কামানতলায় ফিরল কামান।
ফারাক একটাই। এটি আসল কামানটির অনুকৃতি। বর্ধমান শহরে সর্বমঙ্গলাপাড়ায় আবার দেখা যাবে রাজাদের আমলের কামানটিকে।
বর্ধমানে সর্বমঙ্গলা মন্দিরের কাছেই দুর্গাপুজোর অষ্টমী আর নবমীর সন্ধিক্ষণ ঘোষণা করত কামানটি। ঢালাই লোহার তৈরি ছিল সেই কামান। বছর পনেরো আগে এমনই এক রাতে ফেটে যায় কামানটি। লোহার টুকরো শরীরে বিঁধে মারা গিয়েছিলেন এক মহিলা-সহ দু’জন। আহত হয়েছিলেন শতাধিক। সম্প্রতি বর্ধমান পুরসভার উদ্যোগে সেখানেই বসানো হল ফাইবারের ঢালাই করা একটি ‘রেপ্লিকা-কামান’। সেটি তৈরি করেছেন বর্ধমানেরই শিল্পী সিদ্ধার্থ পাল। আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই কামানের ‘উদ্বোধন’ এখনও হয়নি।
বিস্ফোরণের জেরে হারিয়ে যাওয়া ওই কামান নিয়ে অনেক প্রচলিত গল্প রয়েছে। |
শোনা যায়, ১৭৪১ খ্রিস্টাব্দে বর্গি হামলার সময়ে কামানটিকে মন্দির রক্ষার জন্য বসানো হয়েছিল। তবে কোন রাজা তা বসিয়েছিলেন, তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। সর্বমঙ্গলা মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা কে, তা নিয়েও স্থানীয় ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। নীরোদবরণ সরকারের মতে, এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন রাজা কীর্তিচাঁদ রাই। বর্ধমানের সব থেকে পুরনো তোরণ, কাঞ্চননগরের বারোদুয়ারিও তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন। আবার প্রয়াত সুধীরচন্দ্র দাঁর মত ছিল, মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা রাজা চিত্রসেন। শহরের আর এক ইতিহাসবিদ প্রয়াত আব্দুুল গনি খানের লেখা অনুযায়ী অবশ্য, এই মন্দির রাজা মহতাবচন্দের সময়ে নির্মিত।
বর্ধমানের পুরপিতা পরিষদ সদস্য অপূর্ব দাস বলেন, “ওই কামানটির অনুকৃতি তৈরি করার ইচ্ছে ছিল বর্ধমানের শিল্পী হরিহর দে-র। কিন্তু তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তা আর করতে পারেননি। তবে কামানের একটি ছবি তিনি এঁকে দিয়ে গিয়েছিলেন। সেটা দেখেই কামানটি তৈরি করেন সিদ্ধার্থবাবু। আমরা একটি বেদি তৈরি করে কামানটি বসিয়েছি।” তবে কামানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন কবে হবে, তা তিনি বলতে পারেননি। |