অভিযুক্ত অধ্যক্ষ, তৃণমূল নেতা
বিধিভঙ্গের তদন্তে গিয়ে কলেজে ‘নিগৃহীত’ বিডিও
লেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ ওঠায় সরেজমিন তদন্তে গিয়েছিলেন বিডিও। তাঁকে গালিগালাজ করে, কার্যত ধাক্কা দিয়ে কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার দুপুরে গোঘাটের অঘোরকামিনী মহাবিদ্যালয়ের ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষ ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা-সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ-প্রশাসনে অভিযোগ করেছেন গোঘাট ১-এর বিডিও জয়ন্ত মণ্ডল। আরামবাগের মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী বলেন, “বিডিও সরকারি কাজে গিয়েছিলেন। অধ্যক্ষ অনুচিত কাজ করেছেন। যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
অধ্যক্ষের পাল্টা দাবি, শিক্ষকদের ‘অপমান’ করেছেন জয়ন্তবাবু। বিডিওকে নিগ্রহের অভিযোগ মানতে চাননি অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাও। যদিও প্রশ্ন উঠেছে, কলেজের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কেন বহিরাগত রাজনৈতিক নেতা মাথা গলাবেন। এলাকার তৃণমূল নেতা মনোরঞ্জন পাল বলেন, “প্রশাসনিক কাজে দলীয় ভাবে হস্তক্ষেপ নিষিদ্ধ করা হলেও এমন ঘটনা কী ভাবে ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে।”
গোঘাটের কলেজ থেকে ‘তাড়িয়ে’ দেওয়া হচ্ছে বিডিওকে (বাঁ দিক থেকে প্রথম)।
বৃহস্পতিবার মোহন দাসের তোলা ছবি।
পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রের খবর, কলেজের কাছেই (প্রায় ২০ মিটার) বেঙ্গাই হাইস্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। এ দিন ছিল বৃত্তিমূলক শাখার পরীক্ষা। উচ্চ মাধ্যমিক চলাকালীন পরীক্ষাকেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি থাকে। কলেজ কর্তৃপক্ষ ‘নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে’ পরীক্ষাকেন্দ্রের পাশে কলেজ মাঠ সংস্কারের কাজ করাচ্ছেন বলে অভিযোগ জানান বেঙ্গাই হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মুকুন্দচন্দ্র পাল। বিডিও কলেজে গিয়ে দেখেন, মাঠে মাটি ফেলার কাজ চলছে। লোকের ভিড়ে এলাকা সরগরম। পুলিশকর্মীদের ট্রাক্টর বাজেয়াপ্ত করতে বলেন বিডিও।
জয়ন্তবাবুর অভিযোগ, কলেজের অধ্যক্ষ সরোজ সিংহ ও তাঁর কিছু সহকর্মী তাঁকে গালিগালাজ করেন। এমনকী, ‘ঘাড়ধাক্কা’ দিয়ে তাঁকে বের করে দেওয়া হয়। স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুকুমার মণ্ডল, টিএমসিপি-র কিছু সমর্থকও বিডিওকে নিগৃহীত করেন বলেও অভিযোগ। জয়ন্তবাবুর দাবি, “আমাকে চূড়ান্ত অপমান করা হয়েছে।” ঘটনাটি লিখিত ভাবে আরামবাগের মহকুমাশাসককে জানান জয়ন্তবাবু। অভিযোগপত্রের প্রতিলিপি পাঠিয়েছেন থানাতেও। ওই কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনভঙ্গের একই অভিযোগ উঠেছিল বুধবারও। বেঙ্গাই হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাটি মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগীকে জানান বিডিও। পরীক্ষা চলাকালীন কলেজ-মাঠ সংস্কারের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন মহকুমাশাসক। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, “কলেজে প্রচণ্ড শোরগোল হওয়ায় পরীক্ষার্থীদের অসুবিধা হচ্ছিল। সে জন্যই ব্লক প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। বিডিও-র সঙ্গে কলেজে যা ঘটেছে, তা অনভিপ্রেত।”
কলেজের অধ্যক্ষ সরোজবাবুর অবশ্য দাবি, বিডিও-ই হেনস্থা করেন তাঁকে। কলেজ শিক্ষকদের ‘মস্তান’ বলে অপমান করেছেন। আর তৃণমূল নেতা সুকুমার মণ্ডলের দাবি, “কলেজে ভিড় দেখে ঢুকে পড়ি। বিডিও-র অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ করি।” ‘বহিরাগত’ হয়েও কেন কলেজের বিষয়ে জড়ালেন, তা নিয়ে মন্তব্য করেননি ওই দু’জনই। মহকুমা প্রশাসনের নির্দেশ সত্ত্বেও কলেজ চত্বরে এ দিন ফের কাজ চালানো হচ্ছিল কেন? সরোজবাবুর বক্তব্য, “আজ পরীক্ষা ছিল, তা জানা ছিল না। স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের কোনও পরীক্ষাসূচি দেননি। তা ছাড়া, যে সব যন্ত্র ব্যবহার করে কাজ হচ্ছে, তাতে বেশি শব্দ হয় না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.