ছোট-বড় মিলিয়ে এলাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি বাজার। সব ক’টি বাজারেই কয়েকশো দোকান আছে। অনেক দোকানই পলিথিনের অস্থায়ী ছাউনি দিয়ে গড়া। উপযুক্ত পরিকল্পনার অভাবে মাকড়সার জালের মতো বিদ্যুৎ ও জেনারেটরের তার রয়েছে বাজার জুড়ে। অন্ডালের উখড়া ও তার আশপাশের এই বাজারগুলির কার্যত জতুগৃহের দশা। কিন্তু আশপাশে কোনও দমকল কেন্দ্র নেই। এলাকার সাধারণ মানুষ ও বণিক সংগঠন তাই একটি দমকল কেন্দ্রের দাবিতে চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে।
দুর্গাপুর মহকুমার অন্তর্গত উখড়া এক সময়ে বিধানসভা কেন্দ্রও ছিল। উখড়া শহরকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে উখড়া বাজার, পাণ্ডবেশ্বর, অন্ডাল, বনগ্রাম, নতুনডাঙা, হরিপুর, লাউদোহা, বহুলা-সহ কিছু ছোট-বড় বাজার। প্রচুর দাহ্য বস্তু থাকার কারণে বিপজ্জনক দশা বাজারগুলির। ব্যবসায়ীরা স্বীকার করেন, আগুন লাগলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রায় কুড়ি বছর ধরে এলাকায় একটি দমকল কেন্দ্র গড়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। |
উখড়া চেম্বার অফ কমার্সের সম্পাদক সীতারাম বার্নোয়াল অভিযোগ করেন, বারবার আবেদন সত্ত্বেও প্রশাসনের তরফে কোনও উদ্যোগই হয়নি। সীতারামবাবু বলেন, “আমরা প্রশাসনের আধিকারিকদের পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, দমকলমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর কাছেও লিখিত ভাবে আবেদন করেছি।” স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উখড়া লাগোয়া খান্দরা পুকুরের সামনে একটি জায়গা চিহ্নিত করে সেখানে দমকল কেন্দ্র গড়ার জন্য মহকুমা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই কাজ আর শেষ পর্যন্ত এগোয়নি। উখড়া চেম্বার অব কমার্সের প্রাক্তন সভাপতি তথা স্থানীয় ব্যবসায়ী মহাদেব দত্ত জানান, এই এলাকায় কোনও আগুন লাগলে তা নেভানোর জন্য দুর্গাপুর থেকে দমকল আসতে হয়। অনেক সময়ে প্রায় ২৩ কিলোমিটার দূর থেকে দমকলের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগে আগুন ভয়াবহ আকার নেয়। শুধু দূরত্ব নয়, সংকীর্ণ ও বেহাল রাস্তা ধরে দ্রুত বেগে দমকলের ইঞ্জিন যাতায়াত করতে পারে না। দুর্গাপুরের পাশাপাশি প্রয়োজনে রানিগঞ্জ থেকেও দমকলকে যেতে হয়। উখড়া থেকে রানিগঞ্জের দূরত্ব আরও বেশি হওয়ায় সমস্যার বিশেষ সুরাহা হয় না।
সম্প্রতি একটি সরকারি প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে আসানসোলে আসেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান। ‘ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’-এর তরফে মন্ত্রীর কাছে উখড়ায় একটি দমকল কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য আবেদন জানানো হয়। ‘ফেডারেশন অফ সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’-এর সাধারণ সম্পাদক রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান জানান, উখড়া এলাকায় প্রায় চার লক্ষ মানুষের বাস। প্রতি দিন বাজারগুলিতে কেনাকাটার জন্য শহরের বাইরে থেকেও মানুষজন আসেন। এ সব কিছুর নিরাপত্তার জন্য এই অঞ্চলে একটি দমকল কেন্দ্র থাকা অত্যন্ত জরুরি। ওই বণিকসভার সদস্যদের মন্ত্রী আশ্বস্ত করে জানান, রাজ্যের অনেক জায়গাতেই নতুন কিছু দমকল কেন্দ্র গড়া হবে। আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, “আমিও দমকলমন্ত্রীকে বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করার পরামর্শ দিয়েছি।” |