|
|
|
|
হামলায় বন্ধ সেতু তৈরির কাজ, অভিযুক্ত তৃণমূল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোলাঘাট |
এক দল যুবকের হামলায় শুক্রবার বন্ধ হয়ে গেল কোলাঘাটে রূপনারায়ণ নদের উপরে দ্বিতীয় সেতু নির্মাণের কাজ। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। যে ঠিকাদার সংস্থা কাজটি করছে তাদের কর্তাদের বক্তব্য, হামলাকারীদের সঙ্গে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা ছিলেন। সংস্থার কয়েকজন কর্মীকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। বাগনান থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে ঠিকাদার সংস্থার কর্তারা জানিয়েছেন।
কোলাঘাটে রূপনারায়ণের উপরে পুরনো সেতুটি বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। সেই কারণে ২০০৩ সালে মুম্বই রোড চার লেনে সম্প্রসারণের সময়েই পুরনো সেতুর পাশে একটি নতুন সেতু তৈরির কাজ শুরু করে জাতীয় সড়ক সংস্থা। যে ঠিকাদার সংস্থা সেতু নির্মাণের দায়িত্বে ছিল, টাকার অভাবে কাজ অসম্পূর্ণ রেখে তারা ২০০৬ সালে রণে ভঙ্গ দেয়। বারবার চেষ্টা করেও অসম্পূর্ণ দ্বিতীয় সেতুর কাজ শেষ করার জন্য নতুন ঠিকাদার মেলেনি। মুম্বই রোড চার থেকে ছয় লেনে সম্প্রসারিত হচ্ছে।
এই কাজটির বরাত পেয়েছে যে ঠিকাদার সংস্থা তারাই ২০১১ সালের এপ্রিল থেকে অসম্পূর্ণ সেতুটির কাজে হাত দিয়েছে। যদিও তারা আবার সেতু তৈরির কাজে বিশেষজ্ঞ অন্য একটি ঠিকাদার সংস্থাকে দিয়ে কাজটি করাচ্ছে।
সেতুর কাজ অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে।
সেতু নির্মাণের কাজে যুক্ত ঠিকাদার সংস্থার দাবি, চলতি বছরের পুজোর আগেই যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে দ্বিতীয় সেতু। কিন্তু শুক্রবার হামলার পরে কাজ সময়ে হবে কি না, তা নিয়ে ধন্দে ঠিকাদার সংস্থার কর্তারা। |
|
বন্ধ রয়েছে কাজ। বসে আছেন শ্রমিকরা। ছবি: হিলটন ঘোষ |
এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ শ’খানেক যুবক কোলাঘাটে হাজির হন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের বেশ কয়েকজন স্থানীয় নেতা-কর্মী। তাঁরা দাবি করেন, তাঁদের মনোনীত লোকজনকে কাজ দিতে হবে। ধুলাগড় টোল প্লাজাতেও তৃণমূলের একাংশের বাধাতেই টোল আদায় বন্ধ রয়েছে। টোল আদায়ের কাজে যে সব পুরনো কর্মী ছিলেন, তাঁরা সকলে ঢুকেছেন তৃণমূল কর্মী সংগঠনে। ওই সংগঠনের দাবি, টোল আদায়ের কাজে ফের পুরনো কর্মীদের বহাল করতে হবে। কয়েক দিন আগে এই দাবিতে সংগঠনের কয়েক জন সদস্য টোল প্লাজা পুনর্গঠনের কাজে নিয়োজিত ইঞ্জিনিয়ারদের মারধর করে তাড়িয়ে দেন বলেও অভিযোগ।
শুক্রবার কোলাঘাটে হামলাকারীরা বলেন, “ধুলাগড়ে কাজ বন্ধ রয়েছে। এখানেও কাজ করতে দেওয়া হবে না।” ঠিকাদার সংস্থার অন্যতম কর্তা জয়শঙ্কর বলেন, “হামলাকারীরা আমাদের বলে গিয়েছে, তারা নির্দেশ দিলে ফের কাজ শুরু হবে।”
দিল্লি থেকে বুধবার মহাকরণে এসে জাতীয় সড়ক সংস্থার পদস্থ কর্তারা রাজ্যের মুখ্যসচিব সমর ঘোষের সঙ্গে রাজ্যের জাতীয় সড়কগুলিতে কাজের ক্ষেত্রে কী কী অসুবিধা রয়েছে সেই বিষয়ে আলোচনা করেন। আলোচনায় গুরুত্ব পায় কোলাঘাটে সেতুর প্রসঙ্গ। মুখ্যসচিব জাতীয় সড়ক সংস্থার কর্তাদের জানিয়েছিলেন, কোলাঘাটে দ্বিতীয় সেতুর কাজটি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে শেষ করতে হবে। কোনও বাধা এলে রাজ্য সরকার সব রকম সাহায্য করবে। জাতীয় সড়ক সংস্থার এক কর্তা বলেন, “আমরা আশা করি, রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নেবে।” উলুবেড়িয়ার এসডিপিও শ্যামল মণ্ডল বলেন, “কাজ বন্ধ হবে না। অভিযোগ পেলে প্রকৃত হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পক্ষান্তরে, রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ রায় বলেন, “পুলিশকে বলেছি, উন্নয়নমূলক কাজে কোনও রকম বাধা বরদাস্ত করা হবে না।” |
|
|
|
|
|