রেল ইয়ার্ডের দূষণ নিয়ন্ত্রণের দাবিতে ঘণ্টাখানেক জি টি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন আসানসোলের আপকার গার্ডেন এলাকার বাসিন্দারা। ফলে বৃহস্পতিবার দুপুরে থমকে যায় শহরের বিস্তীর্ণ এলাকার যান চলাচল। চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ আসানসোলের এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে গিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।
আপকার গার্ডেনের বসতি অঞ্চলের পাশেই রেল ইয়ার্ড। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই ইয়ার্ডে প্রতি দিন প্রচুর আকরিক লোহা ও সিমেন্ট আসে। সেখান থেকে লরিতে চাপিয়ে অন্য জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হয় লোহা। লরিতে তোলার সময়ে লৌহ আকরের গুঁড়ো হাওয়ায় ভেসে আশপাশের ঘরবাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। ঘরের মেঝেয় ধুলোর পুরু আস্তরণ পড়ে যায়। |
স্থানীয় বাসিন্দা মলয় রায়ের অভিযোগ, “মাঝে-মধ্যে এমন অবস্থা হয় যে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারি না।” অপর বাসিন্দা নূপুর পাঁজা বলেন, “ধুলোয় ভাত কালো হয়ে যায়। ঢেকে রাখা পাত্রের জলেও ধুলোর আস্তরণ পড়ে।” বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত বিশ বছর ধরেই তাঁরা ক্রমাগত এই সমস্যায় ভুগছেন। অনেকের শারীরিক সমস্যাও তৈরি হচ্ছে। মহকুমা প্রশাসনের কাছে অনেক বার দূষণ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েও লাভ হয়নি। দিন দিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।
এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ আপকার গার্ডেন এলাকার কয়েকশো বাসিন্দা স্থানীয় বিএনআর মোড়ের কাছে জিটি রোড অবরোধ করেন। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি না হওয়ায় পথচারীরা অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন। পড়ুয়া বোঝাই স্কুল গাড়িও আটকে পড়ে। কিছু গাড়ি এস বি গড়াই রোড দিয়ে ঘুরপথে যাওয়ার চেষ্টা করে। ফলে, সেই সংকীর্ণ রাস্তাও যানজটে রুদ্ধ হয়ে পড়ে। সেটিই আসানসোল হাসপাতাল যাওয়ার প্রধান রাস্তা। সেটিতে যানজট হওয়ায় আটকে পড়ে অ্যাম্বুল্যান্সও। |
আসানসোলের এসিপি (সেন্ট্রাল) সুনীল যাদব গিয়ে অবরোধকারীদের বিক্ষোভ তোলার আবেদন জানালেও তাঁরা তা শোনেননি। দীর্ঘক্ষণ পুলিশকে কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। পরে এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুরজিৎ দত্ত শর্মা গিয়ে রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এলাকার বাসিন্দাদের বৈঠক ডেকে বিষয়টি মেটানোর আশ্বাস দেন। এর পরেই অবরোধ ওঠে। আসানসোলের মহকুমাশাসক সন্দীপ দত্ত মেনে নেন, সমস্যাটি পুরনো। তবে তা সমাধানের জন্য সাধ্য মতো চেষ্টা করবেন বলেও তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। রেল কর্তৃপক্ষের তরফে অবশ্য কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
|