জোট রাজনীতিতে ‘সমস্যা’ আছে সে কথা কবুল করেই সমস্যা কাটাতে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শরিকদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ।
শরিক তৃণমূলের আপত্তিতেই থমকে রয়েছে খুচরোয় বিদেশি লগ্নি। রেলে যাত্রিভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েও পিছিয়ে আসার মুখে সরকার। এই পরিস্থিতিতে আজ সাধারণ বাজেট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আর্থিক বৃদ্ধির গতি বাড়ানোই এই মুহূর্তের চ্যালেঞ্জ।” পাশাপাশি মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখার “দায়িত্ব ঢিলে হতে দেওয়া যাবে না।” মনমোহনের মতে, এ বারের বাজেটে প্রণব মুখোপাধ্যায় সব দিক সামলে চলার কাজটি ভাল ভাবেই করেছেন। এর পর সরকার তার প্রার্থিত সংস্কারের লক্ষ্যে পদক্ষেপ করতে পারবে কি? সেখানেই শরিকদের ভূমিকা আর জোট রাজনীতির প্রসঙ্গ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
মমতার মতো শরিকদের সঙ্গে পাবেন কি? মনমোহন মেনে নেন, “জোটের কিছু বাধ্যবাধকতা থাকে।” তাঁর কথায়, “সমস্যা থাকবেই। সমস্যা থেকেওছে। কিন্তু সরকারকে যদি আখেরে দেশ চালাতে হয়, তা হলে অর্থনীতির দিকটা সামলানোর জন্য দীর্ঘমেয়াদি কৌশল নিতেই হবে।” সেই প্রয়োজনে ‘কঠোর’ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন মনমোহন। অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে তাদেরও সামিল করে নেওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি। প্রধানমন্ত্রীর মতে, ভারতের সবচেয়ে বড় সাফল্য হল, বিশ্ব জুড়ে আর্থিক ডামাডোলের মধ্যেও বৃদ্ধির গতিমুখ ধরে রাখা। আন্তর্জাতিক মন্দার মুখে ভারতের বৃদ্ধি-হার ২০০৮-০৯ সালে ৬.৫ শতাংশে নেমে গিয়েছিল। ২০০৯-১০ এবং ২০১০-১১ সালে তা ফের ৮.৪ শতাংশে পৌঁছয়। মনমোহনের কথায়, “এ বছরে বৃদ্ধির হার আবার নিম্নমুখী হয়েছে। আমাদের চ্যালেঞ্জ, সেটাকে ৮-৯ শতাংশে তুলে নিয়ে যাওয়া। সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ওটাই।”
এ বারের বাজেটে প্রণববাবু আগামী তিন বছরের মধ্যে ভর্তুকির পরিমাণ মোট জাতীয় আয়ের ১.৭ শতাংশে বেঁধে ফেলার কথা বলেছেন। মনমোহন বলেন, সেটা করতে গেলে পেট্রো-পণ্য এবং অন্যান্য জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। “ভর্তুকির পরিমাণ কমাতে হলে এ ছাড়া অন্য রাস্তা নেই।” কিন্তু সেটা কী ভাবে সম্ভব, তার দিশা বাজেটে আছে? মনমোহনের বক্তব্য, প্রণববাবু ঘাটতির পরিমাণ মোট জাতীয় আয়ের ৫.৯ শতাংশ থেকে ৫.১ শতাংশে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। |