বিয়ে করতে রাজি না-হওয়ায় বাড়িতে ঢুকে তরুণীকে ছুরি দিয়ে মেরে খুন করল এক যুবক। বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ মালদহের হবিবপুর থানা আগ্রা হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামের ঘটনা। ছুরির আঘাতে তরুণীর মা হাসিদেবীও জখম হন। তাঁকে বুলবুলচণ্ডী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। জখম হয় অভিযুক্তও। খবর পেয়ে এলাকাবাসী যুবককে ধরে গণপিটুনি দেন। পুলিশ গিয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করে প্রথমে বুলবুলচণ্ডী হাসপাতালে এবং পরে মালদহ জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশ জানায়, নিহত ছাত্রীর নাম মঞ্জু বৈদ্য (১৯)। তিনি মালদহ মহিলা মহাবিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের কলা বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। জখমের পকেট থেকে একটি সচিত্র পরিচয়পত্র মিলেছে। তা দেখে পুলিশ জানায়, তাঁর নাম শক্তি বিশ্বাস। বাড়ি গাজল থানার করচা ডাঙায়। জেলার পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “প্রেমঘটিত ব্যাপারে ওই খুন বলে মনে হচ্ছে।” জখম যুবকের সম্পর্কে পুলিশ খোঁজ নিচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বছর তিনেক আগে গাজলে এক আত্মীয়ের বিয়েতে গিয়ে তরুণীর সঙ্গে যুবকের পরিচয় হয়। তার পরে ওই যুবককে তরুণীর সঙ্গে বেশ কয়েকবার দেখা গিয়েছে। তবে যুবকটি কখনও গ্রামে আসেনি। হাসপাতালে হাসিদেবী বলেন, “যে ছেলেটি মেয়ের উপরে হামলা করে তাঁকে চিনি না। আজ সকালেই প্রথম দেখি।”’ তিনি জানান, এদিন সকালে তাঁদের বাড়িতে ঢুকে যুবকটি তাঁর মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তখন মঞ্জুদেবীই তাকে বাড়ি থেকে বার করে দেন। বিকেলে মঞ্জু দেবী বাড়ির দাওয়ায় বসে চুল আঁচড়াচ্ছিলেন। সেই সময়ে যুবকটি আচমকা ছুরি নিয়ে পিছন থেকে হামলা করে। বুকে, পিঠে, মাথায় সমানে ছুরি দিয়ে আঘাত করতে থাকে। হাসিদেবী মেয়ের চিৎকার শুনে বাধা দিতে গিয়ে জখম হন। মা ও মেয়ের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে যান। ধরা পড়ে যায় ওই যুবক। বাসিন্দারা জখম তরুণীকে বুলবুলচণ্ডী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয়। বুলবুলচণ্ডী হাসপাতালের বিএমওএইচ অমলকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, “যখন মেয়েটিকে আনা হয় তাঁর আগেই মৃত্যু হয়। কিছু করার ছিল না।” নিহত তরুণীর দুই ভাই রয়েছে। একজন দশম শ্রেণিতে এবং অন্যজন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। হামলার সময়ে তারা কেউ বাড়িতে ছিল না। তরুণীর বাবাও চাষবাসের কাজে মাঠে ছিলেন। ফলে সময়ে বাড়িতে কেবল মা ও মেয়েই ছিলেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, তরুণী মালদহে হস্টেলে থেকে পড়াশোনা করতেন। দোলের সময়ে ছুটিতে তিনি বাড়িতে ফিরেছিলেন। আজই তাঁর মালদহে ফেরার কথা ছিল। শরীর খারাপ বলে হস্টেলে ফেরার পরিকল্পনা একদিন পিছিয়ে দেন। |