নজির গড়ে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেই ভোট
শ্রীলঙ্কা-প্রশ্নে অন্যতম শরিক দল ডিএমকে-র কাছে রাজনৈতিক ভাবে নতি স্বীকার করল সরকার। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনে আমেরিকার আনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রস্তাবে আজ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেই ভোট দিল নয়াদিল্লি।
কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, বিষয়টি অভূতপূর্ব। স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এর আগে কখনও এমনটা ঘটেনি। কোনও দেশের সম্মতি ছাড়াই (এ ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কা) সে দেশের বিরদ্ধে আনা কোনও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রস্তাব এর আগে ভারত সমর্থন করেনি। কিন্তু জোট রাজনীতির বাধ্যবাধকতায় এক দিকে তৃণমূলের চাপে রেল ভাড়া কমানো অথবা রাজ্যসভায় প্রার্থী প্রত্যাহারের মতো ঘটনাকে মেনে নিতে বাধ্য হন সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব। ঠিক তেমনই এ ক্ষেত্রেও করুনানিধির দলের চাপ খাঁড়ার মতো ঝুলে ছিল মনমোহন সিংহের সরকারের উপর।
তামিল জঙ্গি সংগঠন এলটিটিই-র সঙ্গে লড়াইয়ের শেষ পর্বেই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠতে থাকে শ্রীলঙ্কার রাজাপক্ষে সরকারের বিরুদ্ধে। নিহত এলটিটিই প্রধান প্রভাকরণের ছেলে বালাচন্দ্রনের ক্ষতবিক্ষত দেহের ভিডিও সম্প্রতি একটি ব্রিটিশ চ্যানেলে দেখানোর পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সংসদের ভিতরে ও বাইরে ডিএমকে এবং এডিএমকে সরকারের উপর চাপ তৈরি করতে থাকে। প্রাথমিক ভাবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় জানান, সাধারণত এই ধরনের প্রস্তাব ভারত সমর্থন করে না। তবে এ ব্যাপারে মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শেষ পর্যন্ত চাপের কাছে নতি স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী সংসদে বিবৃতি দিয়ে বলেন, এই প্রস্তাবে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার দিকেই ‘ঝুঁকছে’ ভারত। তখনই দেওয়াল লিখন স্পষ্ট হয়ে যায়। ভারতের পদক্ষেপে প্রত্যাশিত ভাবেই খুশি ডিএমকে ও এডিএমকে। তবে এর পরে শ্রীলঙ্কায় তামিলদের উপরে হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন করুনানিধি। এই পরিস্থিতি এড়াতে মনমোহনকে উদ্যোগী হতে অনুরোধ করেছেন তিনি।
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথাও মাথায় রাখতে হচ্ছে নয়াদিল্লিকে। তাই আজ তড়িঘড়ি এই পদক্ষেপের ব্যাখ্যা দিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, “আমরা শ্রীলঙ্কার সার্বভৌমত্বে নাক গলাতে চাই না। তবে তামিলরা যাতে মর্যাদাপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারেন সে ব্যাপারেও আমাদের দৃষ্টি রয়েছে।” বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রও দাবি করেছেন, এই বিরুদ্ধ ভোট-দানের ফলে কলম্বোর সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্কে কোনও চিড় ধরবে না। পাশাপাশি এ কথাও বলা হয়েছে, এই প্রস্তাবে শ্রীলঙ্কার সার্বভৌমত্ব এবং অধিকারে হস্তক্ষেপ হচ্ছে না। তামিল-সহ সমস্ত সম্প্রদায়ের মধ্যে সমন্বয় এবং সমঝোতার কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করুক শ্রীলঙ্কা, এটাই চায় নয়াদিল্লি।
অন্য একটি উদ্বেগও রয়েছে ভারতের। রাষ্ট্রপুঞ্জের ৪৭টি দেশের প্রতিনিধি বিশিষ্ট মানবাধিকার কমিশনের মধ্যে ১৫টি দেশ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভোট দেয়নি। এই ১৫টি দেশের মধ্যে রয়েছে চিন, পাকিস্তানের মতো আঞ্চলিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দেশও। ওই দেশগুলির সমর্থনকে স্বাগত জানিয়েছে শ্রীলঙ্কা। পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ভবিষ্যতে চিন ভারতের বিরুদ্ধে শ্রীলঙ্কাকে কৌশলগত ভাবে ব্যবহার করতে পারে, আশঙ্কায় রয়েছে সাউথ ব্লক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.