নিজের পায়ে দাঁড়াইবার সাহসটি বিরল। কদাচিৎ কিছু মানুষ সেই সাহস দেখান। কেহ দায়ে পড়িয়া। কেহ অন্য কোনও দায়ে, যেমন, কৌতূহল। শরৎচন্দ্র নাই। থাকিলে উপন্যাসের কোনও চরিত্রকে দিয়া ছলোছলো চক্ষুতে বলাইয়া লইতেন, কৌতূহল, এই শব্দটির আড়ালে জগতের কত ভাল-মন্দই না লুক্কায়িত আছে! প্রস্তাবনাটি কল্পিত, কিন্তু কথাটি মন্দ নহে। না হইলে হাইকোর্টের এজলাসে সহসা এক ব্যক্তি মামলা চলাকালীন সটান দাঁড়াইয়া উঠিবেন কেন? বেচারা, স্ব-চক্ষে কর্মকাণ্ডটি দেখিতে না-পাইয়া বিষণ্ণ বোধ করিতেছিলেন, নিশ্চিত। তাই, দণ্ডায়মান হওয়াই শ্রেয় বোধ করিলেন। মাননীয় বিচারপতিগণও কিঞ্চিৎ বিস্মিত। সকলে যখন বসিয়া আছে, তখন সেই প্রচল ভাঙিয়া নিজস্ব কৌতূহলের দুঃসাহসী পশ্চাদ্ধাবন করিবার সাহস কয় জনেরই বা হয়? জানার চেষ্টা বৃথা, এমন বলা চলিবে না। কথিত আছে, কলিকাতার রাস্তায় দাঁড়াইয়া হঠাৎ যদি কেহ ঊর্ধ্বপানে চাহেন, অচিরে কিছু লোক তাঁহার পাশে দাঁড়াইয়া যাইবেন এবং প্রাণপণে আকাশে কিছু খুঁজিবেন! কৌতূহল বড় দায়! আদালতকক্ষে দণ্ডায়মান লোকটিরও কিছু জানার তৃষ্ণা ছিল। সবাই বসিয়া থাকে থাক, তিনি দাঁড়াইবেন। একলা চলা পরে, অন্তত একলা দাঁড়াইলেই বা ক্ষতি কী? |