|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
কথামালা নহে, বোধোদয় |
বইপোকা |
|
হিত-গ্রন্থাবলী অন্তর্হিত হইয়াছিল। সেই সঙ্গে প্রায় চির-অন্ধকারে চলিয়া যাইতেছিলেন হিতেন্দ্রনাথ ঠাকুর। অথচ হেমেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নীপময়ী দেবীর এই পুত্রটি বাংলা প্রবন্ধসাহিত্যে বিষয়বৈচিত্র্যের কারণ ঘটাইয়াছিলেন। নিছক সাহিত্যালোচনার বাহিরে বিবিধ বিষয় লইয়া তিনি ভাবিয়াছিলেন। তাহার মধ্যে সর্বপ্রধান সংগীত। এই বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আজিও বঙ্গভাষায় সংগীতসাহিত্য সুদুর্বল এবং সুদুর্লভ। সংগীত সমালোচনা বুঝিতে আমরা কেবল মন কাড়িয়াছে কি কাড়ে নাই, রেশ রাখিয়াছে কি রাখে নাই ইত্যাদি বৃত্তাকার কথামালা বুঝি। বোধোদয় এবং সেই বোধের সঞ্চারণের ক্ষমতা লইয়া ক্বচিৎ কোনও সংগীতসাহিত্য উদয় হয়। হিতেন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনা সেই গোত্রের। সেগুলি ফিরিয়া পড়া গেল সম্প্রতি, তাঁহার সংগীত বিষয়ক ও অন্যান্য প্রবন্ধ (সংকলন ও সম্পাদনা প্রত্যূষকুমার রীত, কমলিনী, ২০০.০০) গ্রন্থে। তবে ইহাতে বিষয়-বিভাজনে কিঞ্চিৎ বিভ্রান্তি ঘটিয়াছে। যেমন ‘রাগ ও ছবি’ মূলত সংগীত বিষয়কই, শিল্প-বিষয়ক নহে, তাহা প্রবন্ধটি পড়িলেই বুঝা যায়। তদুপরি, সম্পাদকীয় রচনাটি কিয়দংশে বিশ্লেষণাত্মক হইলে সুখের কারণ ঘটিত। বঙ্গীয় সম্পাদনাধারায় এই ফাঁকি-ধারাটির অবসান এখনও হইল না, ইহাই দুঃখের। রচনাগুলিকে কেবল জড়ো করিয়া তাহাদের প্রকাশতথ্য বর্ণনা করিয়া যাওয়াটা যে নিছক মজদুরি সেই বোধটি জাগিল না। যে সকল তথ্য পরিশিষ্টে যাওয়া উচিত, নিছক পঞ্জির আকারে, সেই সকলই লিখিয়া দেওয়ার চেয়েও আরও বড় কিছুর নাম সম্পাদনা, বঙ্গীয় প্রকাশনামহল তাহা কবে বুঝিবে? |
|
|
|
|
|