ছাত্র সংসদের তিনটি পদে নির্বাচনকে ঘিরেও অশোকনগরের নেতাজি শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে এল।
শনিবার ভিপি (ভাইস-প্রেসিডেন্ট), জিএস (জেনারেল সেক্রেটারি) এবং এজিএস (অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল সেক্রেটারি) পদে নির্বাচন হয়। তিনটি পদেই আলাদা ভাবে প্রার্থী দিয়েছিল সংগঠনের দু’টি গোষ্ঠী। সর্বসম্মত ভাবে একটি পদের জন্য এক জন প্রার্থী না-হওয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষ গোপন ব্যালটে ভোটের ব্যবস্থা করেছিলেন। এই পরিস্থিতি যাতে না হয় সে জন্য কয়েক দিন ধরেই দু’পক্ষকে নিয়ে একাধিকবার আলোচনা করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু সমাধান-সূত্র বেরোয়নি।
গত ৫ মার্চ ছাত্র সংসদের ভোটে জিতে যায় টিএমসিপি। সেই ভোটকে ঘিরেও সংগঠনের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছিল। দুই গোষ্ঠীই আলাদা ভাবে প্রার্থী দিয়েছিল। তার আগে কয়েক বার দু’পক্ষের সংঘর্ষও হয়। একটি গোষ্ঠীর নেতা পাপন সরকার। তিনি সংগঠনের ব্লক সভাপতি। অন্য গোষ্ঠীর নেতা প্রদীপ সিংহ। তিনটি পদে প্রদীপ সিংহের গোষ্ঠীর প্রার্থীরাই জেতেন।
এ দিন আলাদা ভাবে প্রার্থী দেওয়া প্রসঙ্গে পাপন বলেন, “আমরা এই পরিস্থিতি চাইনি। চেয়েছিলাম তিনটি পদ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিতে। ওরা (প্রদীপ সিংহ গোষ্ঠী) রাজি হল না। নির্বাচনের সময়ে ভুল বোঝাবুঝির জন্য প্রার্থীদের আলাদা প্যানেল জমা পড়েছিল।” প্রদীপ সিংহ বলেন, “ওদের (পাপন সরকার গোষ্ঠী) হয়ে যাঁরা জিতেছেন, তাঁরা এসএফআই থেকে সংগঠনে ঢুকেছেন। ওঁদের ছাত্রছাত্রীরা মেনে নিতে পারছেন না। সেই কারণে আলাদা ভাবে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।”
তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভোটের সময়ে দলীয় নেতাদের সেখানে না যাওয়ার নির্দেশ জারি করেছেন। কিন্তু এ দিন ভোট চলাকালীন কলেজের গেটের বাইরে অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের সমীর দত্ত ছাত্রছাত্রীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সমীরবাবু সে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেছেন, “সমস্যা তৈরি হওয়ায় মিনিট পাঁচেকের জন্য কলেজের সামনে গিয়েছিলাম। ভোট সংক্রান্ত বিষয়ে যুক্ত ছিলাম না।” সংগঠনের জেলা সভাপতি সঞ্জয় রাহা জানিয়েছেন, দলের কোনও নেতা ভোটের সময়ে কলেজের সামনে গিয়ে থাকলে তা দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানানো হবে। অশান্তির আশঙ্কায় এ দিন কলেজের সামনে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে, কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। |