সমাধান করতে হলে বাইপাস তৈরি করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সকলে। |
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত ব্যবসা কেন্দ্রিক প্রাচীন এ শহর প্রথম থেকেই অপরিকল্পিত এবং ছোট। রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক (২০০৬ সালের আগে পর্যন্ত রাজ্য সড়ক ছিল) এবং রাজনগর-বোলপুর এই দু’টি রাস্তা এই শহরের মাঝ বরাবর গিয়েছে। বছরের পর বছর ধরে এই দু’টি রাস্তা ঘেঁষে তৈরি হয়েছে বাড়ি, দোকান-পাট। অনেক ক্ষেত্রেই সেগুলি বেআইনি ভাবে ও রাস্তা অধিগ্রহণ করে। প্রায় সাড়ে তিন দশক আগে দুবরাজপুর পুরসভা তৈরি হলেও উপযুক্ত ‘নজরদারি’র অভাবে বেআইনি নির্মাণে ছেদ পড়েনি। ফলে রাস্তাগুলি কোথাও কোথাও মাত্র ১৫ ফুট চওড়া হয়ে গিয়েছে। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যানবাহন।
সমস্যার শুরু সেখান থেকেই। বর্তমানে যানজটের সমস্যা আরও বেড়েছে। তার অন্যতম কারণ, সম্প্রতি ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ককে দুবরাজপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণ ও সংস্কার চলছে। ফলে ওই রাস্তা খারাপ থাকায় যে সব বড় গাড়ি দুর্গাপুর, পানাগড় ঘুরে যেত সেগুলি দুবরাজপুরের উপর দিয়ে যাতায়াত করছে। ফলে প্রতিনিয়ত যানজটে আটকে থেকে দুর্ভোগে পড়ছেন স্কুল পড়ুয়া, রোগী থেকে নিত্যযাত্রী এবং সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি অনিয়মিত গাড়ি পার্কিং, মানুষের সচেতনতার অভাব এবং এই পথ দিয়ে চলাচলকারী বিভিন্ন বাসের মালপত্র ওঠানামা করানোর প্রবণতাকেও দায়ী করেছেন এলাকার বাসিন্দারা।
পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে বলেন, “শহরের যানযট এড়াতে বাইপাস তৈরির দাবি দীর্ঘদিনের। ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকেও এ ব্যপারে বহু বার বলা হয়েছে। সাময়িক ভাবে সমস্যা সমাধানে কিছু পদক্ষেপ অবশ্যই নেব।” দুবরাজপুরের ওসি সৌম দত্ত বলেন, “দুবরাজপুরের থানা ও আদালত সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড, যেখানে যানজট সবচেয়ে বেশি সেখানে বিভিন্ন বাসগুলিকে মালপত্র ওঠা-নামা করানোর জন্য দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে দেওয়া হবে না। পাশাপাশি দিনের সবচেয়ে ব্যস্ত সময়ে বিশেষত বেলা ১১টা পর্যন্ত মাল বোঝাই লরি বা ট্রাককে রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে মাল খালি করার অনুমতি দেওয়া হবে না।” |