|
|
|
|
অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর হল ছাত্র পরিষদ নেতার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিষদ নেতা তথা ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক রোনাল্ড দে-কে অন্তর্বর্তী জামিন দিল আদালত। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক শিবাশিস সরকার ওই আদেশ দেন। তবে রোনাল্ডকে সপ্তাহে একবার করে মামলার তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে দেখা করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
এ দিন বিকেলে রোনাল্ডকে শিলিগুড়ি জেল থেকে ছাড়া হয়। তাঁকে ফুলের মালা পরিয়ে দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক শঙ্কর মালাকারের নেতৃত্বে বিজয় মিছিল হয়। পরে শঙ্করবাবু অভিযোগ করেন, “উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের নির্দেশেই পুলিশ পক্ষপাতিত্ব করে রোনাল্ডের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা করেছে। উত্তরবঙ্গের সব কংগ্রেস বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গিয়ে গৌতমবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাবেন।” পাশাপাশি, ওই মারপিটের ঘটনায় রোনাল্ড যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, সেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা পঙ্কজ সিংহের গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। |
|
জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর রোনাল্ড দে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী অবশ্য দাবি করেছেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কংগ্রেস মিথ্যে অভিযোগ সামনে রেখে আন্দোলনের চেষ্টা করছে। মন্ত্রী বলেন, “আইন আইনের পথে চলছে। বিষয়টি বিচারাধীন। তা নিয়ে আন্দোলন করে বিচার ব্যবস্থার উপরে চাপ তৈরির কৌশল নেওয়া ঠিক নয়।” শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি জানান, অভিযুক্ত পঙ্কজ সিংহ পুলিশি নজরদারিতেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সুস্থ হলেই তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত ১৮ মার্চ মাটিগাড়া থানা এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ওই মারপিটের ঘটনা ঘটে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা পঙ্কজ অভিযোগ করেন, তাঁর উপরে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা হয়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ রোনাল্ডকে গ্রেফতার করে। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৪৮, ৩২৬, ৩০৭ এবং ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের হয়। রোনাল্ডের জামিনের আর্জি প্রথমে নামঞ্জুর হয়ে যায়। কিন্তু, পঙ্কজকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি। উপরন্তু, পঙ্কজের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা হওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে সোমবার থেকে লাগাতার মিছিল, বিক্ষোভ, অবস্থান করে কংগ্রেস। বুধবার পুলিশের কড়া সমালোচনা করে কংগ্রেসের পাশে দাঁড়ায় সিপিএমও।
এ দিন ফের আদালতে জামিনের আবেদন জানানো হয়। রোনাল্ডের আইনজীবী বলেন, “ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় কোপ মারার অভিযোগ করা হলেও মেডিক্যাল রিপোর্টে মাথায় কোনও ক্ষতের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। মামলার প্রত্যক্ষদর্শীরাও এই ধরনের কোনও হামলার কথা বলেনি।” সরকারি আইনজীবী পীযূষ ঘোষ অন্তর্বর্তী জামিনের বিরোধিতা করেন।
এ দিন আদালতে জামিনের আবেদনের শুনানির সময়ে দার্জিলিং জেলা ল’ইয়ার্স কংগ্রেসের আইনজীবীরা ছিলেন। পরে ল’ইয়ার্স কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ওই নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নন। তা ছাড়া তিনি র্যাগিং সংক্রান্ত একটি মামলায় অভিযুক্ত। গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি মাটিগাড়া থানায় তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়েছে (কেস নম্বর ১৮৭/১১)। সরকারি আইনজীবী বলেন, “শুনানিতে পঙ্কজের বিরুদ্ধে এই ধরনের কোনও আলোচনা হয়নি। তাই অভিযোগটিকে গুরুত্ব দিচ্ছি না।” |
|
|
|
|
|