চা শিল্পের সঙ্কট মেটাতে দেশীয় বাজারকে ঠিকমতো ব্যবহারের উপরে জোর দিতে চান অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বৃহস্পতিবার ময়নাগুড়ি কলেজে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি আয়োগের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ভারতীয় চা শিল্পে বিপণন সমস্যা’ বিষয়ক দু’দিনের এক আলোচনা সভায় অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ওই মত দেন। এদিন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সুগত মারজিৎ। তিনি ছাড়াও টি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের জোরহাটের গবেষক তরুণ সেন বর্মন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ভাস্বর মৈত্র, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কনককান্তি বাগচি, বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষক দেবব্রত মিত্র-সহ অন্যান্যরা আলোচনায় অংশ নেন। তাঁদের বক্তব্য, কেনিয়া, শ্রীলঙ্কা-সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ চায়ের উৎপাদনে এগিয়ে আসায় ভারতীয় চা প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছে। কিন্তু দেশীয় বাজার ঠিক ভাবে ব্যবহার করা গেলে এই সঙ্কট দূর করা সম্ভব। |
আলোচনায় চা শ্রমিকদের দূর্দশা নিয়েও আলোচনা হয়। সুগতবাবু বলেন, “চা শ্রমিকদের সমস্যার সঙ্গে রফতানি সমস্যা গুলিয়ে ফেলা ঠিক হবে না। যখন চায়ের রফতানি ভাল ছিল তখন শ্রমিকদের সমস্যা ছিল না, এমন কোনও তথ্য নেই।” এদিকে, এদিন সিটু এবং আইএনটিইউসি নেতাদের সঙ্গে চোপড়া পঞ্চায়েত সমিতি হলে উত্তর দিনাজপুরের চা বাগানগুলির কর্মসংস্কৃতি নিয়ে বৈঠক করেন নর্থ বেঙ্গল স্মল টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা। তাঁদের অভিযোগ, সরকারি নিয়মে শ্রমিকদের আট ঘণ্টা কাজ এবং ২৬ কেজি পাতা তোলার কথা থাকলেও উত্তর দিনাজপুরের বহু চা বাগানে শ্রমিকেরা এই নীতি মানছেন না। বহু শ্রমিক একটানা ৫-৬ ঘণ্টা কাজ করছেন। পাতার গুণমান বজায় রাখা হাচ্ছে না। বৈঠকে সিটু নেতা কার্তিক শীল এবং আইএনটিইউসি নেতা অশোক রায় ও দীপক রায় অংশ নেন। নর্থ বেঙ্গল স্মল টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নিতাই মজুমদার বলেন, “ছোট চা বাগান বহু শ্রমিকের জীবিকার ব্যবস্থা করছে। সুতরাং সেই চা বাগানগুলির অস্তিত্ব যাতে সঙ্কটে না-পড়ে সে কথা মাথায় রাখতে হবে। উৎপাদন এবং গুণমান বজায় রাখা না- গেলে সেটা সম্ভব নয়।” |