অবৈধ ভাবে অঙ্গনওয়াড়ি সহায়িকা পদে নিয়োগ করা হয়েছে। এই মর্মে দফতরের জেলা প্রকল্প আধিকারিককে অভিযোগ করলেন পুঞ্চার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রমেশ কিস্কু, পুঞ্চা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের মিথিলা মুর্মু ও মানবাজারের প্রাক্তন বিধায়ক সাম্যপ্যারি মাহাতো। সোমবার তিনজনেই লিখিত অভিযোগ জানান।
পুঞ্চার সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পুঞ্চা এলাকায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ৩২ জন মহিলাকে সহায়িকা পদে নিয়োগের জন্য ২০১০ সালের জুন মাসে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল। প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা হয়ে গেলেও বিভিন্ন কারণে নিয়োগপত্র দেওয়া হয় নি। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকা পদে নিয়োগের জন্য ব্লকস্তরে ছয় জনের একটি কমিটি রয়েছে। শিশু বিকাশ প্রকল্পের ব্লক আধিকারিক, সংশ্লিষ্ট বিডিও, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, দফতরের মন্ত্রীর প্রতিনিধি ও স্থানীয় বিধায়ক এই কমিটির সদস্য। পদাধিকার বলে বিধায়ক ওই কমিটির চেয়ারম্যান।
পুঞ্চা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের অভিযোগ, “তড়িঘড়ি শুক্রবার ব্লকের শিশু বিকাশ প্রকল্পের আধিকারিক বৈঠক ডেকে ছিলেন। গিয়ে দেখি প্রার্থীদের নম্বর পাল্টে দিয়ে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আমাদের ওই তালিকা ধরিয়ে দিয়ে স্বাক্ষর করতে বলা হয়। আমি অবশ্য স্বাক্ষর করিনি।” একই অভিযোগ জানিয়েছেন পুঞ্চা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের মিথিলা মুর্মুও। তাঁর অভিযোগ, “গোলমাল ছিল বলে ওই তালিকায় আমি স্বাক্ষর করিনি। এখন দেখছি অনেককেই নিয়োগ পত্র দেওয়া হয়ে গিয়েছে।” মানবাজারের প্রাক্তন বিধায়ক তথা ওই প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া কমিটির চেয়ারম্যান সাম্যপ্যারি মাহাতো অভিযোগ করেন, “নানা সমস্যার কারণে তখন আমরা নিয়োগ পত্র দিতে পারিনি। এখন তৃণমূল অবৈধ ভাবে সহায়িকা নিয়োগ করছে। জেলা প্রকল্প আধিকারিককে অভিযোগ জানিয়েছি।” সিপিএমের পুঞ্চা জোনাল কমিটির সম্পাদক বিপদতারন শেখরবাবু বলেন, “তৃণমূল নেতাদের পরিবারের সদস্যদের বিধি ভেঙ্গে নিয়োগ পত্র দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আমরা অভিযোগ জানিয়ে।”
পুঞ্চার শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক সুভাষ মাহাতো ব্যস্ত রয়েছেন বলে দাবি করে অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। বিডিও সুপ্রতিক সিংহ বলেন, “আমি সদ্য দায়িত্ব নিয়েছি। এ ব্যাপারে কিছু জানি না।” মানবাজারের তৃণমূল বিধায়ক সন্ধ্যারানি টুডু দাবি করেন, “ওরা মিথ্যা অভিযোগ করছেন। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক নিজেও ওই তালিকায় স্বাক্ষর করেছেন। তিনি কেন এমন কথা বলছেন জানি না।” তিনি জানান, দু’বছর আগে পরীক্ষা নেওয়া হলেও নিয়োগ না দিয়ে মহিলাদের বঞ্চিত করা হচ্ছিল। প্রকল্পের জেলা প্রকল্প আধিকারিক স্বপন মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, “নিয়ম মেনেই নিয়োগ পত্র দেওয়া হয়েছে। সহায়িকা পদ পূরণের জন্য কমিটির সদস্যদের অনেকবার বৈঠকে ডাকা হলেও অনেকে গরহাজির থেকেছেন। তবু অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।” |