|
|
|
|
‘নির্লিপ্ত’ রইলেন জমা অভিমানে |
গৌতম ভট্টাচার্য • কলকাতা |
পশ্চিম বান্দ্রায় তাঁর নতুন অট্টালিকার ড্রয়িংরুমের জন্য কোন পেন্টিংটা বাছা হবে?
চিত্রশিল্পী নির্বাচন তত দিনে হয়ে গিয়েছে। যোগেন চৌধুরী। কিন্তু তাঁর বইতে থাকা স্পেসিমেনসুলভ দু’টো ছবির ভেতর কোনটা বাছা হবে, সেই তর্কের কিছুতেই নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না।
এক বন্ধু বলছেন, “ইজি চয়েস তো। ওই বিষাদগ্রস্ত ছবিটা বাছা হোক। পেন্টিং হিসেবে দারুণ।” অন্য বন্ধু একমত হয়েও বলছেন, “ওর বাড়ি যখন। ঝলমলে কোনও রং হওয়া উচিত। যে লোকটা দেশকে সর্বদা আলো ঝলমলে রাখে, তার ড্রয়িংরুমের পেন্টিং বিষাদগ্রস্ত দেখাবে কেন? কন্ট্রাডিকশন হয়ে যাবে না!”
বছরখানেক আগের কথা। মাঠের মামলা যে ভাবে থার্ড আম্পায়ারের কাছে যায় সে ভাবেই নিষ্পত্তির জন্য মুম্বইয়ের পাঁচতারা হোটেলের ঘরে বসা তৃতীয় ব্যক্তিটির কাছে গেল। আর তিনি সচিন তেন্ডুলকর, রায় দিলেন দ্বিতীয় জনের পক্ষে। মেনে নিলেন যার জীবনের ব্রত দেশের মুখে সব সময় হাসি ফুটিয়ে রাখা, তার ঘরের চেহারাও একই সংকেতবাহী হওয়া উচিত।
ভারতীয় ক্রিকেটঅলিন্দের গত তেইশ বছর এটাই সযত্নলালিত প্রাচীন অরণ্যপ্রবাদ যে, মাঠে সচিন হাসলে মাঠের বাইরে গোটা দেশ হাসবে। শুক্রবারের ১৬ মার্চ এই নিয়মের সবচেয়ে প্রণিধানযোগ্য ব্যতিক্রম হিসেবে হাজির হল। বরাবরের মতোই সচিনের পেশাদার জীবনের সর্বোচ্চ কীর্তি মেজাজ ভাল করে দিল গোটা দেশের। গত আটচল্লিশ ঘণ্টা ধরে জাতীয় পর্যায়ে বহুচর্চিত দু’টো নাম শততম সেঞ্চুরিতে হয়ে পড়ল সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। দীনেশ ত্রিবেদী আর প্রণব মুখোপাধ্যায়। বাজেটের কোপে দুপুরে হাঁসফাঁস করা জনগণও যেন শেষ বিকেলে মুক্তি খুঁজে পেল তেন্ডুলকরের ব্যাটে। এই পর্যন্ত নিয়মেই চলছিল। ব্যতিক্রম হয়ে গেল সেঞ্চুরি পরবর্তী তেন্ডুলকরের মনোভাবে। |
|
ইতিহাসে পৌঁছে তৃপ্তির চুম্বন। মীরপুরে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে। ছবি: এ পি |
এর আগে গত এক বছর জুড়ে দেশজ প্রেসবক্স প্রচুর গবেষণায় ব্যস্ত থেকেছে। শততম সেঞ্চুরি পরবর্তী সচিনের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া কেমন হবে? ব্রায়ান লারা অ্যান্টিগাতে সোবার্সের রেকর্ড ভেঙে পিচের ওপর শুয়ে পড়েছিলেন। জিম কুরিয়ার এবং অনেকে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে লাফিয়ে পড়েছেন ইয়ারায়। বিয়ন বর্গের মতো কোর্টে চির-আবেগহীন নক্ষত্র উইম্বলডন জেতার পর হাঁটু গেড়ে বসে পড়েছেন। জকোভিচ বিজয়ী হয়ে সেন্টার কোর্টের ঘাস পর্যন্ত খেয়ে ফেলেছেন। আর তিনি সচিন কিনা, ক্রিকেটজীবনের সর্বোচ্চ গিরিশৃঙ্গে পৌঁছে কেমন নির্লিপ্ত থেকে গেলেন। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের ১৪-ই অগস্ট সেঞ্চুরি অভিযানে প্রথম সাফল্য এসেছিল। সবে ন’মাস হল তখন বার্লিনের প্রাচীর ভেঙেছে। সাল ১৯৯০। আজ ২০১২। বাইশ বছর পরে এমন অবিস্মরণীয় সেঞ্চুরি উৎসবে হাল্কা ব্যাট তুললেন। আকাশের দিকে প্রার্থনা করলেন। হেলমেটে চুমু খেলেন। কিন্তু সবটাই খানিক পরে। আর কেমন যেন বিষাদগ্রস্ত থেকে।
সাফল্যের রং নাকি সোনালি। অথচ মহাকীর্তির এই কোহিনুর যেন ঢেকে থাকল ধূসর বিষণ্ণতায়। তখন তো সচিনের জানার কথাও নয় যে তাঁর বিশ্ববন্দিত কীর্তিকে মর্যাদা দেওয়ার মতো বোলিং না করতে পেরে বাংলাদেশের কাছে চার বল বাকি থাকতে পাঁচ উইকেটে হেরে বসবে ভারত। চোনা পড়ে থাকবে আজকের দিনটার ওপর।
টিভি বক্স থেকে গাওস্কর যা সন্দেহ করছিলেন তখন মনে হচ্ছিল সেটাই ঠিক। ক্রিকেটজীবনে এই প্রথম বাইশ গজে কাঁদলেন সচিন। একেবারেই মনে হল না সেটা আনন্দাশ্রু বলে। মাঠ থেকে বার হওয়া মাত্র রামিজ রাজাকে দেওয়া টিভি ইন্টারভিউ শুনে আরও নিশ্চিত হওয়া গেল যে, ওটা গত এক বছরের অভিমান, গঞ্জনা আর সমালোচনার মিলিত বাষ্প। গত কয়েক মাস ঘনিষ্ঠমহলে যা বলে আসছিলেন তেন্ডুলকর, এ দিন টিভির সামনে সেটাই উজাড় করে দিলেন। পলিটিক্যালি কারেক্ট থাকার বরাবরের পবিত্র দায় আজ নেই তাঁর। সব উড়ে গিয়েছে। “হাবভাব দেখে মনে হচ্ছিল এই একটা সেঞ্চুরি না থাকাটাই আমার চরম ব্যর্থতা। সবাই যেন ভুলে যাচ্ছিল এই লোকটারই ৯৯-টা সেঞ্চুরি আছে।” অভিমানাহত এই গলা শুনে আসমুদ্রহিমা চলে অনেকেরই আশ্চর্য লেগেছে। কিন্তু তেন্ডুলকরের ঘনিষ্ঠগোষ্ঠীর কাছে এমন অভিমানমিশ্রিত ক্রোধ নতুন কিছু নয়। ইংল্যান্ডে শুরু হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া সফরের শেষ দিকে পৌঁছে মারাত্মক বেড়ে যায়।
মাত্র ক’দিন আগেই যাঁরা সাড়ম্বরে বলছিলেন, তেন্ডুলকরের অবসর নেওয়া উচিত। তাঁরা এ দিন চ্যানেলে চ্যানেলে যেমন আলো করে বসেছেন, আর বাজেট ভুলে রাস্তায় মিষ্টি বিতরণ আর মহোৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে তা থেকে গত তিন মাসকে অশরীরী আখ্যা দেওয়া যেতে পারে। যেন কখনও ঘটেইনি। অথচ ঠিক গত শুক্রবারই ভারতীয় ক্রিকেটের হালফিলের সবচেয়ে দুঃখজনক দিনে অনেকে তেন্ডুলকরের অবসর দাবি করেছিলেন। দিনটা ছিল রাহুল দ্রাবিড়ের চলে যাওয়ার। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ফোরাম আর টিভিতে সে দিন প্রচুর জল্পনা চলেছিল একটা লোক সম্মানের সঙ্গে চলে গেল। আর একটা লোক পড়ে থেকে থেকে নিজেকে অসম্মানে ফেলছে কেন?
ঠিক এখনকার হিসেবমতো এগারো মাস বাদে ক্রিকেট থেকে চিরতরে চলে যাওয়ার কথা তেন্ডুলকরের। কাছাকাছি সময়ে বার হবে তাঁর প্রথম আত্মজীবনী। যত দূর জানি, সেখানে একটা গোটা অধ্যায়ই থাকছে শততম সেঞ্চুরি নিয়ে। যত না এভারেস্টে প্রথম পা দেওয়ার স্বর্গসুখ। তার চেয়ে বেশি দেশের সম্ভাব্য গর্বকে স্পর্শ করতে গিয়ে হড়কে-হড়কে যাওয়ার যন্ত্রণা। শততম সেঞ্চুরির লক্ষ্যে নিষ্ফলা কেটেছে তাঁর ৩৬৮ দিন। কেউ বুঝতেই চায়নি এই সময়ের মধ্যে এমন ছ’টা ইনিংস রয়েছে যার যে কোনওটাতে কোহিনুর হস্তগত হতে পারত। মোহালির ৮৫। ওভালের ৯১। কোটলার ৭৬। ওয়াংখেড়ের ৯৪। মেলবোর্নের ৭৩। সিডনির ৮০। সিডনির ইনিংসটা খেলা হয় এ বছরেরই তেসরা জানুয়ারি। |
|
• ৮৫, বনাম পাকিস্তান, মোহালি, ৩০/৩/১১
• ৯১, বনাম ইংল্যান্ড, ওভাল, ১৮/৮/১১
• ৭৬, বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ফিরোজ শাহ কোটলা, ৬/১১/১১
• ৯৪, বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ওয়াংখেড়ে, ২২/১১/১১
• ৭৩, বনাম অস্ট্রেলিয়া, মেলবোর্ন, ২৬/১২/১১
• ৮০, বনাম অস্ট্রেলিয়া, সিডনি, ৩/১/১২ |
|
|
শুকনো অঙ্কের বিচার যদি দেখেন সচিন তেন্ডুলকরের সেই অর্থে মোটেই অন্ধকার সময় যায়নি। ক্রিকেটপ্রতিভার সাময়িক সুড়ঙ্গপ্রবেশ ঘটেছিল মাত্র। সেটারও মেয়াদ ৪ জানুয়ারি-১৫ মার্চ মধ্যবর্তী এই সময়ে। মোট ৭১ দিন। এই ৭১ দিন ঘিরে মিডিয়া এবং বিশেষজ্ঞরা যে ভাবে জীবজগত সরগরম করে দিয়েছিলেন তা মোটেই ভাল লাগেনি তেন্ডুলকরের। এক এক সময় গভীর বিষণ্ণ হয়ে সহ খেলোয়াড়দের বলেছেন, টেস্ট সেঞ্চুরি আছে আমার পঞ্চাশের ওপর। কেউ মাথা ঘামাচ্ছে না। হাটেঘাটে যেখানে যাচ্ছি, অস্ট্রেলিয়ার হোটেলে রুম সার্ভিস করতে এসেও হোটেলকর্মী বলছে এখানে হচ্ছে তো?
পেশাদার খেলাধুলোর জগতে দেশ এবং একক ভাবে নিজের ওপর গচ্ছিত এমন মিলিত মরণপণ চাপ কেউ কখনও নেননি। স্টিভ ওয় বলার চেষ্টা করেছিলেন, “আসল রেকর্ড হল ওর একান্নটা টেস্ট সেঞ্চুরি। আমি সচিনকে ওয়ান ডে হান্ড্রেডের জন্য মনে রাখব না। তাই আমার কাছে ওর রেকর্ড হয়েই গিয়েছে।” কিন্তু স্টিভ বললে কী হবে, শততম সেঞ্চুরির তীব্র ক্যাকোফোনিতে প্রাক্তন অজি অধিনায়কের গলা জলমগ্ন হয়ে যায়।
সচিন যে ভাবে তাঁর ব্যাটে নিজের এবং দেশের ওজন বহন করে এসেছেন, চ্যাপেল-ভাইদের কাছে সময় সময় তা যুক্তিগ্রাহ্য নয়। ইয়ান চ্যাপেল গত অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় বারবারই বলেছেন, তাঁর পছন্দের মানুষ হলেন লারা। যিনি নিজের মতো বিন্দাস থাকেন। ক্রিকেটের ওপর বাড়তি কোনও দৃষ্টিকোণ চাপিয়ে নিজের বিপণ্ণতা ডেকে আনেন না। সচিন এ সবই শুনেছেন। মোটেই আহ্লাদিত হননি। কিন্তু বরাবরের মডেল থেকে সরে আসার কারণ দেখেননি যে আমার ক্রিকেট এবং আমার দেশ একই লাইনে। দেশের মানুষকে খুশি করা আমার ক্রিকেটব্যাটের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। অন্যরা দলের হয়ে নিছক রান করে থেমে যেতে পারে। আমি পারি না। আমার কাছে দেশবাসীর চাহিদা আরও বেশি। শুধু টিম জিতলেই হবে না, ওঁদের আমায় খুশি করতে হবে।
যত ভেবেছেন তত তাঁর সেঞ্চুরির বিপণ্ণতা বেড়েছে। তত সাবেকি ক্রিকেটশিক্ষা ভুলে ৭০-এর পর তিনি অতিসতর্ক এবং সন্ধিগ্ধ হয়ে পড়েছেন। স্তম্ভিত ড্রেসিংরুম যা দেখে আলোচনা করেছে চাপ এমনই বস্তু, যে তেন্ডুলকরকেও পেড়ে ফেলতে পারে। এরাও শুনতে চায়নি তেন্ডুলকরের নীরব গোঙানি যে তাঁর চাপ অভূতপূর্ব। কারণ উন্নতিশীল অর্থনীতিসম্পন্ন তাঁর দেশেরও যে শততম সেঞ্চুরির ট্রফিটা চাই। মীরপুর স্টেডিয়ামে দেওয়া সাংবাদিক সম্মেলনে সচিন বলেই ফেললেন, “একশো সেঞ্চুরির মধ্যে এটা কঠিনতম। আমার ধৈর্যের চরম পরীক্ষা নিয়েছে। চরিত্রের পরীক্ষা নিয়েছে। হতাশা সামলানোর পরীক্ষা নিয়েছে। আরে বাবা, দিনের শেষে আমি তো একজন মানুষ। ঈশ্বর তো নই।” এই সচিনকে টিভিতে দেখে বোঝা গেল মহাকীর্তিতে হাত রাখার আবেগ খানিক সামলে নিয়েছেন। মাঠে যতটা উত্তেজিত ছিলেন এখন নেই। টিমমেটদের কারও কারও বক্রোক্তি নিয়ে কোনও আলোচনায় গেলেন না।
এ হেন টিমমেটরা ইংল্যান্ড সফর, এমনকী অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ভাগেও সঙ্গে ছিল। কিন্তু ওয়ান ডে খেলতে চাওয়া ইস্তক এদেরও কারও কারও গঞ্জনার পাত্র হয়ে গেলেন। প্রকাশ্যেই সিনিয়র ক্রিকেটাররা ইঙ্গিত দিতে শুরু করলেন যে শিং ভেঙে বাছুরের দলে ঢুকেছে। কমে আসতে থাকা নিজবৃত্তের সহ খেলোয়াড়মহলে তেন্ডুলকর বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন, অস্ট্রেলিয়ায় থেকে যাওয়ার লক্ষ্য মোটেও শততম সেঞ্চুরি নয়। অত সহজ সেঞ্চুরি চাইলে তিনি দেশের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজটাই খেলতেন। অস্ট্রেলিয়ায় খেলছেন অন্তত ওই দেশ থেকে মাথা নিচু করে কখনও ফিরে আসেননি বলে। এই বক্তব্য সবাই বিশ্বাস করেছে এমন কোনও প্রমাণ নেই। বরঞ্চ নভজ্যোত সিংহ সিধু যাঁর সম্পর্কে বলেছেন গ্রেটেস্ট টিমম্যান। অন্যের রানের জন্য নন স্ট্রাইকার থেকেও এমন প্রাণপণ ছুটতে কাউকে দেখিনি। তাঁর সম্পর্কে ঘোর সন্দেহপ্রকাশ করে বলা হতে থাকে নিজের রেকর্ডের জন্য খেলছে। টিমের জন্য নয়।
তেইশ বছরের ক্রিকেটজীবনে গ্রেগ চ্যাপেল রাজে সবচেয়ে অসহনীয় অবস্থায় ছিলেন সচিন। কিন্তু সেই তখনও সহ খেলোয়াড় কখনও তাঁর সম্পর্কে অশ্রদ্ধা দেখায়নি। মীরপুর স্টেডিয়ামের চোখের জল তাই ব্যতিক্রমী হয়েও অত্যাশ্চর্য নয়। অস্বাভাবিক তো নয়ই।
সেঞ্চুরি করে টিম হারুক গলি ক্রিকেটারও চায় না। শততম সেঞ্চুরিতেও যে টিম জিতল না সেটা তেন্ডুলকরের নবতম যন্ত্রণা। কিন্তু শততম সেঞ্চুরির পিছনে তাঁর মরণপণ দৌড়ের তো এটাই দস্তুর। তুমি প্রতিভার বরপুত্র হতে পারো। তাকে সম্মান দেওয়ার মতো নিষ্ঠা তোমার থাকতে পারে। তা বলে তোমার চিত্রনাট্য তুমি মোটেও লিখবে না।
একান্তই সচিনের ওপর ছেড়ে দেওয়া হলে তিনি অবশ্যই সেঞ্চুরি চাইতেন ক্রিকেটের মহীরূহ সুলভ কোনও মাঠে। লর্ডস, ওভাল, মেলবোর্ন বা সিডনিতে। উপমহাদেশের মন্থর উইকেটে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নয়। ব্র্যাডম্যান যেমন জীবনের শেষ টেস্ট ইনিংসে অন্তত চার রান চেয়েছিলেন। যাতে একশো গড় নিয়ে শেষ করতে পারেন।
ক্রিকেট ট্র্যাজেডির মাহাত্ম্য যেন কোথাও গিয়ে ডন আর তাঁর কাহিনি মিলিয়ে দিয়ে গেল। বিজ্ঞাপন হয়ে রইল ক্রিকেটের যে সলমন বাট-মহম্মদ আমেরদের মতো ক্রিকেটকে ডিজাইনার, ফল ঠিক করে রাখা একটা প্রক্রিয়ায় অপমানিত করার মানুষ যেমন আছে, তেমনই ক্রিকেটের একটা তেন্ডুলকরও আছে। যে সবচেয়ে বড় পূজারী হয়েও যা যা চেয়েছে সবটা অবিকল চাহিদার মতো পায়নি। কিছু অসম্পূর্ণ থেকে গিয়েছে। কিছু সম্পূর্ণ হয়েছে। যেমনটা জীবনে হয়।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আসা শততম সেঞ্চুরির ধূসরতা যদি অলৌকিক হয়। ক্রিকেটের মূল নিয়মে তা কোনও অসঙ্গতি ঘটায়নি। বরঞ্চ ক্রিকেট আজও তার অন্তিম বিচারব্যবস্থার নিরিখে ব্র্যাডম্যান-সচিনদের ওপরে থেকে গেল। ব্যক্তির এভারেস্টে ওঠার দিনেও খেলাটা থেকে গেল বিশালতর! |
|
|
|
|
|