বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভিতরে মূক ও বধির তরুণীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত হাউসস্টাফ রামকৃষ্ণ সরকারের জামিন হল। বুধবার বাঁকুড়ার মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী অরবিন্দ ঘোষ বলেন, “জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত আদালত তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আদালতে ‘টিআই প্যারেডের’ (শনাক্তকরণ) রিপোর্ট এবং তরুণী ও অভিযুক্ত চিকিৎসকের ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়। ‘টিআই প্যারেডের’ রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ওই তরুণী ও তাঁর মা অভিযুক্ত হাউসস্টাফকে শনাক্ত করতে পারেননি। একই দাবি করেছেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী ব্রজবাসী বিশ্বাস। তবে এ সর্ম্পকে মন্তব্য করতে চাননি অরবিন্দবাবু।
কয়েক দিন আগেই শালতোড়ার ওই মূক ও বধির তরুণীকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ দিনও অবশ্য তরুণীর মা দাবি করেন, “বাঁকুড়া জেলের ‘টিআই প্যারেডে’ আমি ওই হাউসস্টাফকে ঠিক চিনেছিলাম। আশপাশের লোকজনও জানিয়েছিলেন, আমি ঠিক চিনেছি। আমার মেয়ে অবশ্য চিনতে পারেনি। আসলে কী জন্য আমাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, ও তা বুঝতে পারেনি।” তিনি বলেন, “ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তের এত তাড়াতাড়ি জামিন হয়ে যাবে ভাবতে পারিনি। আমরা গরিব। তাই হাইকোর্টে আবেদন করার ক্ষমতা নেই।”
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে হাসপাতালের ‘ফিমেল মেডিসিন’ ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা ওই তরুণীকে আলাদা ঘরে পরীক্ষা করার নামে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে ওই হাউসস্টাফের বিরুদ্ধে। তাঁকে গ্রেফতার করার দাবিতে বিক্ষোভ দেখায় গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি। ২৯ ফেব্রুয়ারি পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। ৬ মার্চ বাঁকুড়া জেলা সংশোধনাগারে ওই তরুণী ও তাঁর মা’কে যুবককে শনাক্তকরণের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্র অভিযোগ করেন, “এই সরকার অপরাধীদের মদত দিচ্ছে। সরকারের চাপেই পুলিশ মামলাটি হাল্কা করে দিয়েছে। সেই ভাবেই রিপোর্ট তৈরি করে আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। না হলে ওই হাউসস্টাফ এত তাড়াতাড়ি জামিন পেতেন না।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শ্যাম মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, “বাম জমানায় অমিয়বাবুরা ক্ষমতা বলে নিজেদের অনেক অপকর্ম চাপা দিয়েছেন। আমরা কিন্তু তা করি না। আইন আইনের পথেই চলছে।” |