নিজস্ব সংবাদদাতা • পাণ্ডবেশ্বর |
তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে গ্রেফতার হলেন দলেরই এক কর্মী। জামুড়িয়া থানার অন্তর্গত পাণ্ডবেশ্বরের খোট্টাডিহি এলাকার এই ঘটনায় দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার দুপুর ২টো নাগাদ। জামুড়িয়া ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি সিদ্ধার্থ রানা অভিযোগ করেন, ওই সময়ে আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত কয়লা খাদান শ্রমিক কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হরেরাম সিংহের গাড়ির চালক এলাকার একটি খোলামুখ খনির নিজস্ব পাম্প থেকে গাড়িতে তেল ভরছিলেন, যা বৈধ নয়। স্থানীয় তৃণমূল কর্মী তথা খনির ঠিকাদার সঞ্জিত মণ্ডল তার ছবি তুলে রাখার চেষ্টা করছিলেন। সে কথা চাউর হতেই দলেরই আর এক পক্ষের কিছু কর্মী-সমর্থক সেখানে জড়ো হন। দু’তরফের লোকজনের মধ্যে বচসা থেকে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। খবর পেয়ে হরেরামবাবু ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তিনি দু’পক্ষকে নিরস্ত করে গাড়ি নিয়ে চলে যান। কিন্তু তার পরে ফের দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়।
সিদ্ধার্থবাবুর অভিযোগ, “বিধানসভা ভোটের পরে সিপিএম ছেড়ে তৃণমূল যোগ দেওয়া উত্তম মণ্ডল, গব্বর সিংহেরা সঞ্জিতকে মারধর করেছে। অন্য খনিকর্মীরা বাধা দিতে গেলে তাঁদেরও ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেওয়া হয়। সঞ্জিতকে বাঁচাতে গিয়ে প্রহৃত হয়েছেন আমাদের কর্মী জগবন্ধু ঘোষ। বিষয়টি দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছি।”
শনিবার উত্তম মণ্ডলদের দায়ের করা অভিযোগে ভিত্তিতে পুলিশ সঞ্জিতবাবুকে গ্রেফতার করে। সিদ্ধার্থবাবুর দাবি, “পুলিশকে প্রকৃত ঘটনার কথা জানানো সত্ত্বেও আগ্নেয়াস্ত্র রাখার মিথ্যা অভিযোগে সঞ্জিতকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” রবিবার জগবন্ধু ঘোষ পাণ্ডবেশ্বর থানায় উত্তম মণ্ডল, গব্বর সিংহ-সহ জনা দশেকের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছেন।
তাঁর অনুগামীরা তাণ্ডব চালিয়েছেন, এই অভিযোগ অবশ্য হরেরামবাবু মানতে চাননি। তিনি বলেন, “খোট্টাডিহি খোলামুখ খনিতে আমাদের সংগঠনের কার্যালয়ে বৈঠক করছিলাম। গাড়ি বাইরে রাখা ছিল। তাই তেল ভরার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।” তাঁর দাবি, ঠিকাদারির কাজ পাওয়া নিয়ে এই খনিতে কোন্দল লেগেই রয়েছে। তিনি বলেন, “এ দিন সেই রকমই দু’পক্ষের মধ্যে বচসা থেকে বিবাদ শুরু হয়। আমি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে এসে তাঁদের বলি, এমন ঘটতে থাকলে দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তার পরে বিবাদ মিটিয়ে বাড়ি চলে আসি।” হরেরামবাবু জানান, উত্তম মণ্ডল দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও তাঁদের সংগঠনের শাখা সম্পাদক।
পুলিশ জানায়, অভিযোগের ভিত্তিতে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। |