সংসদের ভিতরে ও বাইরে উত্তাল বিতর্কের মধ্যেই দারিদ্রের নতুন সংজ্ঞা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। তিন মাসের মধ্যে এ জন্য বিশেষজ্ঞ দল গড়বে যোজনা কমিশন। দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ফের খতিয়ে দেখতে নতুন পদ্ধতি ব্যবহারের প্রতিশ্রুতি দিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ-ও।
কিন্তু এই সব কিছুর মধ্যেও নতুন দারিদ্রসীমার উপর নির্ভর করে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের অর্থ দেওয়ার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান বদলের ইঙ্গিত দিয়েছে যোজনা কমিশন। আগে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশের সঙ্গে যৌথ বিবৃতিতে কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া জানিয়েছিলেন যে, ওই সব প্রকল্পের অর্থ গরিব মানুষের হাতে পৌঁছে দিতে নয়া দারিদ্রসীমাকে মাপকাঠি ধরা হবে না। কিন্তু এ দিন সেই অবস্থান থেকে প্রায় একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার জানান, খাদ্য সুরক্ষা বিলের মতো কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া অন্তত কিছু সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের অর্থ দেওয়া হবে নতুন দারিদ্রসীমার ভিত্তিতেই। তবে একই সঙ্গে, ওই সংজ্ঞা খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞ দল গড়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। সম্প্রতি যোজনা কমিশনের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে ধরা হয়েছে, শহরাঞ্চলে এক জনের দৈনিক আয় ২৮.৬৫ টাকা পর্যন্ত হলে, তবেই দারিদ্রসীমার অন্তর্ভুক্ত হবেন তিনি। আর গ্রামের ক্ষেত্রে এই অঙ্ক ২২.৪২ টাকা। যার ভিত্তিতে ২০০৪-’০৫ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০০৯-’১০ সালে দেশে দরিদ্র মানুষের অনুপাত ৩৭.২% থেকে কমে হয়েছে ২৯.৮%।
আর এর প্রতিবাদেই বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়ে কেন্দ্র। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমিয়ে দেখাতেই দারিদ্রের সংজ্ঞা বদলে দিয়েছে মনমোহন সরকার। এ জন্য মন্টেককে সরানোর দাবি তোলেন সমাজবাদী পার্টির নেতা মুলায়ম সিংহ যাদব। এই মাপকাঠির ভিত্তিতে বিপিএল কার্ড বণ্টন না-করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট বিবৃতি দাবি করে সিপিএম-সহ বাম দলগুলিও।
নয়া সরকারি পরিসংখ্যানে ভারতে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমলেও, এখনই দেশের দারিদ্র দূরীকরণ কর্মসূচিতে ঋণের অঙ্ক কমানো হবে না বলে জানিয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। |