মাধ্যমিকের অভিজ্ঞতায় পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল ঠেকাতে সশস্ত্র নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ করা হল উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুরে। বুধবার থেকে গোটা রাজ্যের সঙ্গে উত্তরবঙ্গেও ৩৯৭টি কেন্দ্রে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া শুরু হয়েছে। তার মধ্যে ইসলামপুরের বিভিন্ন স্কুলে ১৫ জন সশস্ত্র নিরাপত্তা রক্ষীকে নিয়োগ করা হয়েছে। ইসলামপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক নীলকান্ত সুধীর কুমার বলেন, “মাধ্যমিকে ইসলামপুরে নকলকে কেন্দ্র করে বেশ খারাপ পরিস্থিতি তৈরী হয়েছিল। সে রকম পরিস্থিতি যাতে আর না তৈরী হয় সেজন্য রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের ১৫ জন অধিকারিক বিভিন্ন স্কুলে থাকছেন।” উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার উত্তরবঙ্গ জুড়ে মোট ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ৪৮০ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দিচ্ছেন। তার মধ্যে ছাত্রীদের সংখ্যা ৭৪ হাজার ৪০ জন। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের উত্তরবঙ্গের উপ সচিব মুক্তা নার্জিনারি জানান, গত বছরের চেয়ে এ বার ৩২ শতাংশ পরীক্ষার্থী বেড়েছে। সংসদ সূত্রের খবর, প্রথম দিন উত্তরবঙ্গে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা যাতে কেন্দ্রে পৌঁছতে পারেন সে জন্য উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের পক্ষ থেকে সর্বত্র অতিরিক্ত বাসের ব্যবস্থা করা হয়। শিলিগুড়িতে প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে অটোর ব্যবস্থা করা হয়। এনবিএসটিসির চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় এদিন পরীক্ষা স্পেশাল হিসাবে মোট ৭০টি বাস চালানো হয়।” তার পরেও ডুয়ার্সের তুরতুরি, যশোডাঙা, চেপানি, শামুকতলা, কুমারগ্রাম এলাকার পরীক্ষার্থীদের যানবাহনের সমস্যায় পড়তে হয় বলে অভিযোগ। যশোডাঙায় এদিন পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বরাদ্দ দুটি বাসই পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ। যশোডাঙ্গা হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক ফণীন্দ্রচন্দ্র দাস বলেন, “গাড়ির ব্যবস্থা করার কথা থাকলেও কেন সেটা হল না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” উত্তর দিনাজপুর জেলায় এ বার মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২২ হাজার ৪০ জন। তার মধ্যে ছাত্রী ১০ হাজার ৮৪৯ জন। জেলার ৯টি ব্লকের মোট ১০টি সেন্টার থেকে পরীক্ষা পরিচালনা করা হচ্ছে। পরীক্ষা পরিচালনার জেলা উপদেষ্টা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রথম দিনের পরীক্ষা নির্বিঘ্নেই শেষ হয়েছে। কোনও পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।” এদিন ইটাহার হাসপাতালে সদ্যোজাত পুত্রসন্তানকে কোলে নিয়ে পরীক্ষা দেন তসলিমা খাতুন। এদিন ইটাহার হাসপাতালে বেলা ১১টা নাগাদ তিনি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। অন্যদিকে, বুধবার উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি নিয়ে রায়গঞ্জের প্রমোদাসুন্দরী হাই স্কুলে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেয় রায়গঞ্জের ভুপালচন্দ্র উচ্চ বিদ্যাপীঠের ১২ জন ছাত্রী। সংসদ কর্তৃপক্ষের প্রশাসনিক ভুলের জেরে মঙ্গলবার পর্যন্ত তাঁদের অ্যাডমিট কার্ড স্কুলে এসে না পৌঁছানোয় তাঁরা পরীক্ষায় বসতে পারবেন কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। অবশেষে ওই দিন রাতেই স্কুল কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সদস্য বিপুল মিত্রের উদ্যোগে ওই ১২ জন ছাত্রীকে পরীক্ষায় বসার অনুমতিপত্র পাঠান সংসদ কর্তৃপক্ষ। কোচবিহার জেলায় এ বার মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩১ হাজার ২৭৫ জন। তাঁদের মধ্যে ১৬ হাজার ৩০০ জন ছাত্র। জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ৮৮টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ওই পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে একজন জেল বন্দিও রয়েছেন। তার নাম ইছাব আলি মিয়া। শীতলখুচি গোপীনাথ হাই স্কুলের ওই পরীক্ষার্থী গোঁসাইয়েরহাট হাই স্কুলে পরীক্ষা দেন। কোচবিহারের ডিআই মহাদেব শৈব বলেন, “আলিপুরদুয়ার জেল কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়ে ওই পরীক্ষার্থীর কথা জানালে তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়। |