অন্য পুরুষের প্রতি স্ত্রী অনুরক্ত বলে সন্দেহ করতেন তিনি। তা নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকত। স্বামী শেষ পর্যন্ত স্ত্রীকে হত্যার ছক কষেন বলে অভিযোগ। কিন্তু অস্বাভাবিক ভাবে মৃত্যু হল স্বামীরই। স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ঘটনাটি ঘটেছে বরাহনগরের কামারপাড়ায়। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম প্রদীপ দাস (৩৫)। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কামারপাড়ায় নিজের বাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় প্রদীপের দেহ। এই ঘটনায় কৃশানু দে নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, অন্য পুরুষের সঙ্গে স্ত্রীর সম্পর্ক মানতে পারেননি প্রদীপ। তাই স্ত্রী মীনাক্ষীকে বালিশ চাপা দিয়ে খুনের চেষ্টা করেন তিনি। স্ত্রী মারা গিয়েছেন ভেবে নিজে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়েন। পুলিশই ওই মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রদীপের দেহ পাঠায় ময়না-তদন্তে।
ব্যারাকপুরের অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে এক জনকে।” পুলিশ জানিয়েছে, প্রদীপ পেশায় অটোচালক। স্ত্রী যে বেশ কিছু দিন ধরেই অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলেছেন, তিনি তা জানতেন। তা নিয়ে প্রায়ই অশান্তি হত। প্রতিবেশী কৃশানুর নিয়মিত যাতায়াত ছিল তাঁর বাড়িতে। মীনাক্ষীর সঙ্গে কৃশানুর সম্পর্ক নিয়ে পাড়াতেও কানাঘুষো ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে আচমকাই বাড়িতে ফিরে নিজের বিছানায় আপত্তিকর অবস্থায় মীনাক্ষী ও কৃশানুকে দেখে রাগে ফেটে পড়েন প্রদীপ। কৃশানু কোনও রকমে পালায়। প্রদীপ বিছানাতেই স্ত্রীর মুখে বালিশ চেপে ধরেন বলে অভিযোগ। ছটফট করতে করতে সংজ্ঞা হারান মীনাক্ষী। স্ত্রীকে খুন করে ফেলেছেন ভেবে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন প্রদীপ। সিলিংয়ের হুকে দড়ি বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে পড়েন তিনি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রতিবেশীরা প্রথমে প্রদীপের পারিবারিক অশান্তিতে মাথা গলাননি। কিন্তু বেশি রাতে আচমকা সব চুপচাপ হয়ে যাওয়ায় কৌতূহলবশত দেখতে যান তাঁদের কয়েক জন। প্রদীপকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে পড়শিরাই প্রতিবেশীরাই পুলিশে খবর দেন। প্রথমে রটে যায়, স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই মারা গিয়েছেন। মীনাক্ষীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার হলে চিকিৎসকেরা জানান, তিনি জীবিত। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। পুলিশি সূত্রের খবর, জেরার মুখে কৃশানু স্বীকার করেছে, প্রদীপের অনুপস্থিতিতে মাঝেমধ্যেই সে মীনাক্ষীর কাছে যেত। এটা নিয়ে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে তুমুল অশান্তিও হত। বৃহস্পতিবার হাতেনাতে ধরা পড়ে বেগতিক বুঝেই সে গা-ঢাকা দেয়। শুক্রবার ভোরে পুলিশ তাকে ওই এলাকারই একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। |