ইয়েদুরাপ্পাকে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর পদ ফিরিয়ে দিতে গিয়ে বিজেপির সঙ্কট আরও বাড়ল।
আজ সকাল থেকে দফায় দফায় ইয়েদুরাপ্পা ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সদানন্দ গৌড়ার সঙ্গে বৈঠক করেন বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ী। তখন থেকেই শুরু দু’পক্ষের চাপানউতোর। ইয়েদুরাপ্পার অভিযোগ, গৌড়া তাঁকে বাদ দিয়েই সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। পাল্টা হিসেবে ইয়েদুরাপ্পার দল-বিরোধী কাজ নিয়ে গডকড়ীর কাছে সরব হন গৌড়া। ইয়েদুরাপ্পা যেমন মুখ্যমন্ত্রীর পদ ফিরে পেতে মরিয়া, তেমনই ইয়েদুরাপ্পা-বিরোধীরাও সক্রিয়। তাঁরা রাজ্যপালের কাছে গিয়ে জানিয়ে এসেছেন, ইয়েদুরাপ্পা মুখ্যমন্ত্রী হলে তাঁরা পদত্যাগ করবেন। সব মিলিয়ে অভূতপূর্ব সঙ্কটে কর্নাটক বিজেপি। বিপাকে পড়ে গডকড়ী আজ ইয়েদুরাপ্পাকে ইঙ্গিত দেন, এ মাসের শেষে রাজ্যের বাজেট অধিবেশন শেষ হওয়ার পর তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ফিরিয়ে দেওয়া হবে। বিজেপির একটি সূত্রের খবর, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে ‘সন্তুষ্ট করতে’ গৌড়ার থেকে একটি পদত্যাগপত্রও নিয়ে রাখা হয়। তবে সেটি এখনই কার্যকর করা হবে না। সরকারি ভাবে অবশ্য গৌড়ার পদত্যাগের কথা বিজেপির তরফে অস্বীকার করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রিত্ব ফিরে পাওয়ার আশা করলেও খুব একটা স্বস্তিতে নেই ইয়েদুরাপ্পা। শুধু রাজ্যে নয়, দিল্লিতেও তাঁর বিরোধীরা যথেষ্ট সক্রিয়। তা ছাড়া বিধায়ক সংখ্যার হিসেবেও ইয়েদুরাপ্পা যে খুব বেশি এগিয়ে আছেন, তা-ও নয়। লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজ, অনন্ত কুমারের মতো কেন্দ্রীয় নেতারা ঘোর ইয়েদুরাপ্পা-বিরোধী। ফলে তাঁদেরকেও বোঝাতে হবে গডকীকে। কর্নাটকের দায়িত্বে থাকা বিজেপি নেতা ধর্মেন্দ্র প্রধানের কথায়, “আপাতত সময় কেনার কৌশল নেওয়া হয়েছে। সংসদীয় বোর্ডই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।” বিজেপি সূত্রের খবর, দলের তরফে প্রতিশ্রুতি না পেলে ইয়েদুরাপ্পা এ দিন বৈঠকেই আসতেন না। আজ বৈঠক শেষ হওয়ার পরে সংবাদমাধমে লিখিত বিবৃতিও পড়ে শোনান। তিনি বলেন, “আমি বৈঠকে খুশি। লোকায়ুক্তের অভিযোগের ভিত্তিতে যখন আমাকে সরানো হল, তখন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, মামলা থেকে রেহাই পেলে পদ ফিরে পাব। এখন আমি রেহাই পেয়েছি। দল নিশ্চয়ই উপযুক্ত সময়ে উচিত সিদ্ধান্ত নেবে।” অন্য দিকে সদানন্দ গৌড়া বলেন, “কর্নাটকে ক্ষমতা বদল হচ্ছে না। দলীয় নেতৃত্ব আমাকে সেটি জানিয়ে দিয়েছেন।”
রবিশঙ্কর প্রসাদ এ প্রসঙ্গে বলেন, “দল যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু কর্নাটকের সকল পক্ষকে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে।” বিজেপি সূত্রের মতে, এই বার্তা ইয়েদুরাপ্পাকেও দেওয়া হল। কারণ, যে ভাবে তিনি চাপের রাজনীতি করছেন, তাতে ক্ষুব্ধ সুষমা-অনন্ত কুমাররা। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ফিরে পেতে হলে ইয়েদুরাপ্পাকে চাপের রাজনীতি ছাড়তে হবে। ইয়েদুরাপ্পা শিবির অবশ্য অন্য নানা কারণে আশঙ্কিত। দলীয় নেতৃত্ব কী সিদ্ধান্ত নেন, তা নিয়ে ভাবনার মধ্যেই দুর্নীতি মামলাটিও ভাবাচ্ছে তাঁদের। উচ্চ আদালতে মামলাটির কী হয়, সে নিয়ে সংশয় রয়েছে। ইয়েদুরাপ্পা সমর্থকদের আশঙ্কা, গৌড়া সেই সুযোগের অপেক্ষাতেই রয়েছেন। |